Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

‘যারা জান্তাদের তোষামোদী, তারাই ৭ই মার্চের ভাষণে কিছু পায় না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ৮, ২০২১, ০৩:২৫ পিএম


‘যারা জান্তাদের তোষামোদী, তারাই ৭ই মার্চের ভাষণে কিছু পায় না’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির যেসব নেতা জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা পান না, তারা পাকিস্তানি সামরিক জান্তার ‘পদলেহনকারী, খোশামোদী তোষামোদী’।

সোমবার (৮ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের ৫০ বছর পূর্তিতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তৃতায় একথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা এই ভাষণটাকে ছোট করতে চায় বা এই ভাষণটাকে নিয়ে..আমি শুনলাম আমাদের বিএনপির কয়েকজন নেতা এর মধ্যে আছে, যারা হয়ত এক সময় ছাত্রলীগ করেছিল, পরে আবার ছেড়ে চলেও গিয়েছিল, তারা নাকি এই ভাষণে স্বাধীনতার কোনো ঘোষণাই পায় নাই। এরা পাবে না। কারণ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীও পায়নি। তারা অনেক খুঁজেছে। আমার মনে হচ্ছে, এরা যেন সেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদেরই পদলেহনকারী, খোশামোদী, তোষামোদীর দল। কাজেই তারাই যা বোঝে, এরা তাই বোঝে। কিন্তু বাঙালি যা বোঝে, এরা তা বোঝে না। বাংলাদেশের মানুষ যা বোঝে, এরা তা বোঝে না।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সেই ভাষণের দিনটির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানি শাসকদের একটা পরিকল্পনা ছিল। খুব সাজসাজ রব নিয়ে সাঁজোয়া বাহিনী বসে ছিল, সেখানে হেলিকপ্টার, প্লেন রেডি ছিল যে বঙ্গবন্ধু কী ভাষণটা দেন এবং তার উপর তারা মাঠে যারা আছে সবাইকেই উপর থেকে বোম্বিং করে হত্যা করবে। এটা পাকিস্তানি যারা তখন অপারেশন চালাচ্ছিল, তাদের লেখা বইতেও কিন্তু প্রকাশ পায়।

ওই পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর কৌশলী হওয়ার বিষয়টি তুলে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তো ‘পোয়েট অফ পলিটিক্স’। তিনি জানতেন যে মানুষের কাছে কথাটা কী ভাষায় বললে সাধারণ মানুষ কথাটা বুঝে নেবে, কিন্তু শত্রুদের বুঝতে সময় লাগবে। যে কোনো একটা যুদ্ধে রণকৌশলটা হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই রণকৌশলের মধ্য দিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে আনা এটাই হচ্ছে সেই যুদ্ধে যিনি নেতৃত্ব দেন তার সব থেকে বড় কৃতিত্ব। আর সেটাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব করেছিলেন।

এই ‘না বোঝাদের’ দলে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খানও ছিলেন, বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ শোনার পর দেশের মানুষ খুশি হয়ে আনন্দে ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ স্লোগান দিতে দিতে বাড়ি ফিরছিল এবং তখন ফুলার রোডে তাকে থামিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে স্লোগানও ধরিয়েছিল।

সেদিন ঘরে ফিরে কয়েকজন ছাত্রনেতাকে দেখার স্মৃতি স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেখানে সিরাজুল আলম খান তখন বঙ্গবন্ধুকে বলছেন, ‘লিডার আপনি কী বললেন? সব মানুষ হতাশ হয়ে চলে যাচ্ছে’। বলার সাথে সাথে আমি বললাম, আপনারা এই রকম মিথ্যা কথা বলছেন কেন? আমি তাকে নিজেই বললাম, আপনি এত মিথ্যা কথা বলেন কেন? আপনারা তো মাঠ থেকে অনেক আগেই চলে এসেছেন। আপনারা তো মাঠের অবস্থা তাহলে জানেন না।

গণভবনে থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রান্তে অনুষ্ঠানে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মাহবুব উল আলম হানিফ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মেরিনা জাহান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকও সভায় বক্তব্য রাখেন।

আমারসংবাদ/জেআই