Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

আউশ ধান চাষ ব্যবস্থাপনা

আল মোন্তাকিম মাহদী নোমান

মে ২১, ২০২১, ১০:৪০ এএম


আউশ ধান চাষ ব্যবস্থাপনা

মাঠ পর্যায়ে এখন বোরো ধান কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। জমির ধান শতকরা ৮০ পাকলে জমির ধান কেটে সংগ্রহ করে ভালোভাবে মাড়াই-ঝাড়াই করে সংরক্ষণ করতে হবে। আউশ ধানের বীজ ইতোমধ্যে বোনা হয়ে যাওয়ার কথা। না হয়ে থাকলে দেরি না করে এক্ষুণি বপন করতে হবে।

আউশ ধানের আবাদ বৃষ্টি নির্ভর, ফলে এ ধান উৎপাদনের সেচ খরচ সাশ্রয় হয়। তাছাড়া উচ্চফলনশীল (উফশী) জাতের ধান চাষ করলে অধিক ফলন পাওয়া যায়। আউশ ধানের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় ১৫-৩০ চৈত্র। বোনা আউশ এবং রোপা আউশ দুইভাবে চাষ করা হয়।

বিভিন্ন জাত:
বোনা আউশের জনপ্রিয় আধুনিক জাত ব্রিধান ৪৩, ব্রিধান ৬৫, ব্রিধান ৮৩ এবং বিনাধান-১৯। রোপা আউশের উফশী জাত হিসেবে বিআর২৬, ব্রিধান৪৮, ব্রিধান ৫৫, ব্রিধান৮২ ও ব্রিধান৮৫ এবং বোনা আউশের উফশী জাত হিসেবে বিআর২০, বিআর২১, বিআর২৪, ব্রিধান ৪২, ব্রিধান ৪৩, ব্রিধান ৮৩ আবাদ করা যায়।
বীজতলায় চারা রোপন করার আগে ভালোভাবে তৈরি করে নিতে হবে। বীজতলায় প্রতি বর্গমিটার বেডে ৮০-১০০ গ্রাম অঙ্কুরিত বীজ সমানভাবে বুনে দিতে হবে। সাধারণত জমিতে ২০-২৫ দিনের চারা রোপণ করা হয়। রোপণের সময় জমিতে ছিপছিপে পানি থাকলেই চলে। ১ হেক্টর জমিতে ৮-১০ কেজি বীজের চারা লাগে। সারিতে চারা রোপণ করতে হবে। সারি থেকে সারির দূরত্ব ২০-২৫ সেমি. এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ১৫-২০ সেমি। রোপনের আগে ভালোভাবে চাষ দিয়ে জমি তৈরি করে নিতে হবে। অধিক ফলন পাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জৈবসারসহ সুষম মাত্রায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে। 

ইউরিয়া সার তিন ধাপে (প্রথম ধাপে জমি শেষ চাষের সময়, দ্বিতীয় ধাপে চারা রোপণের ১৫ দিন পর, তৃতীয় ধাপে কাচা থোড় আসার ৫-৭ দিন আগে) এবং অন্যান্য সার জমি শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। টিএসপি সারের পরিবর্তে ডিএপি সার ব্যবহার করা হলে টিএসপি সারের সমপরিমাণ ডিএপি সার ব্যবহার করে প্রতি কেজি ডিএপি সার ব্যবহারের জন্য ৪০০ গ্রাম হারে ইউরিয়া কম ব্যবহার করতে হবে।

পরিচর্যা:
আউশের জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। ধানের চারা রোপণের পর জমিতে অন্তত ১০-১২ দিন ছিপছিপে পানি রাখতে হবে। সম্পূরক সেচযুক্ত ধানের ফলন হেক্টরে প্রায় ১ টন বেশি হয়।

পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনের জন্য নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করতে এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করতে হবে। সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে রোপা আউশের জমিতে  ৮-১০ ফুট দূরে দূরে ধৈঞ্চার চারা রোপণ করতে হবে অথবা কয়েকটি বাঁশের কঞ্চি/গাছের ডাল পুঁতে দিতে হবে। মাজরা এবং বাদামি ঘাসফড়িং পোকা দমনে প্রয়োজনে কীটনাশক সানটাপ বা একতারা বা প্লেনাম ব্যবহার করা যেতে পারে। থ্রিপস, সবুজ পাতা ফড়িং ও গান্ধি পোকা দমনের জন্য কার্বোসালফান গ্রুপের কীটনাশক মারশাল ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্লাস্ট, খোলপড়া হলে নাটিভো, এমিস্টার টপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
এসব পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনে সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ধানের ফলন বৃদ্ধি হবে এবং প্রয়োজনে স্থানীয় কৃষি বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে।

আল মোন্তাকিম মাহদী নোমান
শিক্ষার্থী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

আমারসংবাদ/কেএস