Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

রাজধানীর জলাবদ্ধতার নিরসন হবে কবে?

জুলাই ২২, ২০২০, ০৫:৪৮ পিএম


রাজধানীর জলাবদ্ধতার নিরসন হবে কবে?

বর্ষাকালে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রাজধানী ঢাকা। এর জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ঢাকা ওয়াসা ও দুই সিটি কর্পোরেশনকে। এ নিয়ে ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়সভাও হয়।

এবার জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু অবস্থার উন্নতি ঘোষণার নিচে চাপা পড়ে আছে, ওপরে ভাসছে জল। দু’দিনের ভারি বৃষ্টিতে রাজধানী থইথই। নগরবাসী আবার জলাবদ্ধতার অভিজ্ঞতা লাভ করলো।

বেশির ভাগ এলাকার সড়ক ডুবে গিয়েছিল, চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে মানুষকে। শেষ পর্যন্ত জলাবদ্ধতার দায় কোনো সংস্থাই নেয় না। ওয়াসা বলে তাদের খাল পরিষ্কার; কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের ড্রেন কাজ করে না।

আর সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলীরা বলেন, ওয়াসার ‘অপরিষ্কার’ বক্স কালভার্ট ও খালের জন্যই জলাবদ্ধতা। বৃষ্টিতে রাজধানীর ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও মানিক মিয়া এভিনিউ, বংশাল, গুলিস্তান, শান্তিনগর, কাকরাইল, বাংলামোটর, গুলশান, ভাটারা, সদরঘাট, মতিঝিল, মিরপুর, উত্তরাসহ বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কোথাও কোথাও কোমর সমান পানিও জমেছিল। নিমজ্জিত এলাকাগুলোর অলিগলিতে জমে যাওয়া পানি ঢোকে দোকানপাট ও বাসাবাড়ির নিচতলায়।

খানাখন্দে ভরা রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে অনেকে। যানবাহনের উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে কোনো কোনো এলাকায়। ভোরবেলার বৃষ্টির পানি কয়েক ঘণ্টা সড়কে জমে ছিলো। এ কারণে অফিসগামী মানুষের ভোগান্তির সীমা ছিলো না। কোনো কোনো এলাকায় গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় বিকট যানজট।

নগরবাসীর অভিযোগ, প্রতি বছর সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসাসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের নামে রাস্তাঘাট খোঁড়াখুঁড়ি করে। কর্তারা বলেন, আগামী বছর থেকে জলাবদ্ধতা আর হবে না। প্রতিশ্রুতিই সার। জলাবদ্ধতাই যেনো রাজধানীবাসীর নিয়তি। জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতেই হয়। আর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ কাজের দোহাই দিয়ে যায়। কারো কোনো গাফিলতি নেই।

ওয়াসার খাল ঠিক আছে, পাম্পিং স্টেশন ঠিক আছে; সিটি কর্পোরেশনের ড্রেনেজ সিস্টেম ঠিক আছে। সমস্যা উন্নয়নকাজে। ওই সবের কারণে ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে থাকে। আর উন্নয়ন কর্তারা বলেন, এসব এখন না করলেই নয়।

মোদ্দা কথা, সবাই ঠিক। মূল সমস্যাটি কাজের সময়ে এবং সমন্বয়ে। কোন সময়ে কোন কাজটি করতে হবে সেটিই ঠিক করতে পারে না প্রতিষ্ঠানগুলো, বিশেষ করে যারা খোঁড়াখুঁড়ির সঙ্গে জড়িত। জনস্বস্তি তাদের বিবেচনাতেই থাকে না।

এ বিষয়টিকেই আগে প্রাধান্য দিতে হবে। আর একে অপরকে দোষারোপ বা দায় চাপানোর সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি থেকে রক্ষার জন্য আন্তরিকতা খুব জরুরি।

আমারসংবাদ/এআই