Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪,

মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমা

জানুয়ারি ১৮, ২০১৫, ০৬:৫০ এএম


মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমা

 

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভ, মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনার মধ্যদিয়ে আখেরি মোনাজাত শেষ হয়েছে তুরাগতীরে।

পরকালে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় লাখো মুসল্লি চোখের জলে অংশ নেন মোনাজাতে। ‘ছুম্মা আমিন ছুম্মা আমিন’ বলতে বলতে বহু মুসল্লিকে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় তুরাগ ময়দানে।

বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে মোনাজাত শুরু হয়ে শেষ হয় ১১টা ৫৪ মিনিটে।

মোনাজাত পরিচালনা করেন ভারতের বিশিষ্ট মাওলানা মো. সা’দ। মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর অব্যাহত শান্তি, সুখ ও মঙ্গল কামনা করা হয়।

হেদায়েতের জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে ফড়িয়াদ করেন মুসল্লিরা। তারা ইহলৌকিক শান্তির পাশাপাশি পরকালে বেহেশত লাভের আশায় আল্লাহর অসীম রহমত কামনা করেন। জীবনের গুনাহখাত মাফ করার আবেদন জানান।

গত ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ইজতেমার প্রথম পর্বের মোনাজাত।

মোনাজাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামে তুরাগতীরে। ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ, সেই সঙ্গে তীব্র শীতের মধ্যে মুসুল্লিরা যেভাবে পারেন পৌছান টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে। টঙ্গী হয়ে উঠে সব পথের মোহনা।

আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে শনিবার রাত থেকে মুসল্লিগণ বাস, ট্রাক, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, ট্রেন ও ট্রলারে করে টঙ্গীতে আসা শুরু করেন। রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও আশপাশের জেলার কয়েক লাখ লোক ভিড় এড়াতে নানা ঝক্কিঝামেলা উপেক্ষা করে রাতেই টঙ্গীতে অবস্থান নেন। অনেকেই  মূল প্যান্ডেলে স্থান না পেয়ে  নিজ উদ্যোগেই প্যান্ডেলের বাইরে পলিথিন ও কাপড়ের শামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নেন। কেউ কেউ ইজতেমাস্থলের কাছে আত্মীয়-স্বজনের বাসাসহ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেন।

মোনাজাত প্রচারের জন্য গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের উদ্যোগে আব্দুল্লাহপুর ও বিমানবন্দর রোড পর্যন্ত এবং গাজীপুর জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে ইজতেমা ময়দান হতে চেরাগআলী, টঙ্গী রেল স্টেশন, স্টেশন রোড ও আশপাশের অলিগলিতে পর্যাপ্ত মাইক সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়।

আখেরি মোনাজাতকে ঘিরে যাতে কেউ কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা আর নাশকতা না ঘটাতে পারে সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয় গোটা ইজতেমা এলাকা। র‌্যাব-পুলিশ পোশাকি ডিউটির বাইরেও সাদা পোশাকে তারা কাজ করেছে প্যান্ডেরের ভেতর ও বাইরে। মোনাজাতের দিন অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়। ট্রাফিক ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়।

ভোর থেকে ঢাকা-ময়সিংহ মহাসড়কে টঙ্গী ব্রিজ থেকে ভোগড়া বাইপাস, টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে মীরেরবাজার পর্যন্ত সব যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়। ফজরের নামাজের পর থেকে ইজতেমা ময়দানে তাবলীগ জামাতের মুরুব্বীগণ সুবিশাল চটের প্যান্ডেলের নিচে অবস্থানরত দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লির উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করেন। আখেরি মোনাজাতের আগে কয়েক ঘন্টা ধরে এসব বিষয়ের বয়ান ছাড়াও হয়েছে হেদায়েতি বয়ান।

এদিকে, তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহৎ এ জমায়েতে দেশ বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। প্রথম দফায় আবহাওয়া অনুকূলে এবং শীত কম থাকলেও শেষ দফায় শনিবার বাদ ফজর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় মুসল্লিদের। শনিবার রাত থেকে ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়া শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয়। এতে দুর্ভোগের মাত্রাও বাড়ে। অন্যদিকে, ২০ দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচি মুসল্লিদের দুর্ভোগ কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে সবকিছু উপেক্ষা করে আল্লাহভক্ত মুসল্লিরা এসেছেন তুরাগের তীরে। ১৬০ একর ইজতেমা ময়দান পেরিয়ে মুসল্লিদের বিস্তৃতি এখন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের রাস্তায়।