Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

আয়া সোফিয়া বিতর্কের মারপ্যাঁচে এরদোগান

সাদিয়া আফরিন কুমু

জুলাই ২৬, ২০২০, ০৫:৫৮ পিএম


আয়া সোফিয়া বিতর্কের মারপ্যাঁচে এরদোগান

‘আয়া সোফিয়া’ বা ‘হায়া সোফিয়া’ নামটি কিছুদিন ধরে গণমাধ্যমগুলোর সুবাদে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। বসফরাস প্রণালীর পার্শ্বদেশে দাঁড়িয়ে থাকা আয়া সোফিয়া স্থাপনাশৈলী ও ধর্মীয় তাৎপর্যের বিচারে বহু বছর ধরেই বেশ গুরুত্ব বহন করে আসছে।

তুরস্কের ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক, প্রাচীন ইতিহাস আর ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হিসেবে বিবেচিত হওয়া আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের ঘোষণার পর থেকে ফের আলোচনায় এসেছে এটি, এরপর থেকেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোয় প্রায় নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে আয়া সোফিয়ার খবর।

সম্প্রতি এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে  তুরস্কের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ ‘আয়া সোফিয়া’ হয়ে উঠেছে দেশটির চলমান রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্র। আয়া সোফিয়াকে নিয়ে আদালতে মামলা চলে আসছিল বিগত বেশকিছু বছর ধরে।

তুর্কির সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায় আয়া সোফিয়াকে একটি মসজিদ হিসেবে পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলো। আয়া সোফিয়ায় মুসলিমদের অধিকার ‘সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত’ হওয়ার দাবি তুলে এটিকে পুনরায় মসজিদে রূপান্তরের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল ইসলামপন্থীরা। এই দাবির স্বরূপ উন্মোচনের জন্য চোখ রাখতে হবে ইতিহাসের পাতায়।

দেড় হাজার বছর আগে বাইজেন্টাইন অধিপতি। প্রথম জাস্টিনিয়ানের আমলে ৫৩২ থেকে ৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে মধ্যবর্তী সময়ে গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ হিসেবে প্রথম নির্মিত হয় আয়া সোফিয়া।

তারপর ক্ষমতার রদবদলের জেরে একাধিক বার পরবর্তীত হয়েছে আয়া সোফিয়ার পরিচয়, কখনো হয়ে উঠেছে রোমান ক্যাথলিক চার্চ, কখনো বা পরিবর্তিত হয়েছে ক্যাথিড্রালে। পরবর্তীতে অটোমান সুলতান মুহাম্মদ ফাতেহ কর্তৃক ইস্তাম্বুল জয়ের পর ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে এটিকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়।

এখানে কিছু কথা, কোনো রাজ্যের বিজয়ী পক্ষ সবসময় পরাজিত অঞ্চলের সমস্ত সম্পদ, জমিজমাসহ সকল সম্পত্তির মালিকানা লাভ করে। কনস্টান্টিনোপল (বর্তমান ইস্তাম্বুল) বিজয়ের ফলে সাধারণভাবেই আয়া সোফিয়া মুসলিমদের দখলে চলে আসে।

তবুও রাষ্ট্রীয়ভাবে দখলদারি না নিয়ে নিজ অর্থে আয়া সোফিয়া ক্রয় করে মসজিদ হিসেবে ওয়াকফ করে দেন সুলতান মুহাম্মদ ফাতেহ (ওই ক্রয়-বিক্রয় বিষয়ক চুক্তির দলিলটি আঙ্কারার ‘টার্কিশ ডকুমেন্ট অ্যান্ড আর্গুমেন্ট ডিপার্টমেন্ট’-এ সংরক্ষিত রয়েছে)।

প্রায় ৬০০ বছর ধরে মসজিদ হিসেবে ব্যবহারের পর ১৯৩৪ সালে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার কামাল পাশা আতাতুর্ক আয়া সোফিয়াকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে এটিতে সকল ধরনের ধর্মীয় আচার নিষিদ্ধ করেন। আয়া সোফিয়ায় ধর্মীয় আচার নিষিদ্ধ হওয়ার প্রতিবাদে ২০১২ সালের ২২ মে হাজার হাজার মুসলিম জনতা স্লোগান মুখর হয়ে উঠেছিল আয়া সোফিয়ার সামনে। তুরস্কের সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে একে মসজিদে রূপান্তরের দাবি করা হচ্ছিলো ২০১০ সালের দিক থেকেই।

এরপর ২০১৮ সালের পর এরদোগান সরকার আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের বিষয়ে মুখ খোলে। আন্তর্জাতিক  ও অভ্যন্তরীণ ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধীদলীয় নেতাদের ঘোর বিরোধিতার মধ্যেও তুরস্কের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালত দ্য কাউন্সিল অব স্টেট গত ১০ জুলাই আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের রায় দেয় এবং কামাল আতাতুর্ক কর্তৃক গৃহীত ১৯৩৪ সালে আয়া সোফিয়াকে জাদুঘরে রূপান্তরের রায়কে অবৈধ ও অসঙ্গতিপূর্ণ ঘোষণা করে।

এরপরপরই দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার আদেশ দিয়ে নির্দেশনায় সাক্ষর করেন।

সেই সাথে আগামী ২৪ জুলাই প্রথম জুমার নামাজ আদায়ের পর থেকে এটিকে নামাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন এরদোগান। দীর্ঘ ৮৬ বছর পর আজানের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে হায়া সোফিয়া।

এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গন গুঞ্জরিত হচ্ছে নানান আলোচনা-সমালোচনায়, তারই জের ধরে শুরু হয়েছে চাপা বিতর্ক। ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের ইউনেস্কোর বিশ্বঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত হওয়া স্থাপনা আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রুপান্তরের সিদ্ধান্তে ইউনেস্কো, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ক্ষোভ উগড়েছে।

আয়া সোফিয়ার ‘ওয়াল্ড হেরিটেজ’ স্টাটাসটি পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউনেস্কো।  গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিস, সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোস ক্রিস্টোভুলাকিস ও রুশ সংসদীয় উচ্চ কক্ষের উপ প্রধান ভ্লাদিমির জাভারোভ আয়া সোফিয়াকে মসজিদ হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও তুরস্ককে এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে তুরস্কের এহেন সিদ্ধান্তকে হতাশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। ভ্যাটিকান পোপসহ রাশিয়ার অর্থোডক্স চার্চ-প্রধান তুরস্কের বিপক্ষে নিন্দা জ্ঞাপনসহ ক্ষুব্ধ মন্তব্য করেছে।

আয়া সোফিয়াকে তুরস্কের ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক হিসেবে আখ্যা দিয়েই এটির রূপান্তরে বাদ সাধছেন আধুনিকতাবাদীরা। কিন্তু ‘আয়া সোফিয়া নিয়ে তুরস্কের বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগ সরাসরি তুরস্কের সার্বভৌমত্বকে আক্রমন করার সামিল হবে, এবং এবিষয়ে কারো নাক গলানো মেনে নেয়া হবে না— জানিয়ে বহির্বিশ্বের প্রতিক্রিয়ার জবাব দিয়ে উত্থাপিত সব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এরদোগান।

তুরস্কের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগনের চাহিদা বিচারেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং সব ধর্মের লোকদের জন্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে উন্মুক্ত থাকবে আয়া সোফিয়া। তা ছাড়া ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিতকরণে তুরস্ক বরাবরই তৎপর এ ধরনের বিবৃতি দিয়ে সম্প্রতি আয়া সোফিয়ার ব্যাপারে নিজের অবস্থান খোলাসা করেছেন এরদোগান। খবর আল জাজিরার।

চলমান বিতর্কের বিষয়ে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু জানিয়েছেন, আয়া সোফিয়ার  ভবিষ্যত নির্ধারিত হবে ‘জাতীয় সার্বভৌমত্বের’ ভিত্তিতে। এই বিষয়ে ‘আন্তর্জাতিক’ মহলের নাক গলানোর অধিকার নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। (সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর)।

অন্যদিকে, বিতর্ক বা ক্ষোভের পাশাপাশি আতঙ্কও ডানা মেলেছে আয়া সোফিয়াকে ঘিরে। বিশেষজ্ঞজনেদের ধারণা, আয়া সোফিয়ার রূপান্তরের সিদ্ধান্তটি পাশ্চাত্যবাদীদের ইসলামবিদ্বেষের আগুনে ঘি ঢালবে।

অনেক ইসলামিক চিন্তাবিদসহ বিশেষজ্ঞজনেরা মনে করছেন আয়া সোফিয়ার রূপান্তর সাম্প্রদায়িক সংঘাতকে উস্কে দিয়ে মুসলিমদের জন্য নতুন সংকটের জন্ম দেবে। সারা বিশ্বে মুসলিমরা যখন জুলুম- নিপীড়নের স্বীকার হচ্ছে, এরকম একটি প্রতিকূল সময়ে আয়া সোফিয়ার মসজিদে রূপান্তরের উদাহরণকে পুঁজি করে মুসলিমদের উপর নির্যাতন বাড়াতে পারে ‘ইসলামোফোবিয়া’য় আক্রান্ত দেশগুলো।

পাশাপাশি বৈশ্বিকভাবে তুরস্কের চাপে পড়ার আশংকাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আয়া সোফিয়াকে নিয়ে এরদোগানের রক্ষণশীল সিদ্ধান্তের দরুণ তুরস্কের ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার চেষ্টা বিফলে যেতে পারে বলে সংশয় প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

প্রাথমিকভাবে তুরস্ক এসব আমলে না নিলেও এহেন জোরালো যুক্তিগুলোর সুদূরপ্রসারিতা একেবারে অগ্রাহ্য করা যাচ্ছে না। দেশটির অভ্যন্তরের রাজনীতিতেও টানাপড়েন চলছে আয়া সোফিয়াকে নিয়ে, সম্প্রতি গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে তুরস্কের রাজনৈতিক বিরোধী দল ‘পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি’ (এইচডিপি)। এই দলের নেতাকর্মীসহ সমালোচক মহল সরাসরি আঙুল তুলছে এরদোগান সরকারের দিকে।

তাদের দাবি, আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের মাধ্যমে এরদোগান সরকার তাদের পক্ষে জনমত বৃদ্ধির মাধ্যমে হারাতে বসা জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে এনে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ তুরস্কের ‘পাবলিক সেন্টিমেন্ট’কে কাজে লাগিয়ে  রাজনীতির ময়দানে নিজেদের আসন পাকাপোক্ত করার চাল হিসেবে এই সিদ্ধান্তকে দেখতেই  স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে এরদোগান-বিরোধীরা।

ধর্মীয় উন্মাদনাকে পুঁজি করে ক্ষমতায় আসার কৌশল  রাজনীতিতে নতুন নয়। কামাল পাশা আতাতুর্কের আমলে মসজিদ থেকে জাদুঘরে রূপ লাভ করা আয়া সোফিয়া তখন থেকেই রাজনীতির দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহূত হয়ে আসছিল।

অনেকের ধারণা, এরদোগান একইভাবে ভিন্নপন্থা অবলম্বন করে আয়া সোফিয়ার উপর রাজনীতির কাঁঠাল ভাঙতে চাইছেন। ধর্মীয় রাজনীতির ভিত্তিতে গড়ে উঠা ডানপন্থী দল ‘একেপি’ এর সমর্থকদের ৯০ শতাংশই আর গোটা তুরস্কের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশেরও বেশি জনগণ  আয়া সোফিয়ার ব্যাপারে এরদোগানের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট। এরদোগান সরকারের  আয়া সোফিয়া বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্দেশ্য কি নিছক রাজনীতির ময়দান চাঙ্গা করা?

সত্যটা জানতে আলোকপাত করতে হবে কিছুটা পেছনে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের দিকে এরদোগান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে একটি  একাডেমিক ম্যাগাজিন তুরস্কের বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ইউসুফ হুলাজগলো সাথে আরো দুজন গবেষকের করা একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে, যেখানে ১৯৩৪ সালে আয়া সোফিয়াকে জাদুঘরে রূপান্তরের রায়কে ‘অবৈধ’ বলা হয়। ওই গবেষণাপত্রে এও বলা হয়, আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর রূপে অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়।

এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এরদোগান তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানিয়ে দেন— আয়া সোফিয়ার রূপান্তরের প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে না। (সূত্র : আল জাজিরা) এমনকি গত নির্বাচনে এরদোগান তার নির্বাচনি ইশতেহারে আয়া সোফিয়ার পরিবর্তনের ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।

তাই এরদোগানের বিপক্ষে আয়া সোফিয়াকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ পুরোপুরি মানতে নারাজ অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ এরদোগানপন্থীরা। রাজনীতিতে ধর্মীয় ইস্যুকে প্রাধান্য দিতে প্রায়ই দেখা গেছে এরদোগানকে।

এরদোগান ইস্তাম্বুলের মেয়র থাকাকালীন সময়ে ১৯৯৮ সালে সেক্যুলার সরকার কর্তৃক ওয়েলফেয়ার পার্টি নিষিদ্ধ করা হলে বিক্ষোভে যোগ দেন, সেখানে মসজিদ আমাদের ক্যান্টনমেন্ট, গম্বুজ আমাদের হেলমেট, মিনার আমাদের বেয়নেট আর বিশ্বাসীরা আমাদের সৈনিক কবিতাটি আবৃতি করায় সরকারি রোষানলের কবলে পড়তে হয় এরদোগানকে, তার ফলে ধর্মীয় বিভক্তি সৃষ্টির দায়ে রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞাসহ জেলও খাটতে হয়েছিল তাকে।

উল্লেখ্য, এরদোগানের একেপি পার্টি আদর্শিক দৃষ্টিকোণ থেকে ‘মিল্লি গরুশ’-এর উত্তরসূরি। প্রফেসর ড. নাজমুদ্দিন এরবাকানের হাত ধরে ‘মিল্লি গরুশ’ গঠনের মাধ্যমেই তুরস্কে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামি আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়। ‘মিল্লি গুরুশ’ এর উদ্দেশ্য ছিলো— মুসলিমদের আধ্যাত্মিক উন্নতি, তুরস্কের অর্থনৈতিক সাবলম্বিতা এবং ইসলামি ইউনিয়ন গড়ে তোলা।

২০০১ সালের দিকে মিল্লি গরুশের ভেতরে তরুণ প্রজন্ম ও নতুনদের নেতৃত্বে নেয়ার নামে ইসলামি আদর্শের সাথে ‘লিবারেল ডেমোক্রেসি’ নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে মিল্লি গরুশকে ভেঙে গঠন করা হয় আজকের এই একেপি পার্টি। অর্থাৎ এটা প্রতীয়মান যে, একেপির রাজনৈতিক মতাদর্শের শিকড় ধর্মীয় চেতনায় গ্রথিত।

এ থেকে বোঝা যায় যে, আয়া সোফিয়ার রূপান্তরের বিষয়টি এরদোগানের রাজনীতির ইতিহাসে নতুন কোনো ধর্মীয় ইস্যু নয়। তাহলে আয়া সোফিয়া কি এরদোগানের রক্ষণশীল ধর্মীয় চেতনার বহিঃপ্রকাশ নাকি মসনদে স্থায়ী হওয়ার কৌশল, তা সময়ই বলে দেবে।

লেখক : শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আমারসংবাদ/এসটিএম