ঢাকা
শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,
সফিউল আলম, কক্সবাজার
নভেম্বর ২৬, ২০২১, ১০:০৫ এএম
সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়া স্বত্তেও প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতা দেখিয়ে আইন প্রদত্ত ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে কারাগারের বাইরে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন, সেটা বিএনপি অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তাকে (খালেদা জিয়া) আবারো কারাগারে পাঠানো হবে কিনা তা পুনর্বিবেচনা করতে হবে’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দরে সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের জবাবে ড. হাসান মাহমুদ বলেন, প্রকৃত পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার জন্য যে সহমর্মিতা প্রদর্শন করেছেন; যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন সেটি তুলনাহীন ও বিরল। বেগম খালেদা জিয়া একজন শাস্তিপ্রাপ্ত আসামি, সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তিনি আদালত কর্তৃক জামিনপ্রাপ্ত। তার সাজা মওকুপ হয়নি কোনভাবে।
“এরপরও প্রধানমন্ত্রী তাকে ( খালেদা জিয়া) আইনি প্রদত্ত প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে কারাগারের বাইরে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। ঘরে থাকার, আত্মীয় ও পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। ”
প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা খালেদা জিয়ার জন্য প্রদর্শন করেছেন; সেটি তারা (বিএনপি) অনুধাবন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন বলে মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, “ এখন আমাদের (সরকার) ভাবতে হবে প্রধানমন্ত্রী যে প্রশাসনিক আদেশে, আইনি ক্ষমতাবলে তাকে কারাগারের বাইরে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন; সেটি পুনর্বিবেচনা করা হবে কিনা, তাকে (খালেদা জিয়া ) আবারো কারাগারে ফেরত পাঠানো প্রয়োজন কিনা সেটি এখন আমাদের ভাবতে হবে।”
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে একজন প্রতিহিংসা পরায়ন রাজনীতিক বলেও মন্তব্য করেন ড. হাসান মাহমুদ।
তিনি বলেন, প্রতিহিংসা পরায়ন হয়েই তিনি (খালেদা জিয়া) তার জন্মের তারিখ বদলে দিয়েই ১৫ আগস্ট কেক কাটেন। প্রতিহিংসা পরায়নতার কারণেই তার সরকারের সময়েই পুত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দ্যেশে গ্নেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়।
“বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন তার (খালেদা জিয়া) পুত্রের মৃত্যুর পর বাড়ীর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন, অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও দরজা পর্যন্ত সৌজন্যতা বশত: খোলেনি। এমন একজন প্রতিহিংসা পরায়ন মানুষের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সহানুভূতি দেখিয়েছেন এবং সহমর্মিতা দেখিয়েছেন; এটা বিএনপি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এখন আমাদের ভাবতে হবে তাকে আবারো কারাগারে ফেরত পাঠানো হবে কিনা। ”
খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর বলেও সাংবাদিকদের জানান তথ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য যদি বাংলাদেশের বিএনপি চায় দেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসকদের দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার (খালেদা জিয়া) আসলে কি হয়েছে; সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে। সেগুলোর তোয়াক্কা না করে শুধুমাত্র বিদেশ নিয়ে যাওয়ার যে ধোয়া তুলছেন, দাবি তুলছেন; এটা রাজনৈতিক উদ্দ্যেশ প্রণোদিত।
“ তাদের (বিএনপি) উদ্দ্যেশ হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দিতে চায় রাজনৈতিক উদ্দ্যেশে। বেগম খালেদা জিয়া যেন সেখানে গিয়ে রাজনীতি করতে পারেন। যেটি করছেন তারেক রহমান। সুতরাং তাদের দাবি রাজনৈতিক উদ্দ্যেশ প্রণোদিত। ”
ছাত্রজীবনে নিজেও অর্ধেক বাস ভাড়া দিয়ে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়ত করেছেন বলে জানান ড. হাসান মাহমুদ।
তিনি বলেন, একটি বাসে ৪০/৫০ জন যাত্রী থাকে। সেখানে হয়তো ২/৩ জন ছাত্র থাকে। হয়তো স্কুল ছুটির সময়, কলেজ ছুটির সময় বা কলেজে যাওয়ার সময় একটু বেশী থাকতে পারে। এমনিতে সাধারণত ২/৪ জনের বেশী ছাত্র যাত্রী থাকে না। শিক্ষার্থীদের পরিবহন ভাড়া অর্ধেক নেয়াটা জরুরী।
পরিবহণ মালিক ও পরিবহন কোম্পনীগুলো এই বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন বলে মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী।
এর আগে শুক্রবার দুপুর ১ টায় একদিনের সফরে কক্সবাজারে আসেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এসময় তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান কক্সবাজারের স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল ও জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে মন্ত্রীকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় ধর্ম-বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান সহ দলের স্থানীয় নেতাকর্মিরা।
সন্ধ্যায় মন্ত্রী কক্সবাজারের ইনানীস্থ রয়েল টিউলিপ সী পার্ল বীচ রিসোর্টে বাংলাদেশ টেন আউটস্টেন্ডিং ইয়ং পারসন এ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করার কথা রয়েছে।
