Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

একনেকে ৭ উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন

মার্চ ৩, ২০১৫, ০৭:১৩ এএম


একনেকে ৭ উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন


জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক) ৩ হাজার ৫১১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন (জিওবি) ১ হাজার ৫৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। সংস্থার নিজস্ব তহবিল ৪১৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ৪১ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

একনেকের বৈঠকে চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়।

সভা শেষে সাংবাদিকদের সংবাদ সম্মেলন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এবং পরিকল্পনা সচিব শফিকুল আজম উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, দেশে বিদ্যমান উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলো অতি পুরাতন ও জরাজীর্ণ। ফলে জমির রেকর্ড ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যেই পাঁচটি পর্যায়ে দেশের মোট ৩৪৫টি উপজেলা এবং এক হাজার ১৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় ষষ্ঠবারের মতো এ সংক্রান্ত প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেওয়া হলো।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, কনস্ট্রাকশন অব ১৪ স্টোরেড বিল্ডিং উইথ থ্রি বেজমেন্ট অব হেড অফিস অব বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট অ্যাট শেরেবাংলানগর ঢাকা (প্রথম সংশোধনী), এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১২৩ কোটি কোটি ৪ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম-রাঙামাটি জাতীয় মহাসড়কের অক্সিজেন মোড় হাটহাজারি অংশে ডিভাইডার প্রশস্তকরণ (প্রথম সংশোধনী), এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২২৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। পাসপোর্ট পারসোনারাইজেশন কমপ্লেক্স স্থাপন, বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২৮ লাখ ৮৯ লাখ টাকা। সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার ফেজ-২ এর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে ৩৩/১১ কেভি ইলেকট্রিক সাবস্টেশন স্থাপন, বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। তৃণমূল পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিভা অন্বেষণ করে নিবিড় প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বিকেএসপির ক্রীড়া সুবিধাদি আধুনিকায়ন প্রকল্প, ব্যয় হবে ৪১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা এবং ঘোড়াশাল ৩য় ইউনিট রি-পাওয়ারিং প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ৫১৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

প্রকল্পের বিস্তারিত হচ্ছে, ভূমি অফিস নির্মাণ প্রকল্পে ষষ্ঠ পর্যায়ের এ অংশ বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এটি বাস্তবায়িত হলে ভূমি প্রশাসন ব্যবস্থারও উন্নয়ন ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের ভূমি সবচেয়ে মূল্যবান ও সীমিত সম্পদগুলোর মধ্যে একটি। আগামী দিনগুলোতে নগরায়ন ও শিল্পায়নসহ নানা কারণে ভূমির ব্যবহার আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এ কারণে ভূমি রেকর্ড ব্যবস্থাপনা উন্নততর হওয়া প্রয়োজন।

 কিন্তু দেশের অধিকাংশ উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অবস্থাই জরাজীর্ণ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় দেশের সকল উপজেলা ও ইউনিয়নে ভূমি অফিস নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যেই ১৯৮৫ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত ৫টি পর্যায়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন মিলে মোট এক হাজার ৩৫৯টি ভূমি অফিস নির্মাণ করা হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় ষষ্ঠ পর্যায়ে দেশের ৬১টি জেলার উপজেলা ও ইউনিয়ন মিলে মোট ৬৩৯টি ভূমি অফিস নির্মাণের জন্য ৫৯৬ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয় পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পটির ওপর ২০১৪ সালের ১৬ জুন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রস্তাবিত ব্যয় কমিয়ে ৫৩৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে আবারও পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। পরিকল্পনা কমিশন থেকে প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। এ প্রেক্ষিতে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হলো।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ৬৩৮টি ভূমি পর্যবেক্ষণ ও ডিজিটাল সার্ভে পরিচালনা, ১৩৯টি উপজেলা ভূমি অফিস নির্মাণ (চার তলা ভিত্তির উপর একতলা ভবন), ৫০০টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ (দুই তলা ভিত্তির উপর এক তলা ভবন এবং উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য তিন তলা ভিত্তির উপর দুই তলা ভবন) এবং ৬৩৯টি ভবনে ১০৪ দশমিক ৬৬ কিলোওয়াট সোলার প্যানেল স্থাপন করা হবে।