Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

সহজ শর্তে স্বল্পসুদে ঋণ: প্রকৃত কৃষকদের নিশ্চিত করতে হবে

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১, ০৬:৫৫ পিএম


সহজ শর্তে স্বল্পসুদে ঋণ: প্রকৃত কৃষকদের নিশ্চিত করতে হবে

এখনো দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। প্রযুক্তির উৎকর্ষে বাংলাদেশের কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। কৃষি উৎপাদন বেড়েছে কয়েক গুণ। ১৯৭২ সালের কৃষি উৎপাদনের চেয়ে এখনকার উৎপাদন ২৫ গুণেরও বেশি। এখন আমাদের কৃষকদের ৮০-৯০ শতাংশই প্রযুক্তিনির্ভর। খাদ্যশস্য উৎপাদনে আমরা পেছনে ফেলে দিয়েছি অনেক বড় বড় দেশকে। কৃষিপণ্য রপ্তানিতেও বাংলাদেশ দ্রুত সফলতা অর্জন করছে।

২০১৮ সালে বাংলাদেশ ৬৭৮ মিলিয়ন ডলার কৃষিপণ্য রপ্তানি করেছে। বেশ কিছু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করে বিপুল সুনাম অর্জন করেছে। এ সবই সরকারের ইতিবাচক প্রণোদনামূলক নীতির কারণে সম্ভব হচ্ছে। কৃষকদের জন্য এক কোটিরও বেশি ১০ টাকার ব্যাংক হিসাব, দুই কোটিরও বেশি কৃষি উপকরণ কার্ড, সাত কোটিরও বেশি মোবাইল ব্যাংক হিসাব, প্রত্যেক কৃষকের ঘরে বিদ্যুৎ, ১৫ হাজারেরও বেশি সৌর সেচ প্লান্টসহ নানা ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করেছে শেখ হাসিনার সরকার। অনেক দিনের চেষ্টায় বাংলাদেশের কৃষিতে এমন বিপ্লব এসেছে। সারা বিশ্ব যখন করোনাকালে মহামন্দায় ভীতসন্ত্রস্ত, তখন আমাদের চাঙ্গা কৃষি তার আশার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করে চলেছে।

করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকের জন্য তিন হাজার কোটি টাকার বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ তহবিল থেকে জামানতবিহীন সহজ শর্তে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন কৃষকরা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নীতিমালা দিয়ে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। সার্কুলারে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় পর্যায়ে বিশেষ প্রণোদনায় পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় কৃষি খাতের জন্য তিন হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব এই তহবিলের মেয়াদ হবে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। এই স্কিমের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংক নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কৃষক ও গ্রাহকপর্যায়ে ঋণ বিতরণ নিশ্চিত করবে।

কৃষকের জন্য স্বল্পসুদে ঋণ এই উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে কল্যাণমুখী। তবে একটি কথা না বললেই নয়, যে আমাদের দেশে ভালো উদ্যোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়।

এরমধ্যে রয়েছে অব্যবস্থাপনা, গাফিলতি, অনিয়ম-দুর্নীতির মতো অপ্রত্যাশিত কিছু কারণ। কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে এসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে। সহজ শর্তে এসব ঋণ সেসব কৃষকদেরই প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে যারা প্রকৃত অর্থেই কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং যাদের যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের কৃষিকে আরও যুগোপযোগী এবং উৎপাদনমুখী করতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ঔদাসীন্য থাকবে না।