Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

দেশ বাঁচাতে আওয়ামী লীগের নয়া পদক্ষেপ

মার্চ ১০, ২০১৫, ১০:৪৭ এএম


দেশ বাঁচাতে আওয়ামী লীগের নয়া পদক্ষেপ

 


দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীসহ সারাদেশে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের কর্মসূচি টানা অবরোধ-হরতাল চলছে। থেমে নেই নাশকতা, থেমে নেই পেট্রল বোমা ছুঁড়ে গাড়ি পোড়ানো, থেমে নেই মানুষ হত্যা। এমন অবস্থায় প্রশাসন সার্বক্ষনিক সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। প্রতিদিনই বোমা হামলাকারীরা ধরা পড়ছে পুলিশ ও সাধারণ জনগণের কাছে। এদিকে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের ঘটানো নাশকতা ঠেকাতে, দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে এবং দলকে চাঙ্গা করতে হাতে নিয়েছে বেশ কিছু নয়া পদক্ষেপ।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে রাজনৈতিক সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় করা প্রায় ১০০ মামলা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নেওয়ার পূর্বানুমোদন দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার সূত্র জানায়, এসব মামলায় আসামি এক হাজারের বেশি। আসামিদের বেশির ভাগই বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী।

এ ছাড়া চলমান সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনার সব মামলাও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিতে অনুমোদন দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ আইনে নাশকতার জন্য অর্থের জোগানদাতাদেরও বিচার করা যাবে। এ অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই আমরা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা নেওয়ার অনুমোদন দিচ্ছি। এ আইনে মামলা নেওয়ার উদ্দেশ্য হলো আসামিরা যাতে জামিন না পায় এবং ৬০ দিনের মধ্যেই বিচার শেষ হয়। সম্প্রতি যেসব নাশকতার ঘটনা ঘটছে, এর অধিকাংশই এ আইনে নিতে বলা হয়েেেছ।’

 স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেওয়া মামলাগুলোর প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়কে কেন্দ্র করে সহিংসতা, অন্যান্য সহিংসতা, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর, জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, বিএনপি ও জামাযাত-সমর্থিত ব্যক্তিদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, পেট্রলবোমা তৈরি ইত্যাদি ঘটনায় নোয়াখালী, কুমিল্লা, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চাঁদপুর, নীলফামারীসহ বিভিন্ন জেলায় এসব মামলা হয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, গত এক বছর পুলিশ এ আইনে মামলা নিতে আগ্রহী ছিল না। তবে চলমান সহিংসতার কারণে বিষযটি নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনার পর এ আইনে মামলার অনুমোদন দেওয়া শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মতে, সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) আইন, ২০১৩-তে এ আইনে মামলার জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতির বিষয়টি (৪০ ধারা) বাদ দেওয়ায় পুলিশ সহজে এ মামলা করতে পারবে। এর ফলে নিরীহ মানুষও হয়রানির শিকার হতে পারেন।

অন্যদিকে, বিএনপি’র ‘সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, পেট্রল বোমা, নাশকতা ও দানবীয় হত্যার’ প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট তাদের পূর্বঘোষিত পদযাত্রা ও জনসভার রুট শুরু করেছে। ৪টি পৃথক টিমে বিভক্ত হয়ে ১৪ দলের নেতারা এই কর্মসূচি পালন করছে। ৯, ১০ ও ১১ মার্চ ক্রমান্নয়ে দেশের ১২টি জেলায় এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এই পদযাত্রা ও জনসভা কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার আওয়ামী লীগ, স্থানীয় ১৪ দলসহ সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এরই পথ ধরে পদযাত্রা শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ১৪ দল ঘোষিত উত্তরবঙ্গ অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসুচির অংশ হিসেবে মন্ত্রী নাসিম গতকাল সিরাজগঞ্জের দুটি পৃথক জনসভায় অংশ নেন। এ জনসভায় তিনি বলেন, ‘সরকার কোন ধরনের হুমকি-ধামকিতে ভীত নয়। দেশে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের সুবাতাস বইছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংসের জন্য বিএনপি-জামায়াতের মদদে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে পেট্রল বোমা, ককটেল মেরে সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে খুন করা হচ্ছে। মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে আজ বগুড়া ও আগামিকাল গাইবান্ধায় জনসভা হবার কথা রয়েছে। এই টিমে অন্যদের মধ্যে থাকবেন ডা. দীপু মনি, খালিদ মাহমুদ চৈৗধুরী, এ. এইচ. এম খায়রুজ্জামান লিটন, প্রমুখ। রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন টিমের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন।
 
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ও শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নেতৃত্বে দ্বিতীয় টিম গতকাল গাজীপুরে জনসভা করেছে। এদিকে আজ মঙ্গলবার মানিকগঞ্জে ও আগামীকাল বুধবার মুন্সীগঞ্জে জনসভা করার কথা রয়েছে। অন্যদের মধ্যে থাকছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, প্রমুখ। সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।

সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে তিন নম্বর টিম গতকাল জনসভা করেছে চট্টগ্রামে। আজ নোয়াখালী ও আগামীকাল ফেনীতে জনসভা করার কথা রয়েছে। এজনসভায় থাকছেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, ড. হাছান মাহমুদ, র. আ. ম ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী প্রমুখ। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর থাকবেন এ টিমের সমন্বয়কের দায়িত্বে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফের নেতৃত্বাধীন ৪ নং টিমটি গতকাল কুষ্টিয়ায় জনসভা করেছে। আজ ঝিনাইদহে ও আগামীকাল যশোর জনসভা হবার কথা রয়েছে। এ টিমে আরও আছেন হাবিবুর রহমান সিরাজ, বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র বোস, প্রমুখ। আওয়ামী সাংগঠনিক সম্পাদক বি. এম মোজাম্মেল হক এ টিমের সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকবেন।

এসকল জনসভা দেবার বিষয়ে একাধিক আওয়ামী নেতৃস্থানীয় নেতাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, বর্তমানে সন্ত্রসীদের কর্মকান্ড থেকে দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য আমরা এই জনসভার আয়োজন করেছি। খালেদার হিংস্র রুপ দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাই। দেশের মানুষ যাতে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারে।