Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না খুলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলুন 

যোবায়ের ইবনে আলী

জুন ২১, ২০২১, ১১:১৫ এএম


নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না খুলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলুন 

নতুন নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার চাইতে করোনার কারণে দীর্ঘদিন অচল হয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া জরুরি বিষয়। করোনার কারণে শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। সুতরাং প্রথম ধাপের টিকার প্রকৃত দাবিদার ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। দেরী করে হয়ে গেলেও যথাসম্ভব দ্রুত শিক্ষার্থীদের টীকা দিয়ে হলেও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া এখন সময়ের দাবি। 

সম্প্রতি গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার চাইতে চলমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানোন্নয়ন করা এবং খুলে দেয়া জরুরি বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। 

দেশের কিংবা জাতির মেরুদণ্ড হলো শিক্ষা। সেই মেরুদণ্ড আজ ভঙ্গুর হয়ে যাচ্ছে। নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে এরকম মেরুদণ্ড ভারী করার চাইতে কিভাবে হলসহ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া যায় সেই প্রত্যাশা এখন লাখো শিক্ষার্থীর। আমরা দেখতে পাই একেক সময়ে একেক জেলায় করোনার প্রকোপ বাড়লে বা কমলে তার সাথে হাট-বাজারের লকডাউন করা কিংবা খুলে দেয়ার সাথে সম্পর্ক থাকলেও শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে লকডাউনের চালু সম্পর্ক চলছে দারুণ। যখন যে জেলায় সংক্রমণের হার কম তখন সে জেলার স্কুল কলেজসহ স্থানীয় শিক্ষার্থীদের এরকম লোকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশ করে খুলে দেয়া যেতো। 

এছাড়াও সপ্তাহের দুই-দুই-দুই বা তিন-তিন দিন শিফট করে ক্লাস-পরীক্ষা সবকিছুই চালু করা যেতো। স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রশ্নে একজন তরুণ শিক্ষার্থী সাধারণ জনগণের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে। আর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এই বিষয়ে তো কোনো কথা-ই থাকার কথা না। 

অনলাইনে ক্লাস কখনো সশরীরের ক্লাসের সাথে তুলনীয় হতে পারে না। উচ্চমূল্যের ডেটা কিনতে গিয়ে ধনী- দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে দৃশ্যমান হচ্ছে আর্থসামাজিক বৈষম্য। আছে ডেটা স্পিডেরও বৈষম্য। সিম কোম্পানিগুলো মুখরোচক বিজ্ঞাপন দিলেও গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সাথে ঘটছে অন্য কিছু। হার হামেশা গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা জুমে এ্যাপে ঠিকমতো ক্লাসে জয়েন দিতেও পারে না কখনো কখনো। অনলাইন সহজলভ্য হওয়ায় সম্প্রতি পাজবি, টিকটকে অযথা সময় নষ্ট করতে শুরু করে হাজারো তরুণ। দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এসব খবর। 

করোনার মধ্যে কওমী কিংবা হাফেজি হোস্টেল কিংবা হলসহ মাদরাসাগুলো খোলা ছিলো বেশ কয়েকমাস। তখন প্রতিটি মাদরাসার বারান্দা লাশের স্তুপে ভরে যাবে বলেছেন অনেকে। অথচ করোনায় মাদরাসা শিক্ষার্থীদের মৃত্যু সংখ্যা ছিলো যথাযথ শূন্য। তখনকার করোনায় আক্রান্তের হার এখনকার চেয়ে কমও ছিলো না। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সচেতনার প্রশ্নে একজন সাধারণ যেকারোর চাইতে শিক্ষার্থী তুলনামূলক বেশি এগিয়ে৷ 

গতো ২৪ মে থেকে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন, মানববন্ধন করেছে সারাদেশে। এরপর সর্বপ্রথম হাবিপ্রবি এবং এরপর কুবিসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দেয়। 

করোনায় ছেয়ে গেছে গোটা বিশ্ব। বিপর্যস্ত হয়েছে অর্থনীতি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। রেহাই পায়নি শিক্ষাব্যবস্থাও। ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো। করোনা মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষস্থান এবং বৈশ্বিকভাবে ২০তম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াবে এমনটা প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের। 

লেখক: যোবায়ের ইবনে আলী, 
শিক্ষার্থী, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর। 

আমারসংবাদ/কেএস