Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিতে কৃষির ভূমিকা

মুহিউদ্দিন নুর

জুন ১০, ২০২১, ০১:৩০ পিএম


বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিতে কৃষির ভূমিকা

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে মাথাপিছু আয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ভারতের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯৪৭ ডলার (দৈনিক ইত্তেফাক ২৩ মে, ২০২১)। এছাড়া যে পাকিস্থানের কাছে থেকে মুক্তিকামী বাংলাদেশীরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল তাদের সাথে বর্তমানে বাংলাদেশের তুলনাই চলে না। 

বিশ্বব্যাংকের সাবেক উপদেষ্টা আবিদ হাসান সম্প্রতি পাকিস্তানের দ্য নিউজ ডটকমে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলেছেন ‘যদি পাকিস্তানে অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খল অবস্থা অব্যাহত থাকে, তাহলে এমন সম্ভবনা দেখা দিতে পারে যে, ২০৩০ সালে বাংলাদেশের কাছে আমাদের সহায়তা চাইতে হতে পারে।’ এ থেকেই তাদের অর্থনৈতিক দৈন্যতা সহজেই অনুমেয়। 

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), বাংলাদেশ ব্যাংক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ১৩টি খাতে বিশ্বের শীর্ষ দশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান জানা গেছে। এর মাঝে ১০ টি খাতই কৃষি সংশ্লিষ্ট। এর থেকে সহজেই অনুমান করা যায় দেশের অর্থনীতিতে কৃষির ভূমিকা কতখানি। 

বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিতে যে কয়েকটি সেক্টর নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছে তার মাঝে কৃষি (ভেটেরিনারি, মাৎস্যবিজ্ঞানসহ) অন্যতম। কৃষি ও কৃষিবিদদের এই অবদানের বিষয়টি অনেক আগেই উপলব্ধি করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন, কৃষির উন্নতি ছাড়া এদেশের মানুষের মুক্তি আসতে পারে না। ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দিনটি বাংলাদেশের কৃষিবিদদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। এদিন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ সফরেই বঙ্গবন্ধু সরকারি চাকরিতে কৃষিবিদদের মর্যাদা দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণি করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং কিছুদিন পরেই তা বাস্তবায়ন করেন। বঙ্গবন্ধুর এ অবদান স্মরণীয় করে রাখতে ২০১১ সাল থেকে কৃষিবিদরা এ দিনটিকে ‘কৃষিবিদ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন। 
আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দ্বার প্রান্তে। কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিয়েই স্বয়ংসম্পূর্ণতার প্রথম ধাপটি স্থাপন করেন জাতির পিতা। এজন্যই তার ওই বক্তৃতা কৃষিবিদদের কাছে আজও ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। চাকরিতে কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির স্বীকৃতি দেওয়ার কারণেই বর্তমানে মেধাবী তরুণ-তরুণীরা কৃষিতে পড়তে আসেন। কৃষিকে এগিয়ে নিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একাধিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। কৃষি খাতে রয়েছে উজ্জ্বল ক্যারিয়ারের হাতছানি।

বিশ্বজুড়ে যে কয়েকটি পেশাকে সম্ভাবনাময় বলা হচ্ছে তার মধ্যে এটি অন্যতম। এক সময় ৭ কোটি মানুষের দেশে খাদ্যের অভাব ছিলো, কিন্তু বর্তমানে ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের চাহিদা ভালোভাবেই পূরণ হচ্ছে। এ পেশার সাথে জড়িত কৃষিবিদ ও কৃষিবিজ্ঞানীদের কল্যাণেইদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ১৯৭১-৭২ সালে মাথাপিছু জমির পরিমাণ ছিল ২৮ শতাংশ, তা কমে এখন দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশে। তারপরও বাংলাদেশ আজ ধান উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়। আমন, আউশ ও বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনে বছরে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বে ধানের গড় উৎপাদনশীলতা প্রায় তিন টন। আর বাংলাদেশে তা ৪ দশমিক ১৫ টন। ২০১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ধান রপ্তানি শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলছে, ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের সফলতাও বাড়ছে। ১৯৭২ সাল থেকে দেশি জাতকে উন্নত করে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা উচ্চ ফলশীল (উফশী) জাত উদ্ভাবনের পথে যাত্রা করেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ১১৭টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা সংস্থা বিনার বিজ্ঞানীরা লবণসহিষ্ণু, খরাসহিষ্ণু ও বন্যাসহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। বিশ্বে প্রথমবারের মতো জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশের কৃষি গবেষকরা। বর্তমানে দেশে বছরে গড়ে ১ কোটি ৬২ লাখ টন সবজি উৎপাদন হয়। এছাড়া ডাল, তেলজাতীয় শস্য, শাকসবজি ও ফলমূলের উৎপাদনও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। 

২০০৬ সালে দেশে ২ কোটি ৬১ লাখ টন খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়েছিল, যা ২০১৯-২০ সালে বৃদ্ধি পেয়ে ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৪৩ হাজারে উন্নীত হয়েছে। 

এবার আসা যাক মৎস্যখাতে 'দ্য স্টেট অব দ্য ওয়াার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২০' নামে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাদু পানির মাছের উৎপাদন বাড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে দ্বিতীয অবস্থানে এবং মিঠা পানির মাছের উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে (বিবিসি বাংলা)। মাছের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তি ঠেকাতেও কাজ চলছে বাংলাদেশে। 

খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে, ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্বের যে চারটি দেশ মাছ চাষে বিপুল সাফল্য অর্জন করবে, তার মধ্যে প্রথম বাংলাদেশ। এরপর থাইল্যান্ড, ভারত ও চীন। গত ১০ বছরে মাছের উৎপাদন ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। আর মাছ রপ্তানি বেড়েছে ২০ শতাংশের বেশি। একক প্রজাতি হিসেবে বাংলাদেশে ইলিশের অবদান সর্বোচ্চ। দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে। 

অন্যদিকে পৃথিবীর মোট ইলিশ উৎপাদনের প্রায় ৬০ শতাংশ হয় বাংলাদেশে।দেশে দৈনন্দিন খাদ্যে প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৬০ শতাংশ যোগান দেয় মৎস্য খাত। জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য খাতের অবদান জিডিপিতে ৩.৫০ শতাংশ।সম্প্রতি দেশের পুকুর ও খালে মাছ চাষে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। দেশে উৎপাদিত মাছের ৭৫ শতাংশ এখন বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করছেন মৎস্য চাষিরা। পারিবারিক প্রয়োজনে মাছ চাষের ধারণা এখন বদলে গেছে। ভোক্তাদের এখন নিজের পুকুরের মাছ খাওয়ার পাশাপাশি বাজার থেকে কেনার প্রবণতাও বেড়েছে।

অন্যদিকে কৃষি খাত ব্যাপকভাবে প্রাণিসম্পদের ওপর নির্ভরশীল। প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন ছাড়া কৃষিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। বিগত ২০১০ থেকে ২০২০ সালে দেশে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, মুরগি ও হাঁসের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ০.৫৮, ০.৭৪, ০.৯৬, ১.৮৬, ২.৩২ এবং ২.৯০%। বাংলাদেশ ছাগলের সংখ্যা ও মাংস উৎপাদনে চতুর্থ এবং গবাদিপশু উৎপাদনে বিশ্বে ১২তম অবস্থান। ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন (এফএও) ও আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তির ২০১৫ সালের তথ্য মতে বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বিশ্বে অন্যতম সেরা মাংস ও চামড়া উৎপাদনকারী জাত। স্থির মূল্যের ভিত্তিতে বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরের জিডিপিতে প্রাণিসম্পদ খাতের প্রাক্বলিত শতকরা অবদান হচ্ছে ১.৪৩ ভাগ। যা টাকার অংকে প্রায় ৪৬,৬৭৩ কোটি টাকা। প্রাণিসম্পদ খাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ৩.০৪ ভাগ। দেশে উৎপাদিত মোট ডিমের প্রায় ৫০ শতাংশ আসে বাণিজ্যিকভাবে মুরগি থেকে এবং বাকি ৫০ শতাংশ আসে দেশী মুরগি ও হাঁস থেকে। মানুষের আর্থিক উন্নয়নের ফলে ডিম ও মাংস খাওয়ার পাশাপাশি মুরগির মাংসভিত্তিক ফাস্ট ফুড গ্রহণের প্রবণতা উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা দেশে ডিম ও ব্রয়লার মাংসের উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করছে। পাঁচ বছরে দুধের উৎপাদন বেড়েছে ৪৭%। দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টায় বর্তমানে দেশে পোলট্রি শিল্প একটি কাঠামোয় দাঁড়িয়েছে।

এতোসবের মাঝেও বড় চিন্তার কারণ হলো বাংলাদেশে জমি কমেছে এবং প্রতিনিয়ত কমছে, কিন্তু এর বিপরীতে মানুষ বেড়েই চলছে। ১৯৭১ সালে ছিল সাড়ে সাত কোটি মানুষ, আজ ১৬ কোটি। দেশের এই বিপুল জনসংখ্যার মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন কৃষকেরা। তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায় এই দেশের। কারণ, কৃষক যদি আর্থিকভাবে সুরক্ষাবোধ না করেন, তবে তিনি কৃষিকাজে উৎসাহ হারাবেন এবং কৃষিজমি ক্রমাগত অকৃষি কাজে ব্যবহৃত হতে থাকবে। যার অবশ্যম্ভাবী পরিণাম, ভবিষ্যতের খাদ্যনিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া।

তবে এসব বিষয় মাথায় রেখেই বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কর্তৃক গৃহীত কৃষি প্রণোদনা/পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় ২০০৮-০৯ অর্থবছর হতে এ পর্যন্ত ৯৬০ কোটি ৩৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ৪৪ জন কৃষক উপকৃত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৩৩ কোটি ১৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা কৃষি উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। ফসলের উন্নত ও প্রতিকূলতা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনে অভূতপূর্ণ সাফল্য এসেছে। ২০১৮-১৯ সনে অবমুক্তকৃত উদ্ভাবিত জাত ১২টি, উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ৯৫টি, এবং নিবন্ধিত জাত ২৬টি। গম ও ভুট্টার গবেষণা সম্প্রসারণের জন্য সরকার ২০১৮ সালে গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গমের ১টি জাত উদ্ভাবন, গম ও ভুট্টার ৪ হাজার ৫ শটি জার্মপ্লাজম সংগ্রহ এবং রোগবালাই ব্যবস্থাপনার উপর ১টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে।

বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ৫৩ লাখ ৫৪ হাজার ৮শ ২ নারিকেল, তাল, খেজুর ও সুপারি চারা বিতরণ ও রোপণ করা হয়েছে। আপেল, কমলা, মাল্টা, ড্রাগন প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের অপ্রচলিত দেশী ও বিদেশি ফল চাষে উৎসাহ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ২০১৮-১৯ সনে সম্প্রসারিত সেচ এলাকা ২২ হাজার ৮শ ৪০ হেক্টর। সরবরাহকৃত সেচ যন্ত্র ৫ শ ৪৭টি এবং স্থাপিত সোলার প্যানেলযুক্ত সেচযন্ত্র ৯৫ টি। ৪শ ৮০টি সেচ অবকাঠামো, ৫শ ৮১ কিলোমিটার খাল-নালা খনন/পুনখনন, ৬শ ৮২ কিলোমিটার ভূ-গর্ভস্থ (বারিড পাইপ) সেচনালা এবং ৮ কিলোমিটার ভূ-উপরিস্থ সেচনালা, ২৪ কিলোমিটার গাইড/ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার আওতায় সৌরবিদ্যুৎ চালিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুপেয় পানির ব্যবস্থাকরণ ও সেচ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১০০টি পাতকুয়া স্থাপন করা হয়েছে।

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দেশের হাওর ও দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় কৃষকের জন্য ৭০শতাংশ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৫০ শতাংশ হারে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে।

কৃষি আমাদের দেশের প্রাণভোমরা, এই প্রাণভোমরাকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার মতই কৃষিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে প্রাণভোমরাকে প্রতিনিয়ত পরিচর্যা করে চলেছেন। তারই প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে সামগ্রিক কৃষি খাতে ৩০৯৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ছিল ২৭০২৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে কৃষি, তৈরি পোশাকশিল্প এবং প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্সের ওপর। শেষের দুটি কোনো চিরস্থায়ী ব্যবস্থা নয়। কিন্তু কৃষি চিরস্থায়ী। নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং আবহাওয়ার প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে তাকে টিকে থাকতে হয়। 

জাতিকে ক্ষুধামুক্ত রাখতে এবং অপুষ্টি থেকে বাঁচাতে আমাদের কৃষক ও কৃষিবিজ্ঞানীদের অবদান খুব কমই আলোচিত হয়। দেশের কৃষক দারিদ্রমুক্ত হওয়া মানেই, দেশের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যাওয়া। কৃষিক্ষেত্রে যেকোনো ধরণের সাফল্য তাই দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটায়।

লেখক: কৃষিবিদ মুহিউদ্দিন নুর
প্ল্যানিং, ডেভেলপমেন্ট অফিসার, জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখা
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর 

আমারসংবাদ/কেএস