Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

ইসলামে সালাম ও আল্লাহ হাফেজ সংস্কৃতি

মুফতি মোহম্মদ ইব্রাহিম খলিল

অক্টোবর ২৫, ২০২০, ০১:২৬ পিএম


ইসলামে সালাম ও আল্লাহ হাফেজ সংস্কৃতি

মহান আল্লাহর মনোনিত ইসলাম একটি সার্বজনীন ধর্ম। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলসহ সব ক্ষেত্রেই মেনে চলার জন্য ইসলাম দিয়েছে বিস্তারিত ও ভারসাম্যপূর্ণ বিধান। পরস্পরে দেখা-সাক্ষাৎ মানবজীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। তাই মানব সৃষ্টির সূচনা থেকেই মহান আল্লাহ তায়ালা একে অপরের প্রতি সম্ভাষণ করার পদ্ধতি জানিয়ে দিয়েছেন।

সর্বপ্রথম তিনি হজরত আদমকে (আ.) সালামের শিক্ষা দেন। হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করার পর আল্লাহ তায়ালা তাকে ফেরেশতাদের সালাম দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি সালাম দিলে ফেরেশতারাও সালামের উত্তর দেন।

মুসলিমগণ পরস্পর সাক্ষাতের সময় যে বাক্য দ্বারা পারস্পরিক ভালোবাসা-বন্ধুত্ব, শান্তি-নিরাপত্তা, কল্যাণ ও দোয়া কামনা করে, তারই নাম সালাম। কোনো মুসলমান ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে কথা বলার আগে সালাম দেওয়া প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) সুন্নত আর সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব।

সালাম শব্দটি মহান আলল্গাহতায়ালার নামগুলোর মধ্যে অন্যতম। মহান আল্লাহ তায়ালা সালামের গুরুত্ব বর্ণনায় এরশাদ করেছেন, সালামকারী সালামের মাধ্যমে যেরূপ শব্দ ব্যবহার করবে, তার চেয়ে উত্তমরূপে তুমি জওয়াব দেবে অথবা অনুরূপ শব্দই বলে দেবে, (সূরা নিসা ৮৬)। সুতরাং এর দ্বারা বোঝা গেল, কোনো ব্যক্তি সালাম দিলে তার জওয়াব দেওয়া ওয়াজিব আর তার সঙ্গে রহমত-বরকত ইত্যাদি শব্দ বলে উত্তর দেওয়া মুস্তাহাব।

হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলের (সা.) দরবারে একজন সাহাবি এসে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে বসে পড়লেন। রাসুল (সা.) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে দশটি নেকি পেয়েছে। তারপর আরেকজন সাহাবি এসে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুলল্গাহ’ বলে বসে গেলেন। রাসুলে করিম (সা.) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে ২০টি নেকি পেয়েছে। অতঃপর আরেকজন এসে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুলল্গাহি ওয়া বারাকাতুহু’ পর্যন্ত বলে বসে পড়লেন। রাসুলে করিম (সা.) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে ৩০টি নেকি পেয়েছে। হজরত মায়াজ ইবনে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত- চতুর্থ এক ব্যক্তি এসে ওয়া বারাকাতুহুর শেষে ‘ওয়া মাগফিরাতুহ’ বলে বসে গেলেন। রাসুলে করিম (সা.) তার উত্তর দিয়ে বলেন, সে ৪০টি নেকি পেয়েছে, (আবু দাউদ-তিরমিজি)।

আমাদের দেশে অনেককেই দেখা যায় তারা বিদায়ের সময় বা চলে যাওয়ার সময় খোদা হাফেজ বা আল্লাহ হাফেজ বলে থাকেন। বিদায়ের সময় এটা বলা কি ঠিক? সাক্ষাতের সময় যেমন সালাম দেয়া সুন্নত, তেমনি বিদায়ের সময়েও সালাম দিয়ে বিদায় নেওয়া সুন্নত। এ সম্পর্কে একাধিক হাদীস আছে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) ইরশাদ করেন- ‘’যখন তোমাদের কেউ কোন মজলিসে পৌছবে, তখন সালাম দিবে। যদি অনুমতি পাওয়া যায়, তবে বসে পড়বে। এরপর যখন মজলিস ত্যাগ করবে তখনও সালাম দিবে। কারণ প্রথম সালাম দ্বিতীয় সালম অপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ নয়। অর্থাৎ উভয়টির গুরুত্ব সমান।” [জামে তিরমিযী ২/১]

আমারসংবাদ/এমআর