Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

দুই ডোজ পেয়েছে ২০ ভাগ নাগরিক

মাহমুদুল হাসান

নভেম্বর ২১, ২০২১, ০৬:১৫ পিএম


দুই ডোজ পেয়েছে ২০ ভাগ নাগরিক

কোভিড-১৯ সংক্রমণ এখন নিয়ন্ত্রণে। উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এদিকে ইউরোপে কোভিড সংক্রমণ ফের সক্রিয় হয়েছে। ফলে বৈশ্বিক ভাইরাসের নয়া ঢেউয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে দেশ।

সংক্রমণ শুরু হলে অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কায় লকডাউন জারি সম্ভব নয়। ফলে স্বাস্থ্যবিধি আর প্রতিষেধক টিকাদানে জোর দিচ্ছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। সরকারও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন মেনে টিকাদান ও স্বাস্থ্যবিধিতেই জোর দিচ্ছে। কিন্তু গত ৯ মাসেও গতি ফিরেনি টিকাদান কর্মসূচিতে। 

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ৫৪তম দেশ হিসেবে টিকাদান শুরু হলেও দীর্ঘ ৯ মাসেরও বেশি সময়ে মাত্র সাড়ে ২০ শতাংশের কম নাগরিক দুই ডোজ টিকা পেয়েছে। অথচ সরকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে আগামী বছর এপ্রিলের মধ্যে অন্তত ৮০ শতাংশ নাগরিককে টিকার আওতায় নিয়ে আসার। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা হবে। সে লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইতোমধ্যে ২১ কোটি ডোজ টিকা ক্রয় করা হয়েছে। 

সম্প্রতি একদিনে প্রায় ৮০ লাখ ডোজ টিকাদানের রেকর্ড রয়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক সময়েই অর্জিত হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে আমরা ২১ কোটি ডোজ টিকা কিনছি। চলতি মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা দেয়ার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ১১ কোটি টিকা হাতে পেয়েছি। প্রায় ৯ কোটি টিকা মানুষকে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে দৈনিক ১৫ লাখ ডোজ টিকা দেয়া হচ্ছে। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২০’ এর সর্বশেষ তথ্যমতে, পয়লা জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত দেশের মোট জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৯১  লাখ। তার মধ্যে মাত্র তিন কোটি ৪৫ লাখ ৫১ হাজার ৪০৮ জন নাগরিক দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত শনিবার বিকেল পর্যন্ত ছয় কোটি ৮২ লাখ ৭৭ হাজার ৪৫৫ জন করোনা টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। 

এর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে ছয় কোটি ৭২ লাখ ৮১ হাজার ৮৮৩ জন এবং পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৫৭২ জন নিবন্ধন করেছেন। নিবন্ধন শেষে টিকার অপেক্ষায় আছে আরও এক কোটি ৩৯ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৭ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইস বিভাগের তথ্যমতে, গতকাল পর্যন্ত দেশে আট কোটি ৮৮ লাখ ৫৭ হাজার ৪১৬ ডোজ করোনার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। তারমধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে পাঁচ কোটি ৪৩ লাখ ছয় হাজার আটজন। আর দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছে তিন কোটি ৪৫ লাখ ৫১ হাজার ৪০৮ জন। 

এরমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড প্রয়োগ করা হয়েছে এক কোটি ৫৫ লাখ ৯৫ হাজার ৭৩২ ডোজ। ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে ২০ লাখ ৯ হাজার ২৯৮ ডোজ। চীনের সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে ছয় কোটি ৫৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৩৯ ডোজ। আর মডার্নার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে ৫৩ লাখ ৩৩ হাজার ৭৪৭ ডোজ। দুই ডোজ টিকা নিয়েছে মাত্র তিন কোটি ৪৫ লাখ ৫১ হাজার ৪০৮ জন। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে করোনার টিকাদান শুরু হয়। নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি এখন পর্যন্ত গণটিকাদানের দুটি বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সারা দেশে করোনার গণটিকাদানের বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। এ কর্মসূচিতে এক দিনে ৭৫ লাখ ডোজ টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। ওইদিন সারা দেশে ৬৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯২২ ডোজ টিকা দেয়া হয়। 

এর আগে গত ৭ থেকে ১২ আগস্ট একটি বিশেষ সমপ্রসারিত কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিল। তার প্রথম দিনেই ৩০ লাখের বেশি টিকা দেয়া হয়েছিল। ওই কর্মসূচির প্রথম দিনে গ্রাম, শহর প্রায় সবখানেই মানুষের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো।