Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার শঙ্কা: পরিস্থিতি মোকাবিলায় জোরালো প্রস্তুতি দরকার

জুলাই ১৫, ২০২০, ০৭:৪২ পিএম


বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার শঙ্কা: পরিস্থিতি মোকাবিলায় জোরালো প্রস্তুতি দরকার

দেশের নদ-নদীগুলোতে দ্রুত বাড়ছে পানি। মূলত উত্তর-পশ্চিম, উত্তর-মধ্য ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা বেশি। বাড়ার কারণ বৃষ্টিপাত এবং উজানি ঢল।

এসব নদ-নদীর পানি বাড়া মানে ক্রমান্বয়ে দেশের মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণে ক্রমিক প্রবাহে পানি বাড়বে। এটাই বাংলাদেশের বর্ষাকালীন ধারা।

 এই বৈশিষ্ট্যের কারণে স্থানে স্থানে বন্যা হয়। কোনো বছর পানি কম হয়, কোনো বছর বেশি। এবার পানির ধারা প্রবল। ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা ও মেঘনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পদ্মার পানিও দ্রুত বাড়ছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের নদ-নদীর পানিও কূল ছাপিয়ে যাচ্ছে প্রায়। এরইমধ্যে বেশ কিছু জেলায় ছড়িয়েছে বন্যা। দিন কয়েকের মধ্যে আরো কয়েক জেলায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানিয়েছে সর্বোচ্চ ২৩টি জেলা বন্যাকবলিত হবে।

পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণের কারণে সৃষ্ট বন্যায় দেশের ১৭ জেলার সাড়ে ১৪ লাখ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। তিনি জানান, পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে আরও প্রায় তিন লাখ মানুষ।

এনামুর রহমান বলেন, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের গত সপ্তাহের পূর্বাভাসে মনে করা হয়েছিল, এ বন্যা চলতি জুলাই মাস পর্যন্ত থাকতে পারে। কিন্তু তিন দিন ধরে বাংলাদেশের উজানে যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে ধারণা করা যায়, এই বন্যা আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে।

সম্ভবত ১৯৯৮ সালের ৩৩ দিনের বন্যার রেকর্ডে পৌঁছাতে যাচ্ছে এবারের বন্যা। ১৯৯৮ সালের পর বড় বন্যা হয়েছিল গত বছর, ১৭ দিনের। চলমান বন্যা এরইমধ্যে ১৭ দিন পার করেছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের দীর্ঘস্থায়ী বন্যার প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময়ে অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও পড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তা্লব সইতে হয়েছে। আর এখন বন্যা।

এই বন্যায় গ্রামাঞ্চলে খাদ্যনিরাপত্তার ঘাটতি দেখা দেবে, বিশেষ করে সাধারণ মানুষের। স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতেও সংকট দেখা দেবে। সরকারকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে, বন্যায় আক্রান্ত মানুষদের যাতে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া যায়। বেসরকারি খাতকে সংশ্লিষ্ট করা উচিত। কিন্তু কতটুকু সংশ্লিষ্ট করা যাবে! রাষ্ট্রের সহায়তায় বেসরকারি খাতের ভূমিকা ভালো নয়।

দেশে অনেক বছর বড় ও দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হয়নি। এবার হলে তা সামাল দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে। করোনা মহামারির মধ্যে ত্রাণ ও সহায়তা কার্যক্রম চালানো বেশ কঠিন হবে।

সরকারের উচিত হবে বন্যার্ত মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া, তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা। আর সম্ভাব্য আক্রান্তদের জন্য কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা।

এ কাজে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে যুক্ত করা উচিত। বন্যার পর যাতে খাদ্যসংকট দেখা না দেয় সে জন্য খাদ্যের মজুদও ঠিক রাখতে হবে।

আমারসংবাদ/এসটিএম