Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

তড়িঘড়ি স্টেজ ভেঙে পালালেন প্রজন্মলীগের নেতারা 

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১, ১০:০০ এএম


তড়িঘড়ি স্টেজ ভেঙে পালালেন প্রজন্মলীগের নেতারা 

আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের নামে গড়ে উঠা ভুঁইফোড় সংগঠনের দৌরাত্ম্য নিয়ে আলোচনা চলছে বেশ কিছু দিন। কয়েকটি সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও থামছে আওয়ামী লীগের নামসর্বস্ব ভুঁইফোড়দের তৎপরতা। তুমুল আলোচনার মধ্যেই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবাষির্কী পালনের আয়োজন করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটির ১৪তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী ঘিরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যলায়ের আশপাশে ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতি এবং টুঙ্গিপাড়ায় সমাধি শ্রদ্ধা জানায় সংগঠনটির নেতারা। এরপর গুলিস্থানে বের করা হয় র‌্যালি। র‌্যালি শেষে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যলায়ের সামনে তৈরি করা বিশাল মঞ্চে আলোচনা সভার প্রস্তুতি চলছিল।  

ঠিক একই সময় কেন্দ্রীয় কার্যলায়ে দলের সভাপতি মন্ডলীর সভায় যোগ দিতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় কার্যালয়ের পাশে ব্যানার-ফেস্টুন ও স্টেজ দেখে  বিরক্তি প্রকাশ করেন। উপস্থিত নেতাদের কাছে জানতে চান, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ কারা, এখানে আলোচনা সভা কেন। ভূঁইফোড় সংগঠন নিয়ে ওবায়দুল কাদের ক্ষোভ প্রকাশ করার পরেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন বন্ধ করে তড়িঘড়ি করে স্টেজ ভেঙে চলে যায় প্রজন্মলীগের নেতাকর্মীরা। মুহুর্তের মধ্যে উধাও হয়ে যায় স্টেজ, ব্যানার-ফেস্টুন। 

এরপর সম্পাদকম-লী সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু সময় আগে খবর পেলাম ভুঁইফোড় সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে। মুক্তিযুদ্ধা প্রজন্মদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু যারা লীগ বা আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা যুক্ত করে  ভুঁইফোড় সংগঠন গড়ে তুলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর। এসব ভুঁইফোড় সংগঠন দোকান খুলে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করে। এদের কোনো আয়োজন বা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের না থাকার অনুরোধ করেন তিনি। 

মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আলোচনা সভা না করে হঠাৎ কেনো তড়িঘড়ি স্টেজ ভেঙে ফেলা হলো? জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান দুর্জয় বলেন-আমরা তো প্রোগ্রাম শেষ করছি তাই স্টেজ ভেঙেছি। প্রজন্মলীগ ভূঁইফোড় সংগঠন এবং নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে এর জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়- কারো নামে অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি পালন করে। মুক্তিযুদ্ধ  প্রজন্মলীগের নামে বেনামে আরো কয়েকটি  সংগঠন আছে তারা হয়তো আমাদের নাম করে চাঁদাবাজির করে কিন্তু এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি করে না। 

মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন শফিক  স্বপন বলেন, আলওয়ামী লীগের সম্পাদকম-লীর সভা ছিল তাই আমরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষ করে দিয়েছি। আমরা জানতাম না যে আওয়ামী লীগের সভা আছে। আমাদের সংগঠনের নেতাকর্মীরা কোনো চাঁদাবাজ করার প্রমান পাইলে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করে দেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এই ভূঁইফোড় সংগঠনের  বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এমন প্রশ্ন করলে জবাব না দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ নিয়ে সাফাই গায়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সকল কর্মসূচি আমরা পালন করি।