Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

আফগানিস্তানে তালেবান সরকার এবং অতঃপর

লে. কর্নেল মো. রুহুল আমীন (অব.)

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১, ০৭:০০ পিএম


আফগানিস্তানে তালেবান সরকার এবং অতঃপর

বিশ্ব মিডিয়ায় এখন সবচেয়ে আলোচিত প্রসঙ্গ আফগানিস্তানে তালেবানের ঝড়ো বিজয় এবং গ্লানিময় পরাজয় বিশ্বের এক নম্বর পরাশক্তি আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রের। বিস্ময়ে হতবাক সবাই। দখলদার আমেরিকান নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর কাছেও এটি অকল্পনীয় ছিলো।

খোদ তালেবানও বুঝতে পারেনি এত সহজে বিনারক্তপাতে এত দ্রুত ন্যাটো বাহিনীর দখলে থাকা রাজধানী কাবুল তাদের দখলে আসবে। মাত্র তিন মাসে একের পর এক শহর ও প্রদেশ দখল করে তারা এত দ্রুত কাবুলে পৌঁছাতে পারবে এটি কেউই আশা করেনি।

এমনকি নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই আমেরিকান বাহিনী কাবুল ত্যাগ করে রাতের অন্ধকারে স্থানীয় সময় রাত ১২টা বাজার ১ মিনিট আগে। তাদের আরো শতাধিক এবং যুক্তরাজ্য ও জার্মানির দুই-তিন শতাধিক সেনা শেষ বিমানটি ধরতে পারেনি। এরই মধ্যে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ থেকে পালিয়ে যান।

ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত আমেরিকান-তালেবান বৈঠকে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তার ধারাবাহিকতায় ৩১ আগস্ট ২০২১ এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র কাবুল তথা আফগানিস্তান ছেড়ে যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয় এবং তাদের বাহিনী ও আফগান দোসররা বিদায় নেয়া পর্যন্ত কাবুল বিমানবন্দর তাদের অধীনে থাকবে। তালেবানরা তা পালন করেছিল। এই বিদায়ের মাধ্যমে ২০ বছরের ব্যর্থ সামরিক অভিযানের চূড়ান্ত সমাপ্তি ঘটে।

এই নীরব বিদায়ে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ আহত হয়েছে। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিজা রাইসের ভাষায়, ‘আফগানিস্তানে আমেরিকার নাক কাটা গেছে’। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ জন্য বিপুলভাবে সমালোচিত হয়েছেন। এই অভিযানে মার্কিন বাহিনীর প্রায় তিন হাজার সেনা নিহত এবং আরো ২০ হাজারের বেশি আহত হয়।

অনুরূপভাবে ব্রিটিশ বাহিনীর ৫০০ এবং অন্যান্য ন্যাটো সদস্যের কয়েক হাজার নিহত ও আহত হয় তালেবানদের হাতে। আর তালেবান বাহিনীর প্রায় ৮৫ হাজার নিহত এবং ৭০ হাজার আহত হয়। বিপুল সাধারণ মানুষ নিহত ও আহত হয়। অনেক বাড়ি— স্থাপনা ধ্বংস হয়। এছাড়া, কয়েক লাখ বেসামরিক আফগান নিহত এবং প্রায় ৮০ হাজার পুলিশ ও সরকারি সেনাসদস্য নিহত হয়।

২০ বছরে তালেবানদের তো ধ্বংস করতে পারেই নি বরঞ্চ তালেবান বাহিনী নিয়ত মার্কিন বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলো এবং তাদের কয়েকগুণ শক্তি বৃদ্ধি হয়। শহরের বাইরে তালেবানরাই নিয়ন্ত্রণ করতো। এই ২০ বছরে মার্কিন লালিত তিন লাখ আফগান সেনাবাহিনী পুষতে এবং অন্যান্য খাতে তাদের খরচ হয় প্রায় তিন ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু এক লাখেরও কম তালেবান বাহিনীর কাছে সরকারি বাহিনী ছিলো নস্যি মাত্র। তালেবানের জয়ে তাসের ঘরের মতো উড়ে গেলো সেই বাহিনী। তারা ভাড়াটে বাহিনীর মতো পালিয়ে বাঁচলো। পঞ্জশির বা পঞ্জশির প্রদেশ ব্যতীত পুরো আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট ২০২১-এর মধ্যে তালেবানের দখলে আসে। শেষ পর্যন্ত তুমুল সংঘর্ষের পর তাও দখলে চলে আসে।

পাহাড় ও উপত্যকাময় ও তাজিক প্রধান পঞ্জশিরের প্রাণপুরুষ আহমেদ শাহ মাসুদ ও তার পুত্র আহমেদ মাসুদের দখলেই বরাবর ছিলো। এরপরই তালেবান সরকার গঠন করে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয় (৭ সেপ্টেম্বর ২০২১)। আফগানিস্তানে এটি তালেবানের দ্বিতীয় সরকার। তারা প্রথম সরকার গঠন করে ১৯৯৬ সালে সোভিয়েত রাশিয়ার বিদায়ের পর যা পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলো।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান অভিযানে আসে ২০০১ সালে ‘নাইন-ইলেভেন’ বা ‘৯-১১’ নামে এবং টুইন টাওয়ার নামে খ্যাত নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বীভৎস সন্ত্রাসী হামলার পর। আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন এই হামলা পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেছে এই অভিযোগ তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের দাবি করে আফগানিস্তানের কাছে। কিন্তু তৎকালীন তালেবান সরকার প্রমাণ ব্যতীত তা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়।

এরপরই শুরু হয় আফগান অভিযান। জড়িয়ে পড়ে স্থলযুদ্ধে। তালেবান সরকারের পতন হয়, কিন্তু তালেবানের পতন হয়নি। ১০ বছর পর ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের একটি বাড়িতে আমেরিকান বাহিনী লাদেনকে হত্যা করে। সে এক ভিন্ন ইতিহাস। কিন্তু এরপর আরো ১০ বছর যুদ্ধে আটকা পড়ে মার্কিন বাহিনী। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তান উভয়ে। তালেবান অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে এবং যুক্তরাষ্ট্র ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থায় পৌঁছে।

২০১৩ সাল থেকেই তালেবানের সাথে তাদের যোগাযোগ শুরু হয়। কিন্তু অগ্রগতি হয়নি। অবশেষে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদায়ের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা ৩০ আগস্ট বাস্তবায়িত হয়। তালেবান পরমুহূর্তেই রাতভর বর্ণিল বিজয় উৎসব করে। জনগণের বিজয় হয়। আফগানরা কখনো বিদেশি শক্তিকে মেনে নেয়নি। কয়েকবারে ৪০ বছরের ব্রিটিশ শাসন শেষে ১৯১৯ সালে  স্বাধীন হয় সোভিয়েত রাশিয়ার ১০ বছরের দখল এবং শেষে মার্কিন ও মিত্রবাহিনীর অভিযান কোনোটার কাছেই আফগানরা নতি স্বীকার করেনি।

মহিলাদের শরিয়াহ আইন মেনে উচ্চশিক্ষা ও পেশাগত কার্যক্রম চালাবে। সরকারের ধরন দেখেও তাই বোঝা যাচ্ছে। নতুন সরকারে কট্টরপন্থিদেরই প্রধান্য রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখন্দ সরকার প্রধান থাকলেও ইরানের আয়াতুল্লাহ খামেনির মতো সুপ্রিম কমান্ডার হিসেবে রাজনৈতিক, সামরিক ও ধর্মীয় শাখার প্রধান থাকছেন হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদা, মন্ত্রিসভায় কোনো নারী স্থান পাননি।

অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণার আগে তালেবান বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ও বাহিনী নেতা এবং অন্যান্য জাতি-গোষ্ঠীর সাথে আলোচনা করেছিল একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক সরকার গঠনের, কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি। পাঞ্জশির দখলকারী আহমেদ মাসুদ বাহিনীর সাথেও জোর আলোচনা করা হয়েছিল যাতে তারা আত্মসমর্পণ করে এবং সরকারে অংশ গ্রহণ করে। তাও ভেস্তে য়ায়। অবশেষে তুমুল যুদ্ধে তা নির্ধারিত হয়। অবশ্য এতে অনেক তালেবান সেনা নিহত ও আহত হয়।

বর্তমান সরকারে পশতুনদেরই প্রধান্য বজায় রয়েছে। তালেবান মূলত পশতুনদেরই প্রতিনিধি যারা সমগ্র জনগণের ৪২ শতাংশ। তারপর রয়েছে তাজিক (২৩ শতাংশ), হাজারা (১০ শতাংশ) এবং উজবেক (৯ শতাংশ)। এর প্রত্যেকটিরই রয়েছে গোত্র-উপগোত্র যেমন রয়েছে সোমালিয়ায় যার ফলে কোনো দলই সোমালিয়ায় স্থায়ী সরকার গড়তে পারেনি। সেখান থেকেও মার্কিন বাহিনী বিদায় নিয়েছে তবে ফেলে গিয়েছে অস্থিতিশীল সরকার।

আফগানিস্তানের ক্ষেত্রেও এমন আশঙ্কা রয়েছে। এক সময়ের তালেবান বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যেসব সংগঠন মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল তাদের অনেকেই বেঁকে বসেছে এবং এই সব দল-উপদল ও গোত্র-উপগোত্রকে এক টেবিলে বসানো তালেবানের পক্ষে কতটুকু সম্ভব তা দেখার বিষয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েকজন মন্ত্রী সন্ত্রাসী ভূমিকার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ‘মোস্ট ওয়ানেড’ বা কালো তালিকাভুক্ত রয়েছে। এরপরে যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে কিরূপ আচরণ করে তাও দেখার বিষয়।

বিশ্বব্যাপী বলা হচ্ছে যে ২০ বছরের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয় হয়েছে। আসলে কি তাই? মার্কিন সিনেটে এবং মিডিয়ায় জো বাইডেনকে এজন্য দায়ী করা হয়। যে ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের আফগানিস্তান ত্যাগের চুক্তি করেছিল তালেবানের সাথে গত বছর, তিনিও বাইডেনের কড়া সমালোচনা করেছেন। তাদের কথা হলো, এত তড়িঘড়ি করে কেন আমিরিকান ও মিত্রসেনারা আফগান ত্যাগ করলো, আরো সময় নিয়ে করলে ভালো হতো। কেননা তালেবান যখন কাবুল বিমানবন্দর অবরোধ করলো তখন বিমান বন্দরে হৈহুল্লোড় ও বিশৃংখলা লেগে গেলো।

তালেবান আতংকে আফগানরা দেশ ত্যাগ করার জন্য বিমান বন্দরে প্রচণ্ড ভিড় করছিল। মিত্র সেনাদের সাথে আফগানিস্তানের মার্কিন দোরসদের এবং সরকারি সেনাদেরও অপসরণ করা হয়েছিল। একটা বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টি হলো তাই মধ্যে আত্মঘাতী জোড়া বোমা হামলা। শেষ পর্যন্ত কিছু মার্কিন ও ন্যাটো সেনাও বিভিন্ন ঘাঁটি থেকে বিমান বন্দরে পৌঁছাতে পারেনি। তারা ৩০ আগস্টের পর আফগানিস্তানেই রয়ে যায়। তাই আসা করা হয়েছিল আরো কিছুদিন সময় নিলে সবাইকে আফগানিস্তান ত্যাগ করার সুযোগ হত।

কিন্তু বাইডেন তা করেননি, এর যথেষ্ট যুক্তি ছিলো। যে নাজুক পরিস্থিতিতে তারা বিদায় নিয়েছে তা আরো খারাপ হতে পারতো। যেখানে সারা আফগানিস্তান তালেবানের দখলে চলে গেছে, কাবুল বিমানবন্দর অবরুদ্ধ ছিলো এবং বোমা হামলা হয়েছিল সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারতো, আরো বোমা হামলা এবং গোলা বিনিময় হতে পারতো। শুধু চুক্তির কারণে তালেবান বিমানবন্দরে ঢুকেনি যাতে মার্কিন বাহিনী ও সঙ্গী-সাথীরা নিরাপদে অপসারিত হতে পারে। ওদিকে চুক্তির মেয়াদও শেষ, এর পর থাকলে কি হতো তা অনুমান করা সহজ ছিলো না।

তাই বাইডেন মানে মানে আফগানিস্তান ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। আপাতদৃষ্টিতে মার্কিন পরাজয় দৃষ্ট হলেও তা সাময়িক। ২০ বছরে তাদের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, সামরিক-বেসামরিক লোক ক্ষয় হয়েছে। কিন্তু তারা এই দীর্ঘ সময়ে আফগানিস্তান অর্থাৎ একটি মুসলিম রাষ্ট্রকে পদানত করেছে এবং বেসামাল আবস্থায় রেখে গিয়েছে। আফগান তরুণদের পশ্চিমা সংষ্কৃতিতে রূপান্তরিত করেছে।

মেয়েদের ঘরের বাইরে এনেছে, নিজস্ব দালাল সৃষ্টি করেছে যা তালেবানকে সামলাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। ইতোমধ্যে তালেবান বিরোধীরা এবং নব্য তরুণ-তরুণীরা আন্দোলন-মিছিল করছে। এসব মার্কিন দখলদারিত্বের ফল। সর্বোপরি তালেবান সরকার আর্থিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন। বিদায়ের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা চলমান আর্থিক সাহায্য বন্ধ রেখেছে।

 যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থও আটকে দিয়েছে। এমনিতেই আফগানিস্তান একটি দরিদ্র দেশ। তার উপর যুদ্ধের বিধ্বস্ততা। এটি তালেবানদের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আফগানিস্তানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। আরেকটি বিষয় হলো, মার্কিনিরা যুদ্ধ করে অন্য দেশে, নিজেদের দেশে করে না। তাই তাদের আক্রমণে প্রতিপক্ষের যা মৃত্যু হয় তার বেশি হয় সাধারণ জনগণের। সাধারণত তারা নিজেরা যুদ্ধ করেনা, দোসর বাহিনী তৈরি করে তাদের দিয়েই তাদের দেশ ধ্বংস করে। সোমালিয়া, ইরাক, লিবিয়া এবং অন্যান্য দেশে তারা তাই করেছে। অতএব তাদের ক্ষতি তো সীমিত।

আর এই যে দোসর বাহিনীর মাধ্যমে বিষবৃক্ষ তৈরি করে গেলো তারা নিয়ত দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে। পৃথিবীর তাবৎ সাম্রাজ্যবাদী শাসকগোষ্ঠী তাই করে যেমন করেছিল ব্রিটিশ ও রাশিয়ানরা। তারা দেশটাকে নিজস্ব দৃষ্টি-মূল্যবোধ ভুলিয়ে তাদের কৃষ্টি তৈরি করে দিয়ে যায়। এই উপমহাদেশে তাই হয়েছে। এখনো আমরা সেই ধারায় মজে আছি।

তিন লাখ আফগান বাহিনী কোথায়? তারা অনেকে অপসারিত হয়েছে, অনেকে পালিয়েছে, অনেকে বিদ্রোহী বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। এরাও তো আফগান। লাখ লাখ আফগান উদ্ধাস্তু হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  বিভিন্ন দেশকে অনুরোধ করছে উদ্বাস্তু গ্রহণে। এরাও তো মার্কিন অনুগত। তাদের নিজের দেশেও যারা গিয়েছে তাদেরকেও অন্য দেশে পাঠানোর চেষ্টা করছে।

উগান্ডাকে রাজি করেছে ২০ হাজার উদ্বাস্তু গ্রহণে। তারা যে মিশন নিয়ে আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়েছে, তা ঠিকই অর্জিত হয়েছে। তারা তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, অনুগত সেনাবাহিনী তৈরি করেছে, আধুনিক শিক্ষার মাধ্যমে পশ্চিমা কৃষ্টি চালু করেছে, ইসলামি মূল্যবোধকে ব্যহত করেছে, আল-কায়েদাকে সাইজ করেছে, মোল্লা ওমর ও ওসামা বিন লাদেনকে খতম করেছে, আরো কত কি।

জর্জ ডব্লিউ বুশ (জুনিয়র) আফগান অভিযান শুরু করেছে, বারাক ওবামা লাদেনকে হত্যা করেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প তালেবানের সাথে শান্তি চুক্তি করেছে, আর জো বাইডেন তা কার্যকর করেছে। এ তো তাদের পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা, কে জানে এক সময়কার তাদের সৃষ্ট ও মদদপুষ্ট তালেবান আজ শত্রু হলেও কাল মিত্র হবে না। আফগানিস্তানের ভূরাজনৈতিক অবস্থান এবং শক্তিমানদের প্রতিযোগিতার ফলাফল ভবিষ্যতই বলবে।

লেখক : সাবেক অধ্যক্ষ ও কলামিস্ট