‘নোনা জলের কাব্য’ এবার ঢাকার প্রেক্ষাগৃহে

আগামী ২৬ নভেম্বর ঢাকায় মুক্তি পাচ্ছে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে প্রশংসিত ছবি ‘নোনা জলের কাব্য’। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সিনেমাসংশ্লিষ্টরা। 

দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী প্রান্তিক জেলেদের দৈনন্দিন জীবনযাপন, আবহাওয়ার প্রতিকূলতার মুখে টিকে থাকার লড়াই এবং তাদের সামাজিক রীতিনীতি ও সংস্কারকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে এই চলচ্চিত্রটি। এটি পরিচালনা করেছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত। ‘নোনা জলের কাব্য’ ছবির মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া ও তাসনোভা তামান্না।

 আবহ সংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব। পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত বলেন, ‘সিনেমাটি নির্মাণ করতে আজ থেকে তিন বছর আগে গিয়েছিলাম পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক জেলেপাড়ায়। খুবই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, উপকূলবর্তী সেই গ্রামটির এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই।

মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর আমার সেখানে যাওয়া হয়ে ওঠেনি; কিন্তু এবার যখন পরিচিত সেই জায়গার খোঁজে, প্রিয় সেই মানুষগুলোর খোঁজে গেলাম, গিয়ে দেখি সেখানে কেবলমাত্র কিছু গাছপালা ভেঙে পড়ে রয়েছে, জোয়ারের পানি উঠবে উঠবে ভাব। জানতে পারলাম এ অঞ্চলে গত দু-তিন বছর ধরে সমুদ্রের পানির উচ্চতা খুব দ্রুত গতিতে বাড়ছে। 

জোয়ারের তীব্রতা তো রয়েছেই। গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্পানও অনেক ক্ষতি করেছে।’ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, ‘নোনাজলের কাব্য’ প্রযোজনা করেছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ও ফরাসি প্রযোজক ঈলান জিরাদ। জিরাদ ‘মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইন’, ‘গুডবাই বাফানা’, ‘ফাইনাল পোর্ট্রেট’-এর মতো বিখ্যাত কিছু চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। 

সিনেমাটির সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাসরত থাই শিল্পী চানানুন চতরুংগ্রোজ। ছবিটি এর আগে লন্ডন, বুসান, গুটেনবার্গ, সাওপাওলো, তুরিন, সিয়াটেল, সিঙ্গাপুরসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। 

‘নোনা জলের কাব্য’ এবার যাচ্ছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন COP26-এ। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে অনুষ্ঠিতব্য গুরুত্বপূর্ণ এ আসরে ৮ নভেম্বর আইম্যাক্স থিয়েটারে দেখানো হবে বাংলাদেশের এই চলচ্চিত্র। এ সম্মেলনে পৃথিবীর প্রায় সব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানে অংশগ্রহণ করবেন। যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। 

অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু বলেন, ‘সিনেমায় চেয়ারম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। আমি আশাবাদী সিনেমাটি আমাদের দেশের চলচ্চিত্র আঙিনায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। আমি আপামর সিনেমাপ্রেমীদের অনুরোধ করবো, আপনারা সিনেমা হলে যাবেন এবং আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি করা এই ছবিটি বড়পর্দায় দেখবেন।’