ডিসেম্বর ২০, ২০১৪, ১১:১২ এএম
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহে আওয়ামী ছাত্রলীগ সজিব গ্রুপের সাথে আওয়ামীলীগ আফু গ্রুপের এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নুর ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে ।
এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কমপক্ষে ১০জন আহত হয়েছে। আহতদেরকে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ২জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় সজিব গ্রুপের লোকজন আফু গ্রুপের প্রায় অর্ধ শতাধিক ঘরবাড়ী ভাংচুর, লুটপাট করে অগ্নি সংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তাদের উপস্থিতিতেই এই ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে ক্ষতিগ্রস্থরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় পোড়াদহের শ্মশান বাজার এলাকায় রেল লাইনের উপর বিশ্বাস গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতা সজিব বসে গল্প করার সময় একই এলাকার মালিথা গ্রুপের আওয়ামী লীগ নেতা আফু তাদেরকে বাঁধা দেয়। এ সময় সজিবের সাথে আফুর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আফু ঘটনাস্থল থেকে চলে আসে। পরে ১০/১২জনকে সাথে নিয়ে আফু পুনরায় ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং সজিব গ্রুপের উপর হামলা চালায়। এ সময় দু’গ্রুপই ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় আধা ঘন্টা সংঘর্ষ চলাকালে সজিব গ্রুপের সজিবের পিতা নুর ইসলাম সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সে মারাত্মক আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসার এক পর্যায় সে মারা যায়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমবেশী ১০ জন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে সজির গ্রুপের সজিব(২৫), নুহু বিশ্বাস(৪০) আফু গ্রুপের আফু(৩৮) ও সোহেল(৪০)কে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ২জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
নুর ইসলামের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বাস গ্রুপের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শুক্রবার রাত থেকে শুরু করে শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত এলাকায় তান্ডবলিলা। এ সময় মালিথা গ্রুপ আফুর সমর্থিত লোকজনের প্রায় অর্ধশতাধিক লোকজনের ঘরবাড়ী ভাংচুর, লুটপাট করে পেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ভষ্মিভুত করে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থরা অভিযোগ করেছে। এলাকার মানুষ তাদের সহায় স্ববল ফেলে রেখে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে। অসহায় মানুষদের কান্নায় এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠলেও তাদের দেখার মত কেউ নেই। সোনা-দানা, টাকা-পয়সা, থালা-বাটি, ধান-চাল, কাপড়-চোপর সবই লুট করাসহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ যেন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেউ হারমানিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলেও পুলিশের উপর ভরসা না পেয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে।