Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তুলে দিলে নাস্তিকরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ৯, ২০২১, ০৫:৩০ পিএম


‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তুলে দিলে নাস্তিকরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে’

বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ নেতারা বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষাপট ছিলো ব্লগার নাস্তিকদের মুক্তমনা, বিজ্ঞানমনস্ক লেখক নামে ইসলামবিদ্বেষী লেখা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী লেখা বন্ধ করা। কিন্তু এখন আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তুলে দিলে নাস্তিক ব্লগাররা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।

মঙ্গলবার (৯ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সমমাননা সরকারের পক্ষে ১৩টি দল এসব কথা বলেন।

এছাড়াও মানববন্ধনে পবিত্র শবে মিরাজের দিন সারাদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি আসন্ন রমজান মাসে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবি করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষাপট ছিলো ব্লগার নাস্তিকদের মুক্তমনা, বিজ্ঞানমনস্ক লেখক নামে ইসলামবিদ্বেষী লেখা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী লেখা বন্ধ করা। ইসলামবিদ্বেষী ও ইসলামের উপর মিথ্যারোপকারী নাস্তিকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া। কিন্তু এখন আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তুলে দিলে নাস্তিক ব্লগাররা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। যা এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী ধর্মপ্রাণ মুসলমান বরদাশত করবেনা। তাই ধর্মপ্রাণ দেশবাসী মুসলমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রক্ষার পক্ষে। যা সরকারকে একান্তভাবে মনে রাখতে হবে।

তারা বলেন, জামাত শিবির ও তাদের সহযাগী ইসলামের নাম ফেরীকারী ধর্মব্যবসায়ী রাজনীতিকরা চাচ্ছে যাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন উঠে যায়। আর এ সুযোগে ইসলামবিদ্বেষী লেখা পুন: ব্যাপক প্রচারণা পায়। আর তাতে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী ধর্মপ্রাণ মুসলমান ক্ষেপে উঠবে এবং সাধারণ মুসলমানদের সে ক্ষোভকে জামাত বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করে তাদের দুরভিসন্ধি বাস্তবায়ন করতে পারে। এ ফাদে পা না দেয়ার জন্য আমরা সরকারকে সতর্ক করছি।

তারা আরও বলেন, ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদ প্রচারে শীর্ষস্থানীয় সামহোয়্যার ইন ব্লগ, আমার ব্লগ, মুক্তমনা ব্লগ, নাগরিক ব্লগ, ধর্মকারী ব্লগ, নবযুগ ব্লগ, সচলায়তন ব্লগ, অগ্নিসেতু ব্লগ ইত্যাদি নামের ব্লগগুলো অনবরত দেশী-বিদেশী এনজিওগুলোর মদদে সম্মানিত ও পবিত্র ধর্ম দ্বীন ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়ে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিরোধীদের উসকে দিচ্ছে। এদের অশুভ অপতৎপরতা রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অক্ষুন্ন রাখতে হবে ও এদেরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনতে হবে।

সমাবেশে ওলামা লীগের নেতারা বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের ২ (ক) ধারায় বর্ণিত হয়েছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। আর দ্বীন ইসলামের মূল ভিত্তি নামাজ। নামাজ মুসলমান আর অমুসলমানদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল। নামাজ বেহেশতের চাবি। আর মুসলমান পবিত্র নামাজের হাদিয়া লাভ করেছেন পবিত্র শবে মিরাজের উছিলায়। তাই পবিত্র শবে মিরাজ মুসলমানদের কাছে ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ। কাজেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের এদেশে শবে মিরাজকে অবশ্যই গুরুত্ব দেয়া উচিত। যথাযোগ্য রাষ্ট্রীয় ভাবমর্যাদায় পালনসহ এদিন সাধারণ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা উচিত। যা এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী গভীরভাবে প্রত্যাশা করে। এ দাবি পূরণ করলে ধর্মপ্রাণ মুসলমান সরকারকে আরও ইসলামবান্ধব বলে মনে করবে।

বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১ বছর বন্ধ রেখে পবিত্র রমাদ্বান শরীফফে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তকে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ইসলামবৈরী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছে। রমজানের ভেতর ক্লাস চলা উচিত নয় বলে জানিয়েছে দেশের প্রায় ৮৭% মানুষ। গত বুধবার (৩মার্চ) থেকে শুরু করে গত শনিবার (৬মার্চ) পর্যন্ত চলা সময় অনলাইনের এক জরীপে এ তথ্য উঠে এসেছে।পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ (পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপলক্ষ্যে সরকার যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পাতাকা উত্তোলনের যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান গভীরভাবে আবেগে আপ্লুত হয়েছে এবং সরকারকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে অনবদ্য অভিনন্দন ও দোয়া জানাচ্ছে।

তারা বলেন, রোজায় সব নিয়মই লঘু করে দেয়া হয়। অফিস আদালতের সময় কমিয়ে দেয়া হয়। সেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর পুরো নিয়ম জারি করে দেয়া তাদের প্রতি বৈষম্য ও বাড়তি চাপ তৈরীর শামিল । এতে করে অনেকেই রোজা পালনে নিরুৎসাহিত হবে এবং যারা রোজা রাখবে তাদের অতি বেশি কষ্ট পোহাতে হবে। অথচ হাদীছ শরীফে রোজার সময় শ্রমকে কমিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।পবিত্র কুরআন সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন পাশ হবেনা এ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। সুতরাং সরকার রোজায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখবে এটাই ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান আশা করে।

মানববন্ধনে সংগঠনটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী সভাপতিত্ব করেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সাধারণ সম্পাদক কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার ও মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী প্রমুখ। এ সময় সংগঠনটির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

আমারসংবাদ/জেআই