Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

ক্ষতিগ্রস্ত ই-কমার্স খাত ভোক্তাদের সুরক্ষা দিতে হবে

নভেম্বর ২৮, ২০২১, ০৭:০৫ পিএম


ক্ষতিগ্রস্ত ই-কমার্স খাত ভোক্তাদের সুরক্ষা দিতে হবে

ই-কমার্স প্রতারণা থামছেই না। বিশাল মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগ অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সে তালিকায় এবার এসেছে আলেশা মার্টের নামও। জানা যায়, আলেশা মার্টে বিশেষ মূল্যছাড়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির পাঁচ দফা ক্যাম্পেইনে ৪৫ হাজার গ্রাহক পণ্যের অর্ডার দেন। 

চার দফায় ক্যাম্পেইনের পণ্য ডেলিভারিও দেয়া হয়। পঞ্চম দফায় সাত হাজার ৩০০ গ্রাহকের অর্ডারের মোটরসাইকেল দিতে পারেনি আলেশা মার্ট। এসব অর্ডারের বিপরীতে গ্রাহকদের অন্তত ২০০ কোটি টাকা আটকে গেছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটিতে। 

এসব প্রতিষ্ঠানে নজরদারি এবং বকেয়া বাড়ায় আগস্ট মাস থেকে আলেশা মার্টকে মোটরসাইকেল দেওয়া বন্ধ করে দেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। চার দফায় আলেশা মার্ট যেসব অর্ডারের পণ্য ডেলিভারি দিয়েছে, তার মধ্যে বেশিরভাগই মোটরসাইকেল। উত্তরা মোটরসের তেজগাঁওয়ের এসকে ট্রেডার্সের কাছ থেকে বাজাজ ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল নিয়ে গ্রাহকদের দিত তারা। তবে আগস্ট থেকে এসকে ট্রেডার্স আর মোটরসাইকেল দিচ্ছে না। কারণ হিসেবে তারা বলছে, আলেশা মার্টে তাদের ৫৭ কোটি টাকা আটকে পড়েছে। 

আলেশা মার্টের বক্তব্য, প্রায় এক হাজার ৯০০ কোটি টাকার লোন আটকে যাওয়ায় তাদের মূল্যছাড়ে মোটরসাইকেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে। আলেশা মার্ট কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিলেও তারা আশ্বস্ত হতে পারছেন না। ঠিকমতো বেতন না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের অনেকে চাকরি ছেড়েছেন বলেও খবরে প্রকাশ।

বাংলাদেশে কয়েক বছর ঘরে বসে অনলাইনে পণ্য কেনাকাটা বা ই-কমার্স ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও খাতটি এখন ভুগছে আস্থার সংকটে। বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎসহ গ্রাহক ও মার্চেন্টদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়া কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম সরকারের উচ্চপর্যায়ের কমিটিতে হস্তান্তর করেছে তিনটি গোয়েন্দা সংস্থা। 

প্রতারণার বিস্তর অভিযোগ পাওয়ার পর দেশের ই-কমার্স খাতে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার ও সমন্বয়ের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তদারকির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাদের সুরক্ষায় উচ্চপর্যায়ের কমিটিও গঠন করে সরকার। শুরুতে ই-কমার্সের জন্য কোনো নীতিমালাই ছিলো না। এখন নীতিমালা হলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন বা মনিটরিংয়ের অভাব রয়েছে। আর সে সুযোগই নিচ্ছে প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। 

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যে বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এখনই তার লাগাম টেনে ধরতে হবে। গ্রাহকরা কোনোভাবেই প্রতারিত হবেন না— এমন ব্যবস্থা নিতে হবে। অনলাইন ব্যবসায়ীদের যেসব প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, তাদেরও এমন প্রতারণামূলক ঘটনার দায় নিতে হবে। তা না হলে অনলাইন ব্যবসা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তেমনি লাখ লাখ গ্রাহক প্রতিনিয়ত প্রতারিত হতে থাকবেন। কাজেই সরকার এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে— এটাই প্রত্যাশা।