Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

ইউপিতে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব দেখানোর সুযোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ১৪, ২০২১, ০৭:০৫ পিএম


ইউপিতে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব দেখানোর সুযোগ নেই

জনপ্রতিনিধিদের জনপ্রিয়তাকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, একজন জনপ্রতিনিধির সততা, যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকা জরুরি। চলতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এমন প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীকের মনোনয়ন দিচ্ছে। এজন্য মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা কঠোর পরিশ্রম ও চুলচেড়া বিশ্লেষণ করছেন।

কিন্তু কোথাও কোথাও ঘোষিত প্রার্থীদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মনোনয়ন বঞ্চিতরা কেউ কেউ মৌখিক অভিযোগ করছেন। কিছু কিছু ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিতর্কিতদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবস্থান পরিষ্কার- নৌকার মনোনয়ন পাওয়া কারো বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেলেই তাকে পরিবর্তন করা হবে।

সম্প্রতি তার নিজ কার্যালয়ে দৈনিক আমার সংবাদের সাথে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, একজন মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন, তিনি যোগ্য লোক। দলের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। কারাভোগ করেছেন। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছেন। কিন্তু তার যদি জনপ্রিয়তা না থাকে। সেখানে অন্য কাউকে বেছে নেয়া কি অন্যায়?   

তিনি আরও বলেন, তৃণমূল থেকে মনোনয়নের তালিকা আসে। অনেক সময় দলের যোগ্য, নিবেদিত ও দুঃসময়ের নেতাদের নাম তৃণমূল থেকে বাদ দেয়া হয়। তৃণমূলের তালিকা থেকে বাদ দেয়া নেতাদের মনোনয়ন সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে। এটি কিন্তু আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত। ফলে এমপি-মন্ত্রী এবং জেলা উপজেলার প্রভাবশালী নেতারা ইচ্ছে করলেও কারো নাম বাদ দিতে পারছে না।

এরপর যদি কোথাও অভিযোগ থাকে এবং ওই অভিযোগের সত্যতা থাকে, সঠিক প্রমাণ থাকে, তা সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে প্রার্থিতা পরিবর্তন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি পরিবার। এই পরিবারে অনেক সদস্যের কষ্ট থাকে, বেদনা থাকে, না পাওয়ার আক্ষেপ থাকে, কিন্তু সব ভুলে এই পরিবারের সাথে মিসে যাই সবাই।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সংখ্যা অনেক। এদের মধ্যে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতার সংখ্যাও কম নয়। জনপ্রিয় নেতার কমতি নেই, ত্যাগী নেতার কমতি নেই। অধিকাংশ নেতাই মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু আমরা তো সকলকে মনোনয়ন দিতে পারবো না। যাদের জনপ্রিয়তা আছে, তাদের মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে।

মনোনয়নপ্রাপ্ত নেতাদের নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলবে। অভিযোগও আছে। শতভাগ দোষত্রুটিমুক্ত লোক কি এ সমাজে আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বিশুদ্ধভাবে যাচাই-বাছাই আপেক্ষিক। সে বিষয়গুলো কিন্তু আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আপনাদের (সাংবাদিক) বিশ্লেষণ এক রকম এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণ আরেক রকম।

বিএনপি ঘোমটা পড়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই-বাছাই করার জন্য বিএনপি ঘোমটা পড়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। এমনিই বিএনপি নিজেদের রাজনীতি নিয়ে অস্তিত্ব সংকটে আছে।  এরপর আবার নির্বাচন নিয়ে এমন কৌশল ভালো নয়।

এই সংকটেই বিএনপি একদিন বিলীন হয়েছে যাবে। সেই পথ তারা বেছে নিয়েছে। বিএনপির বৈঠক সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, বিরোধী দলগুলো রাজনীতি করুক। আন্দোলন-সংগ্রাম করুক। সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করুক।

এটি আমাদের জন্যও ভালো, গণতন্ত্রের জন্য ভালো। আওয়ামী লীগ এগুলো সব সময় সমর্থন করে। কিন্তু কেউ যদি আন্দোলন-সংগ্রামের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, অগ্নিসংযোগ করে, জঙ্গি ও সন্ত্রাসের  রাজত্ব কায়েম করতে চায়, তাদের ছাড় দেয়া হবে না। রাজনীতির মাঠেই তাদের প্রতিহত করা হবে। তিনি আরও বলেন, তারা (বিএনপি) সিরিজ বৈঠক করছে। তাদের (বিএনপি) না-কি এবারের বৈঠকের সফলতাও অনেক।

তাদের (বিএনপি) এমন বৈঠক এর আগেও আমরা দেখছি। তাদের প্রধান টার্গেট— দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা, গণতান্ত্রিক পথে না এসে ভিন্ন পথে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার অপচেষ্টা করা, এজন্য সন্ত্রাস-জঙ্গি ও দেশি এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে লাশের রাজনীতি চালু করার জন্য আবার ভাবছে। কিন্তু তারা কিন্তু কখনো সফল হয়নি। এবারো হবে না ।