Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

টিকার আওতায় আসছে শিশুরাও

মাহমুদুল হাসান

সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১, ০৬:১০ পিএম


টিকার আওতায় আসছে শিশুরাও
  • শিশুদের টিকাদান নিয়ে আজ আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত
  • ১২ বছর-তদূর্ধ্বদের দেয়া হতে পারে করোনার টিকা
  • যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে দেয়া হচ্ছে ফাইজার-মডার্না
  • ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা
  • টিকাদান ছাড়াই খোলা হতে পারে শিশুদের স্কুল

দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে শিশুরা ভুলে গেছে স্কুলের আঙিনা। অনেকে হয়তো আর ফিরেও আসবে না। অন্যদিকে, উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীরা ধুঁকছে সেশনজট আর বেকারত্বের শঙ্কায়। গেলো বছর ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে খোলার আশ্বাস দিলেও সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। সংক্রমণ এখন ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসায় ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি সামনে এসেছে। চলতি ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল শিক্ষা উপমন্ত্রী জানিয়েছেন কোভিড-পরবর্তী ক্লাস কার্যক্রম কিভাবে পরিচালিত হবে। তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর চলতি মাসেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও শুরুতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস সপ্তাহে একদিনে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।’

এদিকে গতকাল ৯ দশমিক ৮২ শতাংশে নেমেছে সংক্রমণ। তবুও কোভিড-১৯-এর তৃতীয় ঢেউয়ের ঝুঁকি এখনো রয়েছে বলে আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা আছে। সেটি হলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে যাবে। তবে স্কুল-কলেজ খুললেও ক্ষতি এড়াতে শিশুদের টিকাদানের পরামর্শ এসেছে। সম্প্রতি উন্নত বিশ্বে ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব শিশুদের ফাইজার এবং মডার্নার টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে টিকা দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যেই তাদের শিশুদের ফাইজার ও মডার্নার টিকা প্রয়োগ করেছে। বাংলাদেশও উন্নত দুটি দেশের পথেই হাঁটবে। তবে যা কিছুই করা হবে সব কিছু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) গাইডলাইন মেনেই করা হবে। এক্ষেত্রে কিভাবে ও কোন বয়সি শিশুদের টিকা দেয়া হবে এ সংক্রান্ত বিষয়ে আজ রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। দেশে টিকার কোনো ঘাটতি নেই বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জানুয়ারি থেকে গত আট মাসে কেনা, উপহার ও টিকার বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, মডার্না ও ফাইজারের তিন কোটি ৯১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে শুধু আগস্টেই এসেছে এক কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার ২৫০ ডোজ টিকা। আর গত বুধবার পর্যন্ত দেয়া হয়েছে দুই কোটি ৬৯ লাখের কাছাকাছি। বর্তমানে দিনে গড়ে চার লাখ করে টিকা দেয়া হচ্ছে। চলতি মাসে যার সংখ্যা দ্বিগুণ করার কথা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ১২ হাজার ২৬ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১৪ লাখ ৪৬ হাজার তিনজন এবং মারা গেছে ২৬ হাজার ৪৯৩ জন। গতকাল শনাক্তের হার ছিলো ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘১৮ বছরের নিচে হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য দেশের নির্দেশনা দেখে ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেয়া হতে পারে। ১২ বছরের বেশি হলে অন্যান্য দেশে যেভাবে দেয়া হচ্ছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে শিশুদের ফাইজার এবং মডার্নার টিকা দেয়া হচ্ছে; আমরাও এটি অনুসরণ করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘কীভাবে শিশুদের টিকা দেয়া যাবে সে বিষয়ে  ৫ সেপ্টেম্বর (আজ রোববার) আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।’

আমারসংবাদ/জেআই