Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

আন্দোলন ছাড়া ‘নো’ নির্বাচন

সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১, ০৫:৩০ পিএম


আন্দোলন ছাড়া ‘নো’ নির্বাচন

উঠে এসেছে বিএনপির বেহাল দশার পর্যবেক্ষণ। বিশ্লেষণ হয়েছে অতীতের ভুল তারেক রহমানের মুখোমুখিতে বিএনপির তিন দিনব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠকে। অংশ নেয়া নেতারা বলছেন, আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে সরাতে হবে। শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাওয়া যাবে না।

নির্বাচনে জিততে হলে নির্বাচনের আগেই জিততে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপির জন্য আত্মঘাতী ছিলো। নির্বাচনে ড. কামাল ঠিক করবে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মকৌশল ঠিক করার লক্ষ্যে নেতাদের মতামত জানতে গত মঙ্গলবার থেকে এই ধারাবাহিক বৈঠক শুরু হয়।

তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ অন্যান্য স্থায়ী কমিটির নেতার উপস্থিতিতে বৈঠকগুলো হচ্ছে। আজ শনিবার স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে আরও বৈঠকের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

এর আগে প্রথম দিন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের এবং দ্বিতীয় দিন দলের যুগ্ম মহাসচিব-সাংগঠনিক সম্পাদক-সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের মতামত জেনেছেন তারেক রহমান। তৃতীয় দিন দলের অঙ্গসংগঠনের অর্থাৎ যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, তাঁতী দল, উলামা দল, মৎস্যজীবীসহ অঙ্গসংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠক হয়।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া বোকামি। ছয় বারের এমপি হয়ে আমি নির্বাচনের সময় ঘর থেকে বের হতে পারিনি। ঘোষণা দিতে হবে, হাসিনার অধীনে ‘নো’ নির্বাচন। সংসদ বহাল রেখেও নির্বাচন হবে না।

তিনি আরও বলেন, জোট ঠিক আছে। কিন্তু নির্বাচনি জোটের নেতৃত্বে বিএনপিকে থাকতে হবে। আমাদের কূটনীতি দুর্বল। কেন নির্বাচনে যাব না— তা বিদেশিদের বোঝাতে হবে।

আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেন, আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ। এক দফা এক দাবি— হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবো না। যে নির্বাচনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান অংশ নেবেন না, সে নির্বাচনে কেন যাব। আগে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। আন্দোলনে জয়ী হওয়ার পর নির্বাচনে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে আবার নির্বাচন হলে জামায়াত ’৮৬ ও ’৯৬ সালের মতো বিএনপি ছাড়াই নির্বাচনে চলে যাবে।

ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীও বলেন, হাসিনার অধীনে নির্বাচনের যাওয়া যাবে না। আমাদের বহির্বিশ্বে বন্ধু ও শত্রু চিহ্নিত করতে হবে। বর্তমান সরকারকে পুলিশ, বিদেশি ও আমলাদের সরকার বলে দাবি করেন ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

তিনি বলেন, জোটের দরকার নেই। আমরা রাজপথে দাঁড়াতে পারলে সবাই আমাদের সঙ্গে আসবে। যুগপৎ আন্দোলন করাটাই ভালো। হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার আগে রাজপথে আমাদের জিততে হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেন, ‘আমাদের তিনটি সভা শেষ। আজ শনিবার স্থায়ী কমিটির মিটিং আছে। এ মিটিংয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো আরো কয়েকটি সভা করবো কি না। কারণ, আমাদের এখনো কিছু কার্যনির্বাহী সদস্যদের সাথে মতবিনিময় বাকি রয়েছে; তাদের নিয়ে এবং জেলা পর্যায়ের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিদের নিয়ে মিটিং করার কথা আছে। আমরা হয়তো সে বিষয়গুলোয় সিদ্ধান্ত নেবো।

পরে আমাদের পেশাজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে। আমরা দেখি, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যদি সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তীতে এসব মিটিং আমরা করব। আমাদের এসব ধারাবাহিক বৈঠকে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, কী করণীয় এবং সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’