Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪,

শেষ অগ্নিপরীক্ষায় নির্বাচন কমিশন

জানুয়ারি ১৫, ২০২২, ১০:৫৫ পিএম


 শেষ অগ্নিপরীক্ষায় নির্বাচন কমিশন

আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচন। রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষের দৃষ্টি এখন এ নির্বাচনের দিকে। ভোটকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই নারায়ণগঞ্জ পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে।

নাসিক নির্বাচনের একটি ভালো দিক হলো, এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতারত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে বাকযুদ্ধ হলেও এখন পর্যন্ত বাস্তবে কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনি সংস্কৃতিতে এটি এক ইতিবাচক লক্ষণ, সন্দেহ নেই। 

আমরা আশা করতে চাই, নির্বাচন ও নির্বাচন-পরবর্তী দিনগুলোয় এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে। নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই, তবে পরাজিত পক্ষের উচিত নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখা। নাসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলছে নানা সমীকরণ। 

তবে মূল ফোকাস সরকারদলীয় প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারকে ঘিরেই। উভয় প্রার্থীই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে তাদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা।

আইভী বলেছেন, সুষ্ঠু ভোট হলে তিনি জয়যুক্ত হবেন; তবে তার জয় ঠেকানোর জন্য একটি মহল চেষ্টা চালাচ্ছে। 

অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম বলেছেন, সরকারদলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। সুষ্ঠু ভোট হলে তিনিই জয়ী হবেন। এ দুজনের মধ্যে কার কথা বাস্তব রূপ পাবে— তা জানতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আগামীকাল রাত পর্যন্ত। 

নির্বাচকমণ্ডলীর প্রতি আমাদের আবেদন, তারা যেন গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামীকাল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। রাজনৈতিক দল ও মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের প্রতিও আমাদের আহ্বান, তারা যেন এমন কিছু না করেন, যা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

তবে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার মূল দায়িত্ব অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের। এই কমিশন যদি তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারে, তা হলেই সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। আশার কথা, প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আমরা বলতে শুনেছি, নাসিক নির্বাচন নির্বাচনি সংস্কৃতিতে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করবে। আমরা আশা করব, তার এ কথা যেন কথার কথা হয়ে না থাকে।

বলতে দ্বিধা নেই, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোসহ সাধারণ মানুষের আস্থা সন্তোষজনক পর্যায়ে নেই। সাম্প্রতিককালের ইউপি নির্বাচনগুলোয় নির্বাচন কমিশন আশানুরূপ ভূমিকা পালন করতে পারেনি। গত সাধারণ নির্বাচনেও নির্বাচন কমিশন প্রশংসার পরিবর্তে নিন্দাই কুড়িয়েছে।

আমরা বলব, আজকের নাসিক নিবাচন এই কমিশনের জন্য শেষ অগ্নিপরীক্ষা। আগামী ফেব্রুয়ারিতে কমিশনের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে কমিশন যদি জাতিকে সত্যি সত্যি একটি উদাহরণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারে, তাহলে এ কমিশনের বিরুদ্ধে যেসব অপবাদ চালু আছে, তার কিছুটা হলেও ঘুচবে বলে মনে করি আমরা।

আগামীকালের সূর্যোদয় নারায়ণগঞ্জে শুভ-আলোকের প্রক্ষেপণ ঘটাবে— এটাই সবার প্রত্যাশা। একটি সহিংসতামুক্ত, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটুক সুখকর পরিণতির মধ্য দিয়ে।