Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

ব্লগার অভিজিৎ হত্যা: জড়িত সন্দেহে ফারাবী গ্রেফতার

মার্চ ২, ২০১৫, ০৭:০৬ এএম


ব্লগার অভিজিৎ হত্যা: জড়িত সন্দেহে ফারাবী গ্রেফতার

 

 

বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রধান সন্দেহভাজন শফিউর রহমান ফারাবীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

র‍্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান জানান, উগ্রপন্থী ব্লগার ফারাবীই লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন।  সোমবার সকালে ঢাকা ছাড়ার চেষ্টা করলে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে সঙ্গে নিয়ে বইমেলা থেকে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলন চত্বরের উল্টো পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন ফুটপাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিৎকে। হামলায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বন্যার একটি আঙুল।

যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী অভিজিৎ রায় সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা। তার খুনের ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতেও প্রধান শিরোনাম হয়। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সহায়তার আগ্রহ দেখালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাতে সম্মতি দেওয়া হয়েছে বলে রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী সাংবাদিকদের জানান।

হত্যাকাণ্ডের পর ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ফারাবীর নাম নতুন করে আলোচনায় আসে। তিনি অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন অভিযোগ করে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আসা একটি কমেন্ট শেয়ার করা হয়। একজনকে উদ্দেশ করে ওই কমেন্টে বলা হয়, অভিজিৎ রায় আমেরিকা থাকে। তাই তাকে এখন হত্যা করা সম্ভব না। তবে সে যখন দেশে আসবে তখন তাকে হত্যা করা হবে।

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি শাহবাগ আন্দোলনের কর্মী ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারের জানাজা পড়ানোয় ইমামকে হত্যার হুমকি দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন রাহ্মণবাড়িয়ার ছেলে ফারাবী। ওই বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেইট এলাকা থেকে পুলিশ ফারাবীকে গ্রেফতার করে। ফেসবুক ব্যবহার করে ইমামকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে জুন মাসে ঢাকার একটি আদালত তার বিরুদ্ধে অভিযোগও গঠন হয়। কিন্তু হাইকোর্টের জামিনে ২০১৩ সালের ২১ অগাস্ট কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে যান ফারাবী। আর মুক্তি পেয়েই নাস্তিকদের হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে তিনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন, যাতে বলা হয় আমার দৃষ্টিতে নাস্তিকরা হচ্ছে পোকামাকড় আর পোকামাকড়দের মরে যাওয়াই ভালো।

এদিকে অভিজিৎকে হত্যার পর আনসার বাংলা সেভেন নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একাধিক টুইট করে এ হত্যাকাণ্ডকে বিজয় হিসেবে দাবি করা হয়। এর একটিতে বলা হয়, আল্লাহু আকবর.. বাংলাদেশে আজ একটি বিশাল সাফল্য। টার্গেট ইজ ডাউন..।

আর অন্যটিতে অভিজিৎ ও তার স্ত্রীর একটি ছবি শেয়ার করে বলা হয়, ইসলামের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসলামবিরোধী ব্লগার আমেরিকান বাঙালি অভিজিৎ রায়কে রাজধানী ঢাকায় হত্যা করা হয়েছে।

আনসার বাংলা সেভেন নামে কোনো জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব বা অভিজিত হত্যায় তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত করতে পারেনি।

তবে তাদের সন্দেহের তালিকায় যে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনও রয়েছে, পুলিশ কর্মকর্তাদের কথায় তা স্পষ্ট। হত্যাকাণ্ডের পরদিন শাহবাগ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়ও জঙ্গিদের সন্দেহের কথা বলেন। থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমার ছেলেকে হত্যার জন্য উগ্র জঙ্গিবাদীরাই দায়ী। এদের মদদ দিয়েছে জামায়াত।