Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

দেশসেরা বিদ্যাপিঠের শিক্ষার্থীদের নারীভাবনা

সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১, ০৬:৫৫ এএম


দেশসেরা বিদ্যাপিঠের শিক্ষার্থীদের নারীভাবনা

সৃষ্টিকর্তার  অজস্র সুন্দর সৃষ্টির মাঝে নারী হচ্ছে এক অনুন্য অসাধারন অপরূপ সৃষ্টি।নারী মানে মা,নারী মানে অর্ধাজ্ঞী আমাদের পথ চলার সাথী আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস।সামাজিক নানা বিধি নিষেধ,পুরুষদের প্রভাব,দৃষ্টিভংগী,কুসংস্কার নারীদের উন্নতির প্রধান অন্তরায়। সময়ের পরিক্রমায় ঘোরামীর সকল শিকল ভেঙে এগিয়ে যাচ্ছে নারীরা। তারা হয়ে উঠেছে আমাদের অপরিহার্য অংশ। নারীদের ক্ষমতায়ন, বিশ্বায়ন এবং নারীদের অধিকার নিয়ে কথা বলেছেন দেশ সেরা বিদ্যাপিঠের শিক্ষার্থীবৃন্দরা। তাদের মতামত গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন দৈনিক আমার সংবাদের পবিপ্রবি প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন।

নারীর ক্ষমতায়নকে নারীর আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি, নিজের পছন্দ, মতামত প্রকাশ করার ক্ষমতা, অর্থনৈতিক-মানসিক মুক্তি বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়। নারীর ক্ষমতায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার যা একটি সমাজকে সুন্দর আর সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে প্রয়োজন। গত দশক থেকে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে অনেক উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এদেশের নারীরা বিশেষ ভূমিকা রাখছে বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পে। এই দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী, এছাড়াও দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে নারীরা অবস্থান করছেন নিজের মেধা আর যোগ্যতার মাধ্যমে। কিন্তু মানসিক মুক্তি নারীরা আমার ধারনা মতে পিছিয়ে আছি। নানা কুসংস্কার থেকে তারা এখনো বের হতে পারে নি, নিজে চিন্তা করা সিদ্ধান্ত নিতেও তারা পিছ পা হন, নিজের অধিকারগুলো ভোগ করতে ভয় পান। অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী শিক্ষিত হলেই নারীরা স্বকীয়তা/স্বাধীনতা অর্জন করা যায় না। মন থেকে যদি সব ধরনের পরাধীনতার শিকল থেকে না বের হওয়া যায় তাহলে নারীর ক্ষমতায়ন বলে কিছু থাকে না। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক এই চার কাঠামোগত পরিবর্তন এলে নারীর ক্ষমতায়ন পরিপূর্ণ হবে। -হাবিবা আক্তার (শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)

বর্তমান বিশ্বে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সহ সকল ক্ষেত্রে বিশ্বায়নে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা অনস্বীকার্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বিশ্বায়নে নাড়ীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এখন তারা পরিবারের ব্যায় উন্নতিতেও অবদান রাখছে। বেতনবভিত্তিক কাজ নারীদের সামাজিক পছন্দ এবং জীবনযাপন এর মান বৃদ্ধি করছে এবং একইসাথে তাদের মনোবলও বৃদ্ধি করছে।বিশ্বরাজনীতিতে অবস্থান পর্যালোচনায় নাড়ীদের অংশগ্রহণ এবং তাদের ভূমিকা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রাম এলাকাগুলোতে দারিদ্রতা বিমোচনে তারা সুনির্দিষ্ট পরামর্শ প্রদান এবং বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আধুনিক শিল্পকলা এবং হাতে - কলমে শেখানোর মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচনেও ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। -দীপ্ত বিশ্বাস (শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)
                                  
নারী শক্তি ছাড়া এ পৃথিবী সত্যিই অকল্পনীয়। নারী আমাদের প্রত্যেকের অনুপ্রেরণার উৎস।নারী অধিকার এবং নারীর স্বাধীনতা যা সকল বয়সের মেয়ে ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।বেগম রোকেয়া সাখওয়াত হোসেন, সিমন দা বেভোয়ার বলেন,"নারী হয়ে কেউ জন্মায় না বরং নারী হয়ে ওঠে।"নারী অধিকার মানবাধিকার থেকে ভিন্ন কিছু নয়।এসব অধিকার যা নারীকে একান্ত ভাবে তার নিজস্ব মর্জাদা নিয়ে বাঁচতে শেখায়।এ অধিকারের মধ্যে কিছু অধিকার সার্বজনীন,কিছু বিশেষায়িত ও সামাজিক।নারীর এ অধিকারগুলো নারীকে উদ্ভাসিত করে আপন সত্ত্বায়।নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন ইতিবাচক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী।মানবাধিকার পূর্ণ প্রতিষ্ঠা হবে তখনই যখন নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে।-স্মিতা দাস (শিক্ষার্থী,পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)

নারীর আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ।সর্বক্ষত্রে তাদের অংশগ্রহণ তাদের নিয়ে গিয়েছে অনন্য উচ্চতায়।কিন্ত ২১ শতকে এসেও আমরা দেখতে পাই নারীদের প্রতি বৈসম্য মূলক আচরন।নিরাপদ কাজের পরিবেশের অভাব,সবকিছুতে পুরুষদের প্রভাব।যৌগ্যতা থাকা সত্ত্বে ও কর্মক্ষত্রে তাদের শিকার হতে হচ্ছে নানা প্রকারের হয়রানির ও নিপীরনের।পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তারা আজ ও তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত।এই শতাব্দীতে এসেও তারা নিরাপদে চলাফেরা  করতে না পারা এবং অনেকক্ষত্রে পারাবারিক নানা কারনে বাল্যবিবাহ উচ্চশিক্ষায় তাদের অংশগ্রহণ অনেকাংশে কমিয়ে দিয়েছে। লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যে,অসমতা,পুরুষদের দৃষ্টিভঙী, সহিংসতা যতদিন দূর না হবে ততদিন নারীর পিছয়ে থাকবে।সম্মান প্রদর্শন,উৎসাহ,অনুপ্রেরণার মাধ্যমে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা দূরীভূত হলেই একজন নারী পুরুষদের সাথে সমান গতিতে এগিয়ে যেতে পারবে। -মামুনুর রশীদ সোহাগ (শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)