Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

মারা গেছেন বিএনপি নেতা মওদুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ১৬, ২০২১, ০১:১০ পিএম


মারা গেছেন বিএনপি নেতা মওদুদ

দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রাজিউন)। 

মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা ছয়টায় সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টি আমার সংবাদকে নিশ্চিত করেছেন। 

রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার ফলে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর মওদুদ আহমদকে রাজধানীর এভারকেয়ার (সাবেক এপোলো) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। সেখানে তাঁর হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়।

এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে মওদুদ আহমদকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। পরদিন ভোরে তাঁকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী হাসনা মওদুদ।

 বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। সাবেক সাংসদ ও অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ২৪ মে ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমদ চতুর্থ।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান পাশ করে বৃটেনের লন্ডনস্থ লিঙ্কন্স ইন থেকে ব্যারিস্টার-এ্যাট-ল' ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে পড়াশুনা করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি ব্লান্ড ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলনে। 

১৯৭৭-৭৯ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। 

১৯৮১ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমান নিহত হন এবং এক বছরের ভেতর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৮৫ এর নির্বাচনে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬ এ তাকে আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। 

১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপ-রাষ্ট্রপতি করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। 

জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ সালে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। 

২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাঁচবার মওদুদ আহমেদ নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন।
 
জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলে মওদুদ আহমেদ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। এইগুলো হলো-

*শিল্প মন্ত্রণালয়
*পরিকল্পনা, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়
*বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়
*পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়
*বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়
*যোগাযোগ ও রেলযোগাযোগ মন্ত্রণালয়
*সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রণালয়
*টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন মন্ত্রণালয়
*অষ্টম জাতীয় সংসদে মওদুদ আহমেদ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

এদিকে, মন্ত্রীত্ব ছাড়াও মওদুদ আহমেদ জিয়াউর রহমানকে বিএনপি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন। এই দলের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এরশাদের জাতীয় পার্টির সংগঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। 

আমারসংবাদ/এআই