Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

প্রার্থীদের প্রচারণা বিলবোর্ডে

মার্চ ১৬, ২০১৫, ০৫:৩২ এএম


প্রার্থীদের প্রচারণা বিলবোর্ডে

 


ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল এখনো ঘোষণা হয়নি। তবে এরই মধ্যে ব্যাপকভাবে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সর্বত্রই ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড, পোস্টার ও লিফলেটে ছেঁয়ে গেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণের প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই প্রচার কাজ জমজমাট হয়ে উঠেছে।

 এদিকে বসে নেই সম্ভাব্য কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। যে যেভাবে পারছেন নিজেদের অবস্থান জানান দিতে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছেন। এবিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ। এই নির্বাচনের ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা প্রয়োজন। তাছাড়া তফসিল ঘোষণার আগে আমরা এসব ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। এটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কমিশন এ ক্ষেত্রে অনেকটাই অসহায়। এর ফলে সম্ভাব্য প্রার্থীরা আরও অতি উৎসাহী হয়ে প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। তবে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচন কমিশন মনে করলে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তফসিল ঘোষণার আগে এমন প্রচার-প্রচারণা চললেও আইনের দোহাই দিয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে নগরবাসীর মনেও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। দেয়াল নষ্ট করার জন্য অনেকে এ ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা-২০১০ এর অনুচ্ছেদ-৪ অনুযায়ী কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষ থেকে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত তারিখের ২১ দিন পূর্বে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারবে না বলে উল্লেখ আছে।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, ডিসিসি দক্ষিণে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে ভোট চেয়ে বা দোয়া চেয়ে পোস্টার, ব্যানার টানিয়েছেন। সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীর রঙিন পোস্টারে লেখা মো. সাইদ খোকন ভাইকে মেয়র পদে ভোট দিন। একই পোস্টারে আরেক সম্ভাব্য কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. আবুল বাসারের জন্যও ভোট চাওয়া হয়েছে। ওপরদিকে উত্তরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সমর্থনে লড়বেন ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে খ্যাত আনিসুল হক। তার পোস্টারে ছেয়ে গেছে ঢাকার উত্তরাঞ্চল। ভোট চেয়েছেন তিনিও।

এদিকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেও মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিলবোর্ড শোভা পাচ্ছে। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসাবে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী সেলিমও পিছিয়ে নেই। এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এটি নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

 এসব অগ্রহণযোগ্য কর্মকান্ডে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ করা উচিত। আইন লঙ্ঘনের এ বিষয়টি ইসি কতটুকু নজর দিচ্ছে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাবেদ আলী বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে শুরু হবে আমাদের কার্যক্রম। আমরা দেখবো তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচন সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত কেউ কোনো আইন লঙ্ঘন করছে কিনা। এর আগে পরে যেসব আইন লঙ্ঘন হবে সেগুলোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যারা এখন প্রচার চালাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে তফসিল ঘোষণার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এভাবে প্রচার চালানো আসলে ঠিক না। আইনে তফসিলের আগে প্রচার চালানোর  বিষয়ে ইসির পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে কিছু বলা না থাকলেও ইসি চাইলে এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এটা সম্পূর্ণ তাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।

 তবে আমাদের সময়ে এরকম প্রচার না চালানোর জন্য ঘোষণা দেয়া হত। যারা এভাবে প্রচার চালাচ্ছে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে না বা নমিনেশন বাতিল করা হবে এমন প্রজ্ঞাপন চাইলে ইসি জারি করতে পারে। এটা সম্পূর্ণ ইসির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তবে নগরবাসীরা মনে করছেন এভাবে প্রচার-প্রচারণা চলতে থাকলে প্রার্থীদের মধ্যে একটা অস্থুথ প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে। যার ফলে ভোটের আগে সাধারণ জনগণের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।