Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

আশ্বাসে-ধীরগতিতে চলছে টিকাদান

মাহমুদুল হাসান

অক্টোবর ১০, ২০২১, ০৫:২৫ পিএম


আশ্বাসে-ধীরগতিতে চলছে টিকাদান

সাত মাসে মাত্র সাড়ে পাঁচ কোটির কম টিকা প্রয়োগ করেছে সরকার। গত ফেব্রুয়ারি ৫৪তম দেশ হিসেবে কোভিড-১৯ প্রতিষেধক টিকাদান শুরু হয়। কিন্তু অন্যান্য দেশের মতো এ কার্যক্রমে গতি আসেনি। এই লম্বা সময়ে উপহার, কোভ্যাক্সের সহযোগিতা ও ক্রয়চুক্তির আওতায় সাত কোটি ২২ লাখ ডোজ টিকা এসেছে দেশে।

অন্যদিকে, প্রায় সোয়া পাঁচ কোটি মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এখনো টিকার অপেক্ষায় প্রায় এক কোটি ৩৭ লাখ মানুষ।

অন্যদিকে দেশে টিকার মজুত আছে মাত্র এক কোটি ৮১ লাখ ডোজ। প্রথম ডোজ নেয়া তিন কোটি ৬১ লাখের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন মাত্র এক কোটি ৭৯ লাখের কিছু বেশি। সেই হিসাবে এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা গ্রহীতাদের দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ করা হলে মজুত ফুরিয়ে যাওয়ার কথা।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) গাইডলাইন অনুসরণ করে দেশের শিশু-কিশোরদেরও টিকাদানের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে সরকার। সুশৃঙ্খলভাবে টিকাদান নিশ্চিত করতে পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা টিকার জোগান নিশ্চিত করেছি। আগামী জানুয়ারির মধ্যে আট কোটি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিশ্চিত করা হবে।’ গত সাত মাসের পরিসংখ্যান ও মন্ত্রীর আশ্বাসের সাথে মিল খুঁজে পাচ্ছেন না জনস্বাস্থ্যবিদরা। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে অনড়।

তিনি বলেন,  ‘অক্টোবরে তিন কোটি, নভেম্বরে পৌনে চার কোটি, ডিসেম্বরে পাঁচ কোটি ও জানুয়ারিতে পৌনে চার কোটি ডোজ টিকা আসবে। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ১২ কোটি মানুষের দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করা হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত শনিবার বিকেল পর্যন্ত পাঁচ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার ১২৬ জন করোনা টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে পাঁচ কোটি ২০ লাখ ৫৯ হাজার ছয়জন এবং পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে ছয় লাখ ৯১ হাজার ১২০ জন নিবন্ধন করেছেন। নিবন্ধন শেষে টিকার অপেক্ষায় আছেন আরও এক কোটি ৫৭ লাখ ৬২ হাজার ৭২১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের তথ্য মতে, শনিবার পর্যন্ত দেশে পাঁচ কোটি ৪১ লাখ ১৯ হাজার ২৪৬ ডোজ করোনার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন তিন কোটি ৬১ লাখ ৭৮ হাজার ৯৪৬ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন এক কোটি ৭৯ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ জন।

এর মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড প্রয়োগ করা হয়েছে এক কোটি ৩২ লাখ ১১ হাজার ৮৩৮ ডোজ। ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে দুই লাখ ৭৪ হাজার ৩০৭ ডোজ। চীনের সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তিন কোটি ৫৪ লাখ ৮২ হাজার ৪৩২ ডোজ। আর মডার্নার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে ৫১ লাখ ৫০ হাজার ৬৬৯ ডোজ।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘সরকারের হাতে এ পর্যন্ত সাত কোটি ২২ লাখ ডোজ টিকা এসেছে। এর মধ্যে পাঁচ কোটি ৪১ লাখ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এক কোটি ৮১ লাখ ডোজ টিকা হাতে আছে। এ পর্যন্ত টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন পাঁচ কোটি ২০ লাখ মানুষ। আগামী জানুয়ারি নাগাদ বাংলাদেশের হাতে পাওয়া টিকার পরিমাণ ১৬ কোটি ডোজে পৌঁছাবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের হাতে এখন ৬০ লাখ ডোজ ফাইজারের টিকা রয়েছে। এ ছাড়া আরও ৭০ লাখ ডোজ টিকার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। সরকারের হাতে থাকা টিকার অর্ধেক ১২ থেকে ১৭ বছরের শিশুদের দেয়া হবে। টিকার জন্য শিশুদের নিবন্ধন হবে জন্ম নিবন্ধন সনদের মাধ্যমে।’