Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪,

আইভীকেই এগিয়ে রাখছেন ভোটাররা

আসাদুজ্জামান আজম 

জানুয়ারি ১৫, ২০২২, ১০:২০ পিএম


আইভীকেই এগিয়ে রাখছেন ভোটাররা

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে ভোটাররা বেছে নিবেন বলে মনে করছেন কর্মী-সমর্থকরা। গত ১০ বছরের ক্ষমতাসীন দলের হয়ে তার মাধ্যমে হওয়া উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আইভীকে রায় দিবেন ভোটাররা। 

নানা ধরনের গুঞ্জন থাকলেও দিনশেষে তিনিই বিজয়ী হবেন, এক্ষেত্রে তার ব্যক্তি ইমেজ ও সিটি এলাকাজুড়ে গড়ে তোলা যোগাযোগ ব্যবস্থা, চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে ভোটাররা প্রধান্য দিচ্ছেন বলে জানান নির্বাচনে দায়িত্বপালন করা একাধিক রাজনৈতিক নেতা। 

বন্দর এলাকার ২৪নং ওয়ার্ডের দেউরী এলাকার ভোটার মাকসুদা আমার সংবাদকে বলেন, আমার এলাকায় রাস্তা ছিল না, পানি জমে থাকতো, আইভী আপা মেয়র হওয়ায় প্রতিটি বাড়িতে রাস্তা হয়েছে, এবারো আমরা তাকেই মেয়র বানাবো।  

চাষাড়া শহীদ মিনার এলাকায় হাবিবুর রহমান নামে এক ভোটার জানান, নির্বাচনে আইভী আবার মেয়র হবেন। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। গত দুই মেয়াদে নিজের করা উন্নয়ন এবং আগামীর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নগরবাসী তাকেই রায় দেবেন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। সেক্ষেত্রে তিনি কমপক্ষে এক লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবেন বলে আশাবাদী। নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও স্বাভাবিক হবে বলে মনে করেন এ প্রার্থী।  

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, বিগত পাঁচ বছরে নারায়ণগঞ্জের আনাচে-কানাচে উন্নয়ন হয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন। আমি প্রতিটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখেছি। মাটি ও মানুষ বলছে ‘নৌকা’ ‘নৌকা’। আমি নারায়ণগঞ্জবাসীকে অনুরোধ করবো আমাকে পাঁচ বছরের জন্য সুযোগ দিন। যেকোনো সময় অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে। আমি আপনাদের জন্য মৃত্যুকেও বরণ করতে রাজি আছি। আমি ঘর-সংসারের দিকে তাকাইনি। আশা করি, আপনারা আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।

আইভী বলেন,  অনেকগুলো কাজই চলমান রেখে আসছিলাম। বিজয়ী হলে একসঙ্গে অনেক কাজই করতে হবে। তার মধ্যে প্রাধান্য দেবো সবচেয়ে বেশি কদমরসূল ব্রিজে। আর ছয়টি মেগা প্রজেক্ট চলমান ছিল। আমি ঈমানের সাথে কাজগুলো করেছি, সেবা করেছি। কখনো কোনো অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করেছি। জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাজ করেছি। কখনো দলবাজি করি নাই। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলেছি।

বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক মাঠে তৈমূর আলম খন্দকার বড় নেতা হলেও ভোটের মাঠে সফলতা নেই। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ায় উপদেষ্টা ও আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের একটি অংশে ভর করে এবার জেতার চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হবে না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে ওই অংশটি নৌকার পক্ষে সরব হয়েছে এবং জয়লাভ নিশ্চিতে কাজ করবেন। 

২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী হয়েছিলেন শামীম ওসমান। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। সে নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেন বিএনপির তৈমূর আলম। জমজমাট লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি হলেও দলীয় নির্দেশে শামীম-আইভীকে লড়াইয়ে রেখে ভোটের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তৈমূর। সেই নির্বাচনে ভোটে জিতেন আইভী। 

এরপর ২০১৬ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী হলেও তৈমূরকে না দিয়ে দল থেকে মনোনয়ন পান অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন। ওই নির্বাচনেও বিজয়ী হন ডা. আইভী।