মে ২০, ২০২২, ০৮:৩৯ পিএম
ধান কাটার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছেনা বিষয়টা উন্নয়নের ছোয়ার একটা দিক, মানুষের আয় বেড়েছে তাই হয়তো এই কাজ করতে চাচ্ছেনা।
কিন্তু এটার আরেকটি বিষয় আছে যা আমার কাছে খুব এলার্মিং বলে মনে হয়েছে যার ফলে কয়েকবছর পর এর প্রভাব সরাসরি আমাদের গর্বের জায়গা কৃষি খাতে পড়তে পারে। সেটা হচ্ছে কৃষিতে অনীহা।
কৃষি আমাদের খুব গর্বের ক্ষেত্র, বিভিন্ন ফসলাদি উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঠিক দিকনির্দেশনায় এগিয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। হটাৎ আমাদের শ্রমিক সংকট দেখা দিচ্ছে।
ধান কাটার জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিক না পাওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় কৃষকরা সঠিক সময়ে ধান কাটতে পারছে যা তাদের ক্ষতির মুখে ফেলতে আর বর্তমান ঝড় বৃষ্টির সময়ে যা তাদের ক্ষতির পরিমান আরো বাড়িয়ে দিবে বলে মনে হচ্ছে।
সঠিক সময়ে শ্রমিক অভাবের ফলে কৃষকের ধান তোলতে যেমন সমস্যা হবে তেমনি এটা দীর্ঘমেয়াদী একটা সমস্যা তৈরি করতে পারে সেটা হচ্ছে, কৃষিতে কৃষকের অনীহা । স্বভাবতই যখন শ্রমিক কম পাওয়া যাবে তখন ধান কাটার জন্য শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বেড়ে যাবে পাশাপাশি সঠিক সময়ে ধান কাটার বিষয়ে অনিশ্চয়তাতো আছেই।
দিনদিন কৃষির সাথে জড়িত জিনিসগুলোর দাম যে হারে বাড়তেছে সে হারে কিন্তু ধানের বাড়তেছে না কিন্তু চালের দাম হু হু করে বেড়েই চলছে। এতে করে লাভবান হচ্ছে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা আর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষকরা। আর এই বিষয়গুলোর ফলে কৃষিতে অনীহা তৈরি হতে পারে। তাই শ্রমিক কমে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবিলার জন্য ডিজিটাল যন্ত্রপাতির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য একদম রুট লেভেল থেকে কাজ করতে হবে।
এখন আসি শ্রমিক কমে যাওয়ার কারন এবং নতুন করে ধান কাটার শ্রমিক তৈরি না হওয়ার কারন। আমার কাছে এর কারন হিসেবে দুটি বিষয় মনে হয়েছে, একটি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান বা অন্যান্য কাজের প্রতি আগ্রহ,যার ফলে মানুষের শহরমুখি হচ্ছে এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে সামাজিক স্বীকৃতি।
নতুন/অন্যান্য কাজের প্রতি আগ্রহ/ মানুষের শহরমুখি হওয়াঃ একটি উদাহরণ দিয়ে বলে ধরুন আপনি একটি গ্লাসে পানি প্রাণ করলেন এখন যদি অন্যজনকে পানি দিতে হয় তাহলে তো আপনাকে গ্লাসে নতুন করে পানি ঢালতে হবে তারপরেই তো পানি দিতে পারবেন। এখন সমস্যাটা হচ্ছে নতুন করে গ্লাসে পানি ঢালার লোক পাওয়া যাচ্ছেনা। এতে করেই সংকটের তৈরি হচ্ছে। একটা জেনারেশন এর পর এখন নতুন করে মানুষ এই কাজে নিজেদের লিপ্ত করতে চাচ্ছেনা এর থেকে কম টাকা পেলেও অন্যান্য কাজের দিকে আগ্রহী হচ্ছে এবং এর ফলে বেশিরভাগ মানুষ শহরমুখি হচ্ছে।
সামাজিক স্বীকৃতিঃ শ্রমিকরা যে আমাদের অনেক জন্য বড় একটা সম্পদ এবং তারা যে অনেক সম্মানের দাবীদার সেটা সমাজের বড় একটা অংশ বুঝতেই চায়না যার ফলে বিভিন্ন সময়েই তাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কথাবার্তা বলে। যা অনেকের আবার রোগে পরিণত হয়েছে। সঠিক সম্মানের অভাবে নতুরা নিজেদের এই কাজে লিপ্ত করতে চাচ্ছেনা।
এই সমস্যার সমধান হিসেবে আমার ছোট মাথায় যা আসে, তা হচ্ছে দুইটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিলেই এর সমাধান হতে পারে। প্রথমত শ্রমিকদের সামাজিকভাবে সঠিক সম্মান প্রদান। এতে করে বর্তমান শ্রমিকদের যেমন কাজের প্রতি ভালবাসা বাড়বে পাশাপাশি নতুনদের এই কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে। দ্বিতীয়ত ডিজিটাল যন্ত্রপাতির সঠিক ব্যবহার একদম রুট লেভেল থেকে।
নাজমুল হাসান
শিক্ষার্থীঃ
ইংরেজী বিভাগ, ঢাকা কলেজ