Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪,

আন্দোলনে ব্যর্থ দল বিএনপি

রফিকুল ইসলাম

সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১, ০৬:২৫ পিএম


আন্দোলনে ব্যর্থ দল বিএনপি

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের ঘোষণা হালকাভাবে নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। বিএনপি নেতাদের ধারাবাহিক বৈঠক ও রাজনৈতিক কর্মকৌশল নজরে রাখছেন ক্ষমতাসীন দলটির কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতারা।

তারা বলছেন, আন্দোলন-সংগ্রাম, মিছিল-মিটিং ও সভা-সমাবেশ যেকোনো রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। যার ওপর আওয়ামী লীগ কখনো হস্তক্ষেপ করেনি। কিন্তু যারা নির্বাচনে ব্যর্থ, আন্দোলনে ব্যর্থ, রাজনীতিতে ব্যর্থ, তারা যদিআন্দোলনের নামে আগুন-সন্ত্রাস ও মানুষ পোড়ানোর অপরাজনীতি করে— তাহলে রাজনৈতিকভাবেই তাদের মোকাবিলা করবে আওয়ামী লীগ।

সূত্রে প্রকাশ, দেশের সব রাজনৈতিক দলের মাঝে বইছে দ্বাদশ নির্বাচনের হাওয়া। নির্বাচন সামনে রেখে সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের তাগাদা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল। তারা নিজ দলের অভ্যন্তরে সৃষ্ট কোন্দল, দ্বন্দ্ব, বলয় ও বিভাজনের রাজনীতি নিরসন করছে। মূলত দ্বাদশ নির্বাচন সামনে রেখে সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছে দলগুলো।

এদিকে বিএনপি দ্বাদশ নির্বাচনের প্রথম প্রস্তুতি হিসেবে সরকারবিরোধী আন্দোলনকে বেশি গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে। এ জন্য দলটির কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতারা ধারাবাহিক বৈঠক করছেন।

দলটির নেতাদের দাবি— কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সরকারবিরোধী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। দ্বাদশ নির্বাচনের আগে মাঠের আন্দোলন-সংগ্রাম, মিছিল-মিটিং ও সভা-সমাবেশে সুফল পেলেই ভোটের মাঠে অংশগ্রহণ করবে বিএনপি। দ্বাদশ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ঘোষণা রাজনৈতিক নয়া কৌশল হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ।

দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের নামে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রাম, মিছিল-মিটিং ও সভা-সমাবেশ মানেই গণপরিবহনে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ, আগুন-সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ এবং জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষ হত্যা করা। বিএনপির আন্দোলন মানেই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা। এমন রাজনীতির কারণেই আজ জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি। ভোটের মাঠে ব্যর্থ, রাজনীতির মাঠে ব্যর্থ, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ।

ভোট ও রাজনীতির মাঠে ব্যর্থ বিএনপি দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে সরকারবিরোধী নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের আরও দাবি, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশের যে কোনো রাজনৈতিক দল আন্দোলন-সংগ্রাম, মিছিল-মিটিং ও সভা-সমাবেশ করতে পারে। এটা তাদের রাজনৈতিক অধিকার। গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দল যদি আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করে ও সরকারের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে মরিয়া হয়ে ওঠে, তাহলে তাদের ছাড় দেয়া হবে না। দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে রাজনৈতিকভাবেই তাদের মোকাবিলা করা হবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম আমার সংবাদকে বলেন, দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেই আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছে এবং একের পর এক দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। নির্বাচন প্রতিক্রয়ার বাইরে কারো ক্ষমতায় আশার সুযোগ নেই। তাই অপশক্তিগুলোর সরকারবিরোধী আন্দোলনের কথা বলে কোনো লাভ নেই।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। শেখ হাসিনার এতো উন্নয়ন দেখে কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের গা-জ্বালা শুরু হয়েছে। তাই তারা সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করতে শুরু করেছে। তারা আন্দোলনেও ব্যর্থ, ভোটেও ব্যর্থ। দেশের জনগণও আর তাদের চায় না।

আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, যারা নির্বাচনে ব্যর্থ, আন্দোলনে ব্যর্থ, রাজনীতিতে ব্যর্থ; বারবার ব্যর্থ হয়ে যে দল জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে— তাদের মুখে সরকারবিরোধী আন্দোলন বেমানান।

তিনি আরও বলেন,  দেশের মানুষ আর আগুন-সন্ত্রাসের রাজনীতি পছন্দ করে না।

বিএনপি নেতারা ‘অসত্য’ বক্তব্য উপস্থাপনকে রেওয়াজে পরিণত করেছেন বলে মন্তব্য করে সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ কল্পিত। নিত্যদিন সরকারের বিরুদ্ধে নতুন নতুন অভিযোগ উত্থাপন বিএনপির রোজনামচায় পরিণত হয়েছে। তারা অসত্য বক্তব্য উপস্থাপনকে রেওয়াজে পরিণত করেছে।