Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

সরকার বীভৎস প্রতিহিংসায় মেতে উঠেছে

ডিসেম্বর ২৬, ২০১৪, ০৬:২৪ এএম


সরকার বীভৎস প্রতিহিংসায় মেতে উঠেছে

   বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার এখন শেষ মরণকামড় দেয়ার জন্য বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার এবং বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, বাসায় তল্লাশির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব (দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, ক্ষমতা জবরদখলকারী এই অবৈধ সরকার কোনোভাবেই জনগণকে কাছে টানতে না পেরে বীভৎস প্রতিহিংসায় মেতে উঠেছে। সেই প্রতিহিংসার সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ ঘটলো বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও গতকাল রাতে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের বাসায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশিকে এই অবৈধ সরকারের দুর্বৃত্তায়িত চরিত্রেরই পুনরাবৃত্তি বলে বিএনপি চেয়ারপারসন উল্লেখ করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন ‘এই অবৈধ সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে, জাতীয় সংসদ দখল করে, জনগণের নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করে মনে করেছিল চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতার রাজদ- ধরে রাখবে। আর এজন্য তারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নিজেদের অঙ্গ সংগঠনগুলোকে দুর্বৃত্ত বাহিনীতে পরিণত করেছে। তাদেরকে সর্বনাশা আশকারা দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলকে দমনে ব্যবহার করে যাচ্ছে। বিরোধী দলকে পর্যুদস্ত করার জন্য রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও অবৈধ আওয়ামী সরকারের প্রিয়জনদের দিয়ে সাজিয়ে সবধরনের হিংসাত্মক অপতৎপরতা চলমান রাখা হয়েছে। আর সেজন্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা আর নির্বিচারে গ্রেফতার করতে এই অবৈধ আওয়ামী সরকারের জনপ্রশাসন অত্যন্ত পারঙ্গম। কিন্তু তারা বাংলাদেশের জনগণকে স্বস্তি ও নিরাপত্তা দিতে পারেনা। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এখন ভয়াবহ সংকটের মুখে। সাজানো প্রশাসন ও দুস্কৃতকারী যুবলীগ-ছাত্রলীগের পা-াদের দিয়েই এই ভোটারবিহীন সরকার গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যার পথ ধরে জনগণের প্রতিবাদী কণ্ঠ থামাতে অপচেষ্টা করা, বিরুদ্ধ মত পেশের কোনো জায়গা না রাখা এবং রাজনৈতিক বন্দীদের ওপর অত্যাচার ও জুলুম অব্যাহত রেখেছে। আর এভাবে নিজেদের মসনদ গায়ের জোরে ধরে রাখতে তারা মূলত দেশের জনগণকেই পরাধীন করে রেখেছে।

খালেদা জিয়া বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর  আমার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে বকশীবাজার এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী সশস্ত্র পা-ারা যেভাবে পৈশাচিক হামলা করে তাতে মনে হয় এই অবৈধ সরকার এক বর্বর হিংসাযুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আর এই যুদ্ধে তারা মূলত জনগণকেই প্রতিপক্ষ বানিয়েছে। সব দেখে শুনে মনে হয় এই সন্ত্রাস-দুঃশাসনের প্রধান মুখপাত্র হচ্ছেন স্বয়ং বর্তমান অবৈধ সরকারের প্রধান। তার কাছে অহম ও ক্ষমতালিপ্সা বাংলাদেশের চেয়েও প্রিয়।’

বিএনপি চেয়ারপারসন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, একদলীয় অপশাসনের শৃঙ্খলে গোটা দেশকেই বন্দীশালায় পরিণত করা হয়েছে। উদ্বেল মিছিলে মিছিলে সংগ্রামী জনগণ এখন শৃঙ্খল ভেঙ্গে এই অবৈধ ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতাবিলাসের যবনিকাপাত ঘটাতে ধেয়ে আসছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। একইসঙ্গে বকশীবাজার এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পরিকল্পিত আক্রমণের পরও জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উল্টো বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যথাক্রমে আবদুল আউয়াল মিন্টু, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আজিজুল বারী হেলাল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান ও ইসাহাক সরকারসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।