Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪,

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার আত্মমর্যাদাশীল জাতির প্রথম পদচারণা: শেখ পরশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১, ১২:৫০ পিএম


বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার আত্মমর্যাদাশীল জাতির প্রথম পদচারণা: শেখ পরশ

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব না জন্ম নিলে আমরা যেমন দেশ পেতাম না, পতাকা পেতাম না, জাতীয় সঙ্গীত পেতাম না, মানচিত্র পেতাম না। তেমনটি জননেত্রী শেখ হাসিনা জন্ম না দিলে গণতন্ত্র পেতাম না, সামাজিক ন্যায় বিচার পেতাম না। অর্থনৈতিক মুক্তিও পেতাম না, ভোট ও ভাতের অধিকার পেতাম না। একটা মর্যাদাশীল দেশও পেতাম না। 

রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মিরপুরে ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- স্থানীয় সাংসদ ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ। 

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণ করে শেখ পরশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে যেদিন দেশে ফিরে আসেন, আমাদের সমগ্র পরিবারের জন্য দিনটি ছিল অত্যন্ত কষ্টকর। উনি কিভাবে স্বজন হারানোর সীমাহীন শোক ও কষ্ট সহ্য করবেন, সেটা চিন্তা করে আমার দাদিসহ পরিবারের সকলে দিশেহারা। ঐদিন কারো কান্নার বাঁধ মানে না। অজস্র বৃষ্টি হচ্ছিল, সমগ্র আসমান যেন, তার শোকে একাকার হয়ে অশ্রু ঝরাচ্ছে। তিনি এসে দলকে সুসংগঠিত, গণতন্ত্র পনরুদ্ধার করার এবং ১৫ আগস্টের বিচার করার সংগ্রামে নামলেন। সকল দু:খ কষ্ট বুকে নিয়ে দিনরাত সংগঠনকে সময় দিতেন। সমগ্র দেশ সফর করে বেড়িয়েছেন। অনুমান করা কঠিন নেত্রীকে কতো পরিশ্রম ও সংগ্রাম করতে হয়েছে, এই আওয়ামী লীগের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, পিতা হত্যার বিচারের জন্য। শুধু মাত্র তার দৃঢ়তা, সততার জন্য এই জাতির পিতার হত্যার বিচার সম্ভব হয়েছিল। এই পথটা এতোটা কঠিন ছিল, মনোবল ধরে রাখতে পারাটা একটা বিরাট বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপর প্রতি পথে পথে জীবনের হুমকি। এভাবেই চলেছে বঙ্গবন্ধু কন্যার জীবন। তার জীবনের সংগ্রাম ও স্বজন হারানো অভিজ্ঞতা তাকে শুধু একজন ত্যাগি, জননেত্রী হিসেবে সৃষ্টি করেনি, বিশ্বের অন্যতম সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করিয়েছেন। 

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ৮১ সালে যখন দেশে ফিরলেন, তখন জেনারেল জিয়া শাসন। যে জিয়া তার পিতা হত্যায় জড়িত ছিল। শেখ হাসিনা সকল ভয়কে জয় করে মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে এবং আওয়ামী লীগতে সংগঠিত করতে আত্মনিয়োগ করেন। সমগ্র দেশ সফর করেছেন। নেতাকর্মীদের নির্যাতন অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছেন। এরপর আসলো স্বৈরশাসক এরাশাদ। জামায়াতকে পুনর্বাসিত করলো, ফ্রিডম পার্টি তথ্য তার  পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিদের মাঠে নামালো আওয়ামী লীগকে ঘায়েল করতে। এরকম পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা মনোবল হারাননি। ১৯ বার জীবনেরর উপর হুমকি এলো, কিন্তু নেত্রী লক্ষ্য থেকে এক মুহূর্তের পথভ্রষ্ট হতে দেখেনি। দীর্ঘ ১৬ বছর আন্দোলন করে আমরা জয়লাভ করতে পারিনি। তিনি মনোবল হারাননি। দৃঢ় প্রতজ্ঞাবন্ধ ছিলেন ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে।  

শেখ পরশ বলেন, একটা জিনিস বুঝতে হবে, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার পাওয়ার যে সংগ্রাম, এটা শুধু এক ব্যক্তির বিচার পাওয়ার  অধিকার নয়। এটা সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। কারণ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার না হলে, ন্যায় বিচারের প্রতি জনগণের আস্থা কোনদিনও অর্জন সম্ভব হতো না। প্রকৃত পক্ষে ওটাই ছিলো আমাদের আত্মমর্যাদাশীল জাতির প্রথম পদচারণা। 

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বাংলাদেশের আর্শিবাদ। শোষিত নির্যাতিত মানুষের আশ্রয়স্থল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন। গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব দিয়েছেন, কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল আলীমকে মন্ত্রি করেছেন। সে সময়ে গোটা বাংলাদেশ ছিল অন্ধকারে। সেদিন বাংলার মানুষের খাবার ছিলো না, অধিকার ছিল না, নিরাপত্তা ছিল না। এমন এক অন্ধকার বাংলাদেশে আলোর দিশারী হয়ে ফিরে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। বার বার মৃত্যুকে জয় করে বাংলাদেশকে আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। 

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যার জন্ম হয়েছিল বলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আমরা মাথা উঁচু করে বলতে পারি আমি বাঙালি, বাংলাদেশ আমার দেশ।

আমারসংবাদ/জেআই