Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

একবিংশ শতাব্দীর বড় চ্যালেঞ্জ বেকারত্ব

রায়হান আহমেদ তপাদার

সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১, ০৭:০০ পিএম


একবিংশ শতাব্দীর বড় চ্যালেঞ্জ বেকারত্ব

করোনার আতঙ্ক প্রতিটি মুহূর্ত যেন তাড়া করছে। একেকটি দিন পার করা যেন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোটা বিশ্বে শুধু আক্রান্ত আর মৃত্যুর হারই বাড়ছে না, মানুষের স্বাভাবিক জীবন-জীবিকাও হুমকির মুখে পড়ছে। স্থবির হয়ে পড়েছে কর্মসংস্থানের পথ। বাড়ছে অর্থসংকট। ইতোমধ্যে ভাটা পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। এ মন্দা স্বাভাবিক হতে কত দিন লাগবে, তাও বলতে পারছেন না কেউ।

বাংলাদেশের অন্তত ৬০ শতাংশ জনগোষ্ঠী তরুণ কর্মক্ষম। যাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০। বিশাল এই জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কর্মে সক্ষম নতুন যোগ হওয়াদের মধ্যে অর্ধেক থেকে যায় বেকার। আবার অদক্ষ, অল্প দক্ষদের বড় অংশ কাজ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। এমন বাস্তবতায় করোনার হানা অনেকটা ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।

এলোমেলো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গেলো ক’মাসে কর্মহীন, চাকরি হারানো বা বিদেশ ফেরত লোকের সংখ্যা আরো বেড়েছে। করোনায় মৃত্যুর পাশাপাশি দেশে দরিদ্র ও বেকারের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, মহামারি আকারে করোনা শুরু হওয়ার আগে দেশে বেকারের সংখ্যা ছিলো ২৭ লাখ। এ সময় আয় করার মতো কাজে যুক্ত ছিলো ৬ কোটি ৮ লাখ মানুষ।

এদিকে প্রায় দুবছর ধরে চলমান করোনার মধ্যে কাজ বা চাকরি হারিয়েছে অন্তত ৩০ শতাংশ মানুষ। সে সাথে আয় কমেছে ৭০ শতাংশ মানুষের। তাছাড়া করোনার আগে দেশে দারিদ্র্যের হার যেখানে ছিলো ২০ শতাংশ, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশ।

বিশ্লেষকরা সরকারের দেয়া এ পরিসংখ্যানকে অবশ্য সঠিক মনে করেন না। তাদের মতে, বেকার ও দারিদ্র্য উভয় হারই অনেক বেশি। ওদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও জানিয়েছে, বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে অন্তত ২৫ শতাংশই বেকার, যাদের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি।

এমনকি করোনাকালে ঠিক কত মানুষের চাকরি বা কর্মসংস্থান হয়েছে— সে ব্যাপারেও প্রকাশিত রিপোর্টে সংশয়ের প্রকাশ ঘটেছে। উদাহরণ দিতে গিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত তিন অর্থবছরে অন্তত ৩০ লাখ মানুষকে চাকরি দিয়ে বিদেশে পাঠানো সরকারের পরিকল্পনা ছিলো। অন্যদিকে বাস্তবে এক লাখেরও কম মানুষকে পাঠাতে পেরেছে সরকার। বিদেশ থেকে চাকরি হারিয়ে বরং কয়েক লাখ মনুষ দেশে ফিরে এসেছে।

এদিকে দেশের ভেতরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার ক্ষেত্রেও সরকার সফল হতে পারেনি। স্বাভাবিক সময়ে সরকারি ও বেসরকারি খাতে প্রতি বছর অন্তত ৭ লাখ মানুষের চাকরি বা কর্মসংস্থান হয়ে থাকে। কিন্তু করোনার কারণে সব মিলিয়েও এক লাখ মানুষের চাকরি হয়নি। বরং চাকরি হারিয়েছে বহু নারী-পুরুষ। এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই তথ্যাভিজ্ঞরা মনে করেন, সব মিলিয়ে ৮ কোটিরও বেশি মানুষ বর্তমানে বেকার বা কর্মহীন রয়েছে। সরকারের থিংক ট্যাংক হিসেবে পরিচিত সংস্থা পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ জিইডি এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর দেয়া পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে প্রকাশিত রিপোর্টে তথ্যটি জানানো হয়েছে।

সংস্থা দুটি এক রিপোর্টে জানিয়েছে, বাংলাদেশের ৩৬ দশমিক এক শতাংশ মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। এ রিপোর্টের ভিত্তিতে অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে উন্নয়ন তথা দারিদ্র্যের ধারণাগত পরিবর্তন হয়েছে। নতুন ধারণা অনুযায়ী শুধু প্রবৃদ্ধিনির্ভর উন্নয়ন হলেই চলবে না, বৈষম্য কমিয়ে এনে সাম্যের ভিত্তিতেও উন্নয়ন করতে হবে। আর এজন্য জীবনযাত্রার অনেক কিছুকেই বিবেচনায় নিতে হবে। তাই একবিংশ শতাব্দীর কাজের জন্য যেসব বিষয়ে দক্ষতার প্রয়োজন হবে, পরবর্তী প্রজন্মের তরুণদের সেসব বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্য বেশ কয়েকটি অঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়া পিছিয়ে রয়েছে। এছাড়া এক্ষেত্রে ভবিষ্যতের যে পূর্বাভাস রয়েছে, সেখানেও বৈশ্বিক গড় অবস্থানের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়া অনেকটা পিছিয়ে।

২০৩০ সালে শিক্ষার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার সবগুলো দেশের সম্ভাব্য অবস্থা নিয়ে গত বছর এডুকেশন কমিশনের সঙ্গে মিলে ইউনিসেফ যে হিসাব দাঁড় করিয়েছিল, তার ওপর ভিত্তি করেই এটা তৈরি করা হয়েছে। প্রতিদিন দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় এক লাখ তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করে, যাদের একত্রিত করলে একটি বিশাল খেলার মাঠের সমান হবে। এদের প্রায় অর্ধেকই একবিংশ শতাব্দীর কাজের জন্য সঠিক পথে নেই। দক্ষিণ এশিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছে, যেখানে সীমিত সময়ের জন্য তাদের মেধাবী ও সক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে জনসংখ্যাগত উল্লেখযোগ্য সুবিধা তুলে নেয়ার সুযোগ রয়েছে।

সঠিকভাবে এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। আর এক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে, তরুণদের মধ্যে হতাশা বাড়বে এবং মেধাগুলো হারিয়ে যাবে। ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ওপর ভর করে দক্ষিণ এশিয়ার মোট জনসংখ্যা ১৮০ কোটি। এ জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেকের বয়স ২৪ বছরের কম হওয়ায় ২০৪০ সাল পর্যন্ত বিশ্বে সবচেয়ে বেশি তরুণ জনশক্তি থাকবে দক্ষিণ এশিয়ায়।

এ সুযোগ এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত ও উৎপাদনমুখী অর্থনীতির পথে চালিত করার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ জোরদার করা হলে এ অঞ্চলে শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে এবং একই সঙ্গে আগামী দশকগুলোয় শিক্ষা ও দক্ষতা খাতে সুযোগ প্রসারিত হবে।

তবে দক্ষিণ এশিয়ার ৩২ হাজার তরুণ-তরুণীর ওপর পরিচালিত ইউনিসেফের ‘ভয়েসেস অব ইয়ুথ’ শীর্ষক সাম্প্রতিক জরিপে ২৪ বছরের কম বয়সী এই তরুণদের আধুনিক অর্থনীতির জন্য কতটা ভালোভাবে তাদের প্রস্তুত করা হচ্ছে, তা নিয়ে তাদের উদ্বেগ উঠে এসেছে। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার অনেক তরুণ মনে করে তাদের শিক্ষাব্যবস্থা সেকেলে এবং এটা কর্মসংস্থানের জন্য তাদের তৈরি করে না।

এমনকি স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করার পরও কর্মসংস্থান খুঁজে পেতে মূল বাধা হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতার ঘাটতি (২৬ শতাংশ), নিয়োগযোগ্যতা উন্নয়নে অপর্যাপ্ত সহায়তা সেবা (২৩ শতাংশ কোনো সহায়তা পায় না এবং বেশিরভাগই সমন্বিত সেবার পরিবর্তে খুবই সীমিত পরিসরে সেবা পায়) এবং ঘুষ কিংবা বৈষম্যমূলক আচরণ ও অন্যায়ভাবে বা পক্ষপাতদুষ্ট নিয়োগের প্রচলিত ব্যবস্থার (৪৪ শতাংশ) কথা উল্লেখ করে। গ্লোবাল বিজনেস কোয়ালিশন ফর এডুকেশনের নির্বাহী পরিচালক জাস্টিন ভ্যান ফ্লিট বলেন, এটি একটি সংকট।

দ্রুত বদলে যাওয়া শ্রমবাজারে সফলতার সঙ্গে প্রবেশের জন্য পরবর্তী প্রজন্মকে সবচেয়ে ভালোভাবে তৈরি করতে দক্ষিণ এশিয়ার তরুণদের দক্ষতায় যে ঘাটতি রয়েছে, তা নিরসনে সরকারি বিনিয়োগ, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতিশ্রুতি, নাগরিক সমাজের অবদান এবং তরুণ জনগোষ্ঠীর সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিষয়গুলোকে সমান গুরুত্ব দিয়ে আর্থসামাজিক খাতের মোট ১১টি সূচকের মাধ্যমে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের সূচক তৈরি করা হয়েছে। এ ১১টির পাশাপাশি শিশু অধিকার-সংক্রান্ত চারটি সূচকও ব্যবহার করা হয়েছে।

অর্থনীতিবিদসহ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলাদেশে এখনও ভোগ ব্যয় হিসেবে দারিদ্র্যের হিসাব করা হলেও বিশ্বের বহু দেশেই বহুমাত্রিক সূচকে দারিদ্র্য মাপা হচ্ছে। একে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি আদর্শ মাপকাঠি বলা হয়। আর তার ভিত্তিতে গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে দরিদ্র্র মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। শুধু বাড়েইনি, করোনার কারণে এখনও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে।

উল্লেখ্য, ব্র্যাক ও বিআইডিএসসহ অন্য কয়েকটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কিন্তু জিইডি এবং পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবের সঙ্গে একমত হতে পারেনি। যেমন, বিআইডিএস জানিয়েছিল— করোনার কারণে দেশে দরিদ্র মানুষের হার বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। আর ব্র্যাক মনে করে, এই হার প্রায় ৩৯ শতাংশ।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, দারিদ্র্যের হার বেড়েছে ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ। লক্ষণীয় বিষয় হলো, শতকরা হিসেবে পার্থক্য থাকলেও সব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানই স্বীকার করেছে যে, করোনার কারণে বাংলাদেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। করোনা তথা লকডাউনের কারণে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আট কোটি ছাড়িয়ে যাওয়ার খবর অত্যন্ত ভীতিকর।

কারণ, এর প্রভাবে সমগ্র বিশ্বকেই বর্তমানে মহাসংকট পার হতে হচ্ছে। সংকটে পড়েছে ২১৩ রাষ্ট্র এবং প্রায় ৮০০ কোটি মানুষ। আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা আইএলওর হিসাবে, বিশ্বের ৫০ শতাংশ মানুষ একই সংকটের শিকার হয়ে চাকরি তথা জীবিকা হারাতে পারে। বাংলাদেশেও চাকরি হারিয়ে বেকার হতে পারে কয়েক কোটি মানুষ। বাস্তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আইএলওর আশঙ্কা সত্যও হতে শুরু করেছে। একই কারণে সরকারের উচিত গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্পমালিকের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব শিল্প-কারখানা চালু করার ও চালু রাখার এবং উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্যে তৎপর হয়ে ওঠা, যাতে নতুন করে আর কাউকে বেকার না হতে হয় বরং সব সেক্টরে মানুষের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।

আমরা আশা করতে চাই, সরকার সচেষ্ট হতে বিলম্ব করবে না এবং বাংলাদেশ করোনার মহাসংকটের পাশাপাশি দারিদ্র্য কাটিয়ে উঠতেও সক্ষম হবে। করোনার প্রভাবে সারা বিশ্বেই বেকার বাড়ছে। উন্নত দেশগুলোতে সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধার আওতায় থাকলেও নিম্ন আয়ের দেশগুলোর বেকাররা দরিদ্রসীমার নিচে নেমে যাবে।

এসব বলা হলেও বাস্তবে করোনা ভাইরাস অর্থনীতিকে কতটা ক্ষতি করতে পারে, সেটি অননুমেয়। কারণ ইতোমধ্যে বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলো অর্থনীতির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। কিন্তু মন্দার কবল থেকে পরিত্রাণ মিলছে না তাদেরও।

বিবিএসের হিসাবে ২০১৯ সাল শেষে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল সাড়ে ২০ শতাংশ। সম্প্রতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম এক গবেষণায় বলেছে, যদি পরিস্থিতি এরকম চলতে থাকে, সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের আয় ২৫ ভাগ কমে গেলে দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আরো ২০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে কোনো দুর্যোগ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ওপরই সবার আগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। করোনার অভিঘাতও এই শ্রেণির শ্রমিকদের ওপরই প্রথমে পড়েছে। অথচ দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এই অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের রয়েছে বড়ো ভূমিকা। আর দুর্যোগ কেটে গেলেও যে কাজে ফিরবেন, সে নিশ্চয়তাও নেই তাদের। এজন্য কাজ হারানো এই মানুষগুলো রয়েছে বেশি ঝুঁকিতে।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে বেকারত্বের হার বেশি। শিক্ষিত তরুণরা দেশের বোঝা নয়, মূলত দেশের সম্পদ! বেকার নারী-পুরুষ হন্যে হয়ে কাজ অনুসন্ধান করছে; কিন্তু পাচ্ছে না। পিতা-মাতা হয়তো পড়াশোনা শেষ করা ছেলে বা মেয়েটির পথ চেয়ে বসে আছেন কখন তারা পরিবারে সচ্ছলতা বয়ে আনবে এবং তাদের মুখে হাসি ফোটাবে। বেকারের নীরব কষ্ট-যন্ত্রণা কেউ অনুভব করতে পারে না, কেউ বোঝে না বা বুঝতে পারে না তাদের মনের অনুভূতি, লুকানো কষ্ট-যন্ত্রণা।

দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সেশনজট, জরাজীর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা ও সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ না নেয়ার কারণে দিন দিন বেকারত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। ইউনেস্কোর এক গবেষণামতে, শিক্ষা হলো দারিদ্র্য বিমোচনের প্রধান শর্ত। আমাদের দেশে যে শিক্ষাব্যবস্থা চালু আছে, তা শিক্ষিত জাতির কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণ করতে কতটা ভূমিকা রাখছে— তা ভেবে দেখার প্রয়োজন।

লেখক : গবেষক ও কলামিস্ট