মার্চ ২২, ২০১৫, ০৯:৩৮ এএম
প্রায় মাস গড়িয়ে গেলেও অভিজিৎ রায়ের খুনি কারা, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পায়নি গোয়েন্দা পুলিশ। অভিজিৎ রায় হত্যার সময় অনেক মানুষ সেখানে ছিল। তারপরও কেউ পরিষ্কার করে বলতে পারছে না, হত্যাকাণ্ডে কতজন অংশ নিয়েছিল। তারা দেখতে কেমন, তাও কেউ পুলিশকে জানাতে পারেনি। রোববার নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন গোয়েন্দা পুলিশের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলার বাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ে অভিজিৎ ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার ওপর হামলাকারী কয়েকজন ছিলেন বলে পুলিশের ধারণা। মনিরুল বলেন, অনেক সময় কোনো জায়গায় কোনো ঘটনা ঘটলে স্থানীয়রা সেই ছবি তুলে রাখে। এখানে কেউ ছবি তুলে রাখতে পারে। কিন্তু তা এখনও পুলিশের হাতে পৌঁছেনি। এই রকম কোনো ছবি যদি কেউ পুলিশকে দিত, তবে তদন্তে সহায়তা হতো।
হত্যাকাণ্ড তদন্তে সহায়ক কোনো ছবি দিলে তার পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের এই যুগ্ম কমিশনার, যে সংস্থাটি হত্যামামলাটি তদন্ত করছে। মনিরুল বলেন, পুলিশ বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং এ ক্ষেত্রে এফবিআইয়ের সহায়তাও নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে অনেক ক্লু লেস ঘটনাই মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সফলভাবে তদন্ত করেছে, এখনও কিছু না পেলেও আশাবাদী তিনি। মুক্তমনা ব্লগের পরিচালক, লেখক অভিজিৎ রায় দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের হুমকি পাওয়া। তাদের ঘিরেই এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চালানোর কথা বলে আসছিল পুলিশ।
হত্যা মামলায় যে একজনকে এই পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই ফারাবী শফিউর রহমানও ফেসবুকে হত্যার হুমকি দিয়ে লিখেছিল, বাংলাদেশে ফিরলে অভিজিৎকে হত্যা করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সহযোগিতা করছে সে দেশের তদন্ত সংস্থা এফবিআই। তারা বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের তদন্তে সন্তুষ্ট বলে দাবি মনিরুলের। ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত রেদোয়ানুল আজাদ রানাকে অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডেও সন্দেহ করছে পুলিশ। তবে তাকে গ্রেফতারে এখনও সফল হয়নি তারা।
রানাকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা হয়েছে। তিনি যেন দেশ ছাড়তে না পারেন, সেই বিষয়ে সীমান্তে নির্দেশনা দেওয়া আছে বলেও জানান মনিরুল। হত্যাকাণ্ডের দিন বইমেলায় বিজ্ঞান লেখক ও বুয়েটের শিক্ষক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদীর ডাকা একটি বৈঠক নিয়ে সন্দেহের কথা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়। মনিরুল বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে, তা তদন্ত করে দেখা হবে। দরকার হলে সেই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদও করা হবে। অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড তদন্তের গতিতে নিজের অসন্তোষ জানিয়ে আসছেন অধ্যাপক অজয় রায়। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ এসেছে বিভিন্ন পর্যায় থেকে।