Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

সমাজসেবায় সরকারের সাফল্যের একযুগ 

আজিজুল হক রতন সরকার: 

জানুয়ারি ৩, ২০২২, ০৫:২৫ পিএম


সমাজসেবায় সরকারের সাফল্যের একযুগ 
  • জিটুপি পদ্ধতিতে সেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে  
  • বয়স্ক ভাতা প্রদানে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে 
  • ১২ বছরে প্রতিবন্ধী ভাতা বৃদ্ধি পেয়েছে ২৭ গুন

সরকারের নানামুখী উন্নয়নের পাশাপাশি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সহজেই সেবা পৌঁছে দিতে সরকারের
সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে চালু করা হয়েছে ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম। ফলে পূর্বের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম সময়ে হাতের নাগালেই সেবা গ্রহণ করতে পারছেন সকলে। মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং উন্নত সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনসচেতনা বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষ করে সামাজিক নিরাপত্তা ১ এবং ২ -এর আওতায় বয়স্ক ভাতা প্রদান, বিধবা ভাতা, বেদে জনগোষ্ঠীর 
জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি, হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি, ক্যান্সার, কিডনী, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ এবং থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের আর্থিক সহায়তা, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলোর অন্যতম। 

দারিদ্র বিমোচনের আওতায় পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম, পল্লী মাতৃকেন্দ্র, শহর সমাজসেবা (ইউসিডি) কার্যক্রম, দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন ও আশ্রয়ন সেবা ও কমিউনিটি ক্ষমতায়নের আওতায় হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রম, ঢাকা মহানগরী/জেলা পর্যায়ে হাসপাতাল সমাজসেবা, সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত সমাপ্ত প্রকল্পের আওতায় ৩৭টি হাসপাতাল/সংস্থা থেকে ৩০% গরীব রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানসহ নানাবিধ সেবাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া শিশু সুরক্ষা, পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধ নিয়ে একাধিক ক্ষেত্রে সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে। 

তবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের এ সকল উন্নয়ন ও সেবাদানের মাঝে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং বিধবা ভাতা সরকারের একটি সাহসী পদক্ষেপ। 

পরিসংখ্যান বলছে, গত ১২ বছরে বয়স্ক ভাতা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪.৯ গুন। যেখানে এ খাতে ২০০৮-২০০৯ সালে বাজেটের পরিমাণ ছিলো ৬০০ কোটি টাকা সেখানে ২০২০-২০২১ সালে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে 
দাঁড়ায় ২ হাজার ৯৪০ কোটি টাকায়। নিয়মিতভাবে প্রায় ৪৯ লক্ষ জনকে এ সেবার আওতায় আনা হয়েছে। শেখ হাসিনার মমতা, বয়স্কদের জন্য নিয়মিত ভাতা স্লোগানকে সামনে রেখে সেবা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে বিধবা এবং স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা পাচ্ছেন ২০ লক্ষ ৫০ হাজার জন। এ খাতে গত ১২ বছরে বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে ৪.৫৫ গুন। ২০০৮-২০০৯ বছরে ২৭০
কোটি টাকা বাজেট বরাদ্ধ থাকলেও ২০২০-২০২১ সাথে তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকায়। এছাড়া নিয়মিত প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করা হচ্ছে প্রায় ১৮ লক্ষ জনকে। গত ১২ বছরে প্রতিবন্ধী 
ভাতা বৃদ্ধি পেয়েছে ২৭ গুন। ২০০৮-২০০৯ সালে বাজেটের পরিমাণ ৬০ কোটি থাকা থাকলেও ২০২০-২০২১ সালে টার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। 

সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় শুধুমাত্র সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকেই ভাতা ও বৃত্তি পাবেন ১ কোটি ৪ লক্ষ ৪৭ হাজার ৯ শত জন মানুষ। জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা বয়স্কভাতা পাবেন ৫৭ লক্ষ ১ হাজার জন ও বিধবা স্বামী নিগৃহীতা ভাতা পাবেন ২৪.৭৫ লক্ষ জন। জনপ্রতি মাসিক ৭৫০ টাকা হারে প্রতিবন্ধী ভাতা পাবেন ২০.০৮ লক্ষ জন। 
১ লক্ষ প্রতিবন্ধীশিশু জনপ্রতি মাসিক ৭৫০-১৩০০ টাকা হারে পাবেন শিক্ষাউপবৃত্তি।

২০২০-২১ অর্থবছর থেকে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস “নগদ” -এর মাধ্যমে ৩৯টি জেলা এবং “বিকাশ” -এর মাধ্যমে ২৩টি জেলার বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহিতা মহিলা ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা জিটুপি পদ্ধতিতে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

গত ১৪ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জিটুপি পদ্ধতিতে মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস নগদ ও বিকাশ এর মাধ্যমে ভাতা বিতরণ কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন করেন।

মাসিক ২ হাজার টাকা হারে বেসরকারি এতিমখানাতে প্রতিপালিত ১.০৬ লক্ষ এতিম শিশু পাবে ক্যাপিট্যাশনগ্রান্ট। ৫০ হাজার বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের ৫০০ টাকা হারে দেয়া হবে 
বিশেষ ভাতা। ৫০০ টাকা হারে ভাতা পাবেন ২৬০০ হিজড়া। ২৫ হাজার ৯০০ বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও ১ হাজার ২৪৭ জন হিজড়া শিশু পাবেন বিশেষ উপবৃত্তি।

আমারসংবাদ/এমএস