Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

সম্প্রীতির প্রত্যয়ে উত্তাল দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ১৯, ২০২১, ০৯:২০ পিএম


সম্প্রীতির প্রত্যয়ে উত্তাল দেশ

সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প রুখে দিয়ে সম্প্রীতির যাত্রা অব্যাহত রাখার প্রত্যয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজামণ্ডপ ও বসতবাড়িতে হামলার প্রতিবাদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ডাকে গতকাল সারা দেশে  শান্তি ও সম্প্রীতি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সম্প্রীতি সমাবেশ করেছে। 

সম্প্রীতি সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও দোসররা এখনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটিয়ে স্বাধীনতার অর্জনকে ম্লান করতে মাঝে মধ্যেই মরিয়া হয়ে উঠে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে যা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প রুখে আগামী প্রজন্মের জন্য সম্প্রীতির অনন্তযাত্রা এখনই নিশ্চিত করতে হবে।

১৯৭২ সালের ৭ জুন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘বাংলাদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমান মুসলমানদের ধর্ম পালন করবে। হিন্দু তার ধর্ম পালন করবে। খ্রিস্টান তার ধর্ম পালন করবে। বৌদ্ধও তার নিজের ধর্ম পালন করবে। এ মাটিতে ধর্মহীনতা নাই, ধর্মনিরপেক্ষতা আছে। এর একটা মানে আছে। এখানে মানুষকে লুট করে খাওয়া চলবে না। 

ধর্মের নামে রাজনীতি করে রাজাকার, আল-বদর পয়দা করা বাংলার বুকে আর চলবে না।’ বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার পথ রুদ্ধ হয়েছে, যারা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করতে চায় তারা দলমত নির্বিশেষ সকলের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবেন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান। 

গতকাল সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাজধানীতে সমপ্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে সকালে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সামপ্রদায়িকতার বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে মিলিত হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক  
লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, মৎস্যজীবী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে সমবেত হয়। বেলা ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তান, নুর হোসেন স্কয়ার (জিরো পয়েন্ট) লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এ সময় সামপ্রদায়িকতার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। 

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর শান্তি শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় তিনি আওয়ামী লীগ ও এর সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং দেশের সচেতন মানুষকে সামপ্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়িয়ে তা প্রতিহত করার আহ্বান জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, সামপ্রদায়িক অপশক্তি দেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর সামপ্রদায়িক হামলা চালিয়েছে। এ সামপ্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদেরকে এ অপশক্তির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে, এদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।

 বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে রাখা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত রক্তক্ষয় হলো এত কিছু ঘটে গেলো বাংলাদেশে। আর যেন এসব না হয়। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এখানে সব ধর্মের মানুষ তার মতো করে বসবাস করবে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। তিনি আরও বলেন, সব ধর্মেই শান্তির কথা বলা আছে। আমাদের ইসলাম ধর্মও তাই বলে। নবীজি বলে গেছেন, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, আমরা দাবি করি- বাঙালি বীরের জাতি। কিন্তু এই বাঙালি জাতির মধ্যেই লুকিয়ে আছেন বিশ্বাস ঘাতক, নারী ঘাতক, শিশুঘাতক। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমরা দেখি সেই সাম্প্রদায়িক শক্তি বারবার বাংলাদেশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত করছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর আঘাত করছে, সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত করছে। বিএনপি-জামায়াত ও সাম্প্রদায়িক শক্তি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করছে। তারা সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। এই অশুভ শক্তির বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে।

বাংলাদেশে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যে উসকানি দেয়া হচ্ছে, তাতে ভারতের মুসলমানদের একটা বড় অংশের জীবনকেও বিপন্ন করে ফেলছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আজ কুমিল্লা; যেখান থেকে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে এই তাণ্ডবের সূচনা। এই তাণ্ডব নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ, হাতিয়ার বুড়িরচরসহ চট্টগ্রাম হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। 

সর্বশেষ এই বিষবাষ্পে রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। কয়েকটি জেলে পরিবারের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, ঠিক ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতা গ্রহণের পর হিন্দুদের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছিল তারই পুনরাবৃত্তি। 

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক  বলেন, আজ একটি সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে সুবিধা ভোগ করছে। এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে। এদিকে, আওয়ামী লীগের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি সামপ্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সমপ্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নেতৃত্বে গুলিস্তান কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এতে কেন্দ্রীয়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুনসহ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া সারা দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যুবলীগের পক্ষ থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়।   

প্রায় একই সময়ে সম্প্রীতি র্যালি করে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। এতে নেতৃত্ব দেন সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু। ছাত্রলীগের শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধ ও দোষীদের গ্রেপ্তার দাবিতে প্রতিবাদী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি ছাত্র সংগঠন। অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের প্রতিবাদী পথনাটকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর চালানো সহিংসতার চিত্র ফুটিয়ে তোলেন শিক্ষার্থীরা। সাম্যের গান গেয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আহ্বান জানান তারা। 

তারা বলেন, একটা বিশেষ গোষ্ঠী সোনার বাংলায় অরাজকতা করছে। আমরা চাচ্ছি আমাদের যার যার স্থান থেকে আমাদের ৭১-এর চেতনাকে ফিরিয়ে আনতে। আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি সাম্প্রদায়িকতার। রুখে দাও সাম্প্রদায়িকতা, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার এই মিছিলে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও। সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকারীদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবি জানান তারা। একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের ১৫টি জেলায় যা ঘটেছে তা আমাদের দেশের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করে দিয়েছে। কোনো অবস্থাতেই এসব সন্ত্রাসীদের উঠে দাঁড়াতে দেয়া যাবে না। 

এদিন সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করেন প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও ছাত্র ইউনিয়ন। উগ্র সাম্প্রদায়িক কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের আবহমান কালের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ঘৃণ্য চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা, ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। শারদীয় দুর্গোৎসবে পূজামণ্ডপ, মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘরে যারা হামলা চালিয়েছে, তারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায় বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের নেতারা। সারা দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে যারা হামলা করছে সেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে গতকালও জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন। আজ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রেক্ষিতে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ  নাগরিক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করবে। 

সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঘোষিত ‘সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা’ কর্মসূচি পালন হয়েছে সারা দেশে। দুপুরে বগুড়া শহরের সাতমাথা মুজিব মঞ্চে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ‘সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা’ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য বগুড়াবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম আসাদুর রহমান দুলু ও সাগর কুমার রায়, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট তবিবুর রহমান রহমান তবি, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন নবাব ও শাহাদৎ আলম ঝুনু, প্রচার সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি, সম্পাদিকা নাসরিন রহমান সীমা, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মাশরাফি হিরো, শ্রম সম্পাদক রুহুল মমিন তারিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক এস এম শাহজাহান, উপ-দপ্তর সম্পাদক খালেকুজ্জামান রাজা, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হেফাজত আরা মিরা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল ইসলাম রাজ প্রমুখ।

ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সম্প্রীতি সমাবেশ শেষে শান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুরে জেলা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রেস ক্লাবের সামনে সম্প্রীতি সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক আকন্দ, নুরুল আমিন সুরুজ, হাবিবুর রহমান হাবলি, তরুণ কর্মকার, আবু সাইদ খান, জেলা যুবলীগ আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির। কর্মসূচিতে মৌলবাদী, জঙ্গি, ধর্মব্যবসায়ী ও অপব্যাখ্যাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান জেলা আওয়ামী  লীগের নেতৃবৃন্দ। শোভাযাত্রায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগ বিকেল সাড়ে ৩টায় সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রার আয়োজন করে। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে আয়োজিত সম্প্রীতি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান রকেট। বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, সহ-সভাপতি অ্যাড. মোমিন আহমেদ চৌধুরী জিপি, অ্যাড. নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল পিপি, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মান আলী, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাম্মীম আজিজ সাজ, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খ ম আব্দুর রহমান রনি প্রমুখ। 

সম্প্রীতি সমাবেশ শেষে বের হওয়া শান্তি শোভাযাত্রাটি জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শেষ হয়। ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন এ কর্মসূচি পালন করে। বেলা ১১টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয় থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। পরে উপজেলা ফটক হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রাকালে নেতাকর্মীরা সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে সম্প্রীতি সমাবেশ করেন। 

উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান ভূইয়া কিসমত, যুগ্ম আহ্বায়ক দেওয়ান আওলাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট সাফিল উদ্দিন মিয়া, ইঞ্জিনিয়ার আরিফুর রহমান সিকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলীমুর রহমান খান পিয়ারা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া প্রমুখ। পাবনা জেলায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বেলা ১২টায় জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এক শান্তি শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। নোয়াখালী জেলার মাইজদী শহরে  আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সামনে থেকে শান্তি শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। 

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে তারা এই মানববন্ধন করেন। এ সময় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। এখানে সবাই নিজ নিজ ধর্ম নিজেদের মতো করে পালন করে, কিন্তু উৎসব সবাই ভাগ করে নেয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এসব ঘটনা নিরবচ্ছিন্নভাবে ঘটে আসছে। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাই।’