Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

সড়কে চাপ কমাতে নৌপথকে গুরুত্ব দিন

জানুয়ারি ২৪, ২০২২, ০৮:২৫ পিএম


সড়কে চাপ কমাতে নৌপথকে গুরুত্ব দিন

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। বহুকাল ধরে এ দেশের প্রধান পরিবহন পথ ছিল নৌপথ। কিন্তু উন্নয়ন ও আধুনিকতার প্রভাবে এই পথ তার গৌরব হারিয়েছে। বর্তমানে সড়ক পরিবহনের ওপর চাপ কমাতে হলে নৌপথে গুরুত্বারোপ করতে হবে। নৌপথের উন্নয়ন ঘটালে তা যেমন সাশ্রয়ী হবে, তেমনি সড়কের ওপর চাপ কমবে। এতে দুর্ঘটনার পরিমাণও কমে যাবে। নৌপরিবহন অবাধ ও নির্বিঘ্ন হলে পরিবহন ব্যয়ও কমবে।

জানা যায়, সারা দেশে এখনো রয়েছে প্রায় ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ। এ নৌপথকে বাঁচিয়ে রাখার প্রথম শর্ত নাব্য সংকট দূর করা। এ দায়িত্বটি সঠিকভাবে পালন করা গেলে আমাদের অর্থনীতি আরও মজবুত হতে পারে।

অবশ্য এটি স্পষ্ট যে, নৌচলাচল চালু রাখা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে। গত ২৫ বছরে নৌপথের পরিমাণ কমেছে কয়েক হাজার কিলোমিটার। একদিকে কমছে পানি, অন্যদিকে জেগে উঠছে চর। নৌচলাচল চালু রাখতে দেশের নৌপথে এখনই বড় আকারে ড্রেজিং প্রকল্প হাতে নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে তা সম্ভব হচ্ছে না। এটা কী শুধুই দীর্ঘসূত্রতা, নাকি এখানে সক্ষমতার প্রশ্নও জড়িত? 

বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম-ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ নৌপথের খননকাজ বা ড্রেজিং প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা। এতে অর্থায়ন করছে বিশ্ব ব্যাংক। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। সে সময় ২৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র ফরম সংগ্রহ করে এবং ১১টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। দরপত্র জমাদানকারী প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতাবিষয়ক কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ছয়টি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। 

পরবর্তী সময়ে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান তাদের চূড়ান্ত কাগজপত্র জমা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি এককভাবে ২২টি শাখা রুটসহ প্রায় ৯০০ কিলোমিটার নৌপথ ড্রেজিং করার মতো সক্ষম নয়— এ বিবেচনায় প্রথমবার আহ্বান করা দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। 

পরবর্তী সময়ে পুরো প্রকল্পকে তিনটি স্লটে ভাগ করে আবারও দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদনের টেকনিক্যাল বিষয় অনুমোদনের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে। দুটি প্রকল্পের অনুমোদনও পাওয়া গেছে। 

সেগুলো মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। একটি প্রকল্পের অনুমোদন এখনো পাওয়া যায়নি। আট বছর মেয়াদের এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের ৮ জুলাই। পরে প্রকল্পের সময়সীমা আরও এক বছর বাড়ানো হয়। 

সড়কপথের চাপ কমাতে সরকার নৌপথকে কাজে লাগাবে। এজন্য গৃহীত প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে— এটাই প্রত্যাশা।