Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

রাজধানীতে বাস রুট রেশনালাইজেশন দ্রুত চালু করলেই মিলবে স্বস্তি

অক্টোবর ৮, ২০২১, ০৬:১৫ পিএম


রাজধানীতে বাস রুট রেশনালাইজেশন দ্রুত চালু করলেই মিলবে স্বস্তি

ঢাকা ও এর আশপাশে দুইশতরও বেশি রুটে সাড়ে তিন হাজার বাস চলাচল করে। অনুমতি রয়েছে ১২ হাজার ৫২৬টি বাস চলাচলের। দেখা যায়, যাত্রী তোলার জন্য এক বাসের চালক অন্য বাসের সঙ্গে পাল্লায় লিপ্ত হন। এর ফলে দুর্ঘটনা বাড়ে। এই ব্যবস্থা পরিবর্তনে ২০০৪ সালে ঢাকার জন্য করা ২০ বছরের পরিবহন পরিকল্পনায় ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ বা বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজ চালু করার পরামর্শ দেয়া হয়।

বিশেষ এই ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হচ্ছে লক্কড়ঝক্কড় বাস তুলে নেয়া। সহজ শর্তের ঋণে নতুন বাস নামানো। বাস চলবে পাঁচ-ছয়টি কোম্পানির অধীনে। মালিকরা বিনিয়োগের হার অনুসারে লভ্যাংশ পাবেন। ২০১৬ সালের শুরুতে এই উদ্যোগটি নিয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র আনিসুল হক। তখন পরিকল্পনা ছিলো দেড় বছরের মধ্যে ছয়টি কোম্পানির অধীনে ছয় রঙের নতুন তিন হাজার বাস নামানো হবে।

তার মৃত্যুর পর উদ্যোগটি থেমে যায়। পরে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন উদ্যোগটি নতুন করে এগিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৮ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে। ২০১৯ সালে অন্য একটি প্রজ্ঞাপনে ডিএনসিসির একজন প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করে ১২ সদস্যের কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে রুটভিত্তিক কোম্পানির অধীনে পরীক্ষামূলক বাস চলাচল শুরুর কথা ছিলো। পরে সেটি পিছিয়ে সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি আলোর মুখ দেখেনি।

প্রকাশিত খবরে জানা যায়, সব কিছু স্বাভাবিক গতিতে চললেও পরীক্ষামূলকভাবে ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে রেশনালাইজেশনের অধীনে গণপরিবহন চালাতে অন্তত আরো ছয় মাস লাগবে। বাস চলাচলের জন্য যে ধরনের অবকাঠামো তৈরি করা দরকার সেটা এখনো করা যায়নি। ঘাটারচরে যেখানে বাসের ডিপো তৈরি হবে, সেই ডিপোর জমি এখনো অধিগ্রহণ করা হয়নি। এই একটি রুটের সফলতার ওপর নির্ভর করছে বাকি ৪১টি রুটের ভবিষ্যৎ। এই পথে ৪০টি বাস স্টপেজ থাকবে। এর বাইরে বাস দাঁড়ানোর জায়গা থাকবে আরো ১৭টি। থাকবে ৪০টি যাত্রীছাউনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা মূলত বড় কোম্পানির বাসমালিক, সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের যৌথ ব্যর্থতার ফল। তাদের সদিচ্ছার অভাব আছে বলেই এখন পর্যন্ত একটি রুটেরই অবকাঠামো ঠিক করা সম্ভব হয়নি।

তবে ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পহেলা ডিসেম্বর বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত বাস চলাচলের উদ্বোধন করা হবে। ঘাটারচর টু কাঁচপুর রুটে প্রথম অবস্থায় ১২০টি নন এসি বাস চলাচল করবে। রুটে চলাচলকারী সব পরিবহন হবে নতুন। ২০১৯ সালের আগে তৈরি হওয়া কোনো বাস এই রুটে চলাচল করতে পারবে না।  

এই রুটে চলাচলকারী পরিবহনের ড্রাইভার এবং হেলপারের একটি নির্দিষ্ট পোশাক থাকবে। আগামী ২০ তারিখে এ রুটে চলাচলকারী বাসের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হবে। আমরা মনে করি, পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরে গণপরিবহনের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে।