Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

‘লিখিত অভিযোগ পেলে সোনাগাজীর কমিটি ভেঙে দেবো’ 

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ২৬, ২০২১, ০৩:০০ পিএম


‘লিখিত অভিযোগ পেলে সোনাগাজীর কমিটি ভেঙে দেবো’ 

অছাত্র ও প্রবাসীদের নিয়ে ফেনী সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নজর এসেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের। 

সংগঠনটির নীতি নির্ধারণী ফোরাম জানিয়েছেন, গঠিত কমিটির আহ্বায়ক বা অন্য কোনো সদস্যর বিষয়ে উল্লেখযোগ্য আপত্তি নিয়ে লিখিত অভিযোগ থাকলে আমরা এই কমিটি ভেঙে দেবো। এরপর আমরা সেখানে স্বচ্ছতার সঙ্গে ফের নতুন কমিটি দেবো। 

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক সোহেল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সোনাগাজী উপজেলায় ২১ সদস্যের অনুমোদিত কমিটিতে মো. মাঈনুল হককে আহ্বায়ক ও নুরুল আলম সোহাগকে সদস্য সচিব ঘোষণা করা হয়। 

অভিযোগ উঠেছে, আহবায়ক মো. মাঈনুল, ২০১০ সালে দেশের বাইরে চলে যায়। দীর্ঘ প্রবাস জীবনের পর ২০১৫ সালে ফের দেশে ফিরে আসে। রাজনীতির সঙ্গে ছিলো না সম্পৃক্ত। রয়েছে ছাত্রত্ব নিয়েও প্রশ্ন। দেশে ফেরার পর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে কিছু সময়। এরপর গায়েবীভাবে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক পদ পায়। 

এছাড়া আরো অভিযোগ রয়েছে, মো. মাঈনুল জীবনে কখন ছাত্র রাজনীতিই করে নাই, ছাত্রদলের সাবেক উপজেলা কমিটিসহ অন্য কোন কমিটির সঙ্গেও জড়িত ছিলো না। কমিটির যুগ্ম আহবায়ক তানবির হাসান রিমন বিদেশ থাকে। তার পদ পাওয়া নিয়েও রহস্য তৈরী হয়েছে। আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার জাহান পারভেজ কমিটি ঘোষণার আগে কখনো বিএনপির আদর্শের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলো এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না বলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন। 

অনেকে বলছেন, তাকে দলের কেউ চিনেও না। সদস্য পাওয়া সাইফুল ইসলাম ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণের বেশ কয়েকটি ছবি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি স্থানিয়সহ কেন্দ্রীয় নেতাদেরও নজরে এসেছে। এছাড়া সদস্য সচিব নুরুল আলম সোহাগ তার ফেইসবুক আইডিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়েও আদর্শ নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছেন। তারেক রহমানের বক্তব্যকে ব্যঙ্গ করে পোস্ট করারও তথ্য রয়েছে স্থানীয় ছাত্রদলের কাছে। 

ঘোষিত কমিটির তিন সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, দীর্ঘদিন ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন তারা। কিন্তু যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে তিনি কখনও ছাত্রদল করেননি এবং উপজেলা ছাত্রদলের কোন পদ-পদবিতেও ছিলেন না। ত্যাগীদের বাদ দিয়ে তাকে আহ্বায়ক করায় নেতা-কর্মীরা হতাশ সবাই। তার সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করা এবং দুঃসময়ে দলের আদর্শ বাস্তবায়িত হওয়া নিয়েও শঙ্কা তৈরী হয়েছে।  

এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি, চিটাগাং বিভাগের টিম প্রধান মোসাব্বের সাফির কাছে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমার সংবাদকে বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে অভিযোগ শুনেছি তা কেন্দ্রীয় সুপার ফাইভকে অবগত করা হয়েছে। এরমধ্যে একটা বড় অভিযোগ ছিলো- আহবায়ক মো. মাঈনুল স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছে, তিনি ওই কমিটিতে নেই। তিনি প্রবাসী ছিলেন শোনার পর আমরা তার পাসপোর্ট কপি ছেয়েছি, এরপরও স্থানীয় রাজনীতিবিধরা বলেছেন, আহবায়ক মো. মাঈনুল বিএনপি আদর্শের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। 

এ কমিটির কাদের হাত ধরে হয়েছে জানতে চাইলে মোসাব্বের সাফি বলেন, আসলে এটি মূলত স্থানীয় জেলা ছাত্রদলের নাম প্রস্তাবেই হয়েছে। জেলা ছাত্রদল আমাদের যে তালিকা দিয়েছে সেই আলোকেই আমরা বিষয়টি বিবেচনা করেছি। এরপর আমরা ঘোষণা দিচ্ছি, অছাত্র, প্রবাসী কিংবা ঘোষিত কমিটির সিংহভাগ যদি আমাদের কাছে আহ্বায়ক বা অন্য কোনো সদস্যর বিষয়ে আপত্তি নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন আমরা এই কমিটি ভেঙে দেবো। আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে সেখানে নতুন কমিটি দেবো। কিছু অভিযোগ শুনেছি আমরা লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় পদক্ষেপ নিতে পারিনি। 

নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক মো. মাঈনুল হক বলেন, আমাকে নিয়ে একটি মহল অযথা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি বিষয়টি রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছি। 

আমারসংবাদ/কেএস