Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শেষ শ্রদ্ধায় অভিজিৎ

মার্চ ১, ২০১৫, ০৭:১৬ এএম


অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শেষ শ্রদ্ধায় অভিজিৎ


বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে রাখা হয়েছে। রোববার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে অভিজিতের কফিন আনা হয় ঢাবিতে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ বড় মগবাজারের বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। পরে তার মরদেহ গবেষণার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে আগেই অপেক্ষায় ছিলেন বন্ধু, স্বজন, শুভানুধ্যায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।

অভিজিৎ রায়ের বাবা শিক্ষাবিদ অজয় রায়সহ তার পরিবারের সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। অজয় রায় বলেন, 'অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড সরকারের ব্যর্থতার ইঙ্গিত করে। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা ছিল তাদের যথাযথ বিচারের জন্য সরকারকে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টি করতে হবে।'

অভিজিৎ-এর হত্যকারাী ও জামায়াতসহ সব জঙ্গিসংগঠন নিষিদ্ধের দাবি জানান অজয় রায়।

ড. কামাল হোসেন বলেন, 'অভিজিৎ হত্যার মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে দেশের স্বাধীনতা অর্থহীন। কারণ একটি স্বাধীন দেশে মুক্তচিন্তার বিরুদ্ধে কখনও এমন এমন হামলা হতে পারে না।'

যারা এ ধরনের কাজ করেছে তারা সংবিধানকে ছুঁড়ে ফেলেছে বলে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, ঘরে ঘরে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এ ধরনের হত্যকাণ্ড বন্ধ করা সম্ভব নয়।

তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন। কামাল হোসেন বলেন, 'ঘটনার সময় পুলিশ পাশে থাকলেও তারা হামলাকারীদের কোনোরকম প্রতিহত করেনি। উল্টো হামলার পর তারা যখন সাহায্যের জন্য আবেদন করেছিল তখনও তারা নির্লিপ্ত ছিল।' এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করার দাবি জানান তিনি।

ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুনুর রশিদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমানর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক। এছাড়াসাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সৈয়দ হাসান ইমাম, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে সঙ্গে নিয়ে বইমেলা থেকে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলন চত্বরের উল্টো পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ফুটপাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিতকে। হামলায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বন্যার একটি আঙুল।

এ হত্যাকাণ্ডে নিন্দা জানিয়ে ঘাতকদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ ঘটনাকে ‘কাপুরুষোচিত’অ্যাখ্যায়িত করে তদন্তে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাবা অজয় রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হওয়ায় অভিজিতের শৈশব-কৈশর কেটেছে এই বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতেই। অথচ সেই ক্যাম্পাসেই বইমেলা ঘিরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শাহবাগ থানা থেকে দুইশ গজ দূরে ঘাতকের চাপাতির আঘাতে খুন হতে হয়েছে তাকে।