Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

রাসুল [সা.] জীবনের শেষ সময়ের রমজান যেভাবে কাটিয়েছেন

জুলাই ১, ২০১৫, ০৪:০৬ পিএম


রাসুল [সা.] জীবনের শেষ সময়ের রমজান যেভাবে কাটিয়েছেন

 জীবদ্দশার শেষ সময়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানে অধিক আমল করতেন। হাদিসে পাওয়া যায়, রাসুল এ সময়ে এতেকাফে দ্বিগুণ সময় ব্যয় করতেন। আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন

كان النبي صلي الله عليه و سلم يعتكف في كل رمضان عشرة أيام، فلما كان العام الذي قبض فيه اعتكف عشرين يوماً.

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রমজানে দশ দিন এতেকাফে যাপন করতেন, যে বছর তার ঊর্ধ্বারোহন হয়, সে বছর তিনি বিশ দিন এতেকাফে যাপন করেন। [বোখারি : ১৯০৩।]

শেষ সময়ে তিনি দু বার জিবরাইল আ:-এর সাথে কোরআন সহপাঠ ও অনুশীলনে অংশ নেন। রাসুলের প্রিয়তমা কন্যা ফাতেমা রা. বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন : আমাকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোপনে জানালেন যে, জিবরাইল প্রতি বছর আমাকে একবার কোরআন শোনাতেন-শুনতেন, এবার তিনি তা দু বার করেছেন, একে আমি আমার সময় ঘনিয়ে আসার ইঙ্গিত মনে করছি। [বোখারি : ৩৬২৪।]

আবু হুরায়রা বর্ণিত হাদিসে উভয়টির উল্লেখ পাওয়া যায় এভাবে—তিনি বলেন:—

كان يعرض على النبي صلي الله عليه و سلم القرآن كل عام مرة، فعرض عليه مرتين في العام الذي قبض فيه، وكان يعتكف كل عام عشراً فاعتكف عشرين في العام الذي قبض فيه.

রাসুলকে প্রতি বছর একবার কোরআন পাঠ করে শোনান হত, যে বছর তার ঊর্ধারোহন হয়, সে বছর তাকে দু বার শোনান হয়। প্রতি বছর তিনি দশ দিন এতেকাফ করতেন, যে বছর তার তিরোধান হয়, সে বছর তিনি বিশ দিন এতেকাফ পালন করেন। [বোখারি : ৪৯৯৮।]

আল্লাহ তাআলার শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে যে জ্ঞাত হয়েছে, পেয়েছে আপন আত্মার পরিচয়, তার দারিদ্র্য, লাঞ্ছনা, সর্বক্ষেত্রে খালেকের মুখাপেক্ষিতা, উপলব্ধি করতে পেরেছে পার্থিবের ক্ষণস্থায়িত্ব, একে গ্রহণ করেছে পরীক্ষার স্থল হিসেবে এবং পরকালকে ভেবেছে চিরকালীন আবাস, ফলে রাসুলের অনুবর্তন ও কল্যাণ কর্মে সর্বাত্মক আত্মনিয়োগ হয়েছে তার ফলশ্রুতি, উপযোগিতা বিচারে সে গ্রহণ করেছে সময়ের সর্বাধিক কল্যাণকর সিদ্ধান্ত। বিশেষত: জীবনের দীর্ঘ বসন্ত যার অতিক্রান্ত হয়েছে ইতিমধ্যে, পৌঁছে গেছে পরকালগাহের সন্নিকটে, তার জন্য এ কর্ম পন্থা খুবই সময়োচিত—সন্দেহ নেই।

এই হচ্ছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আলোকিত-প্রকাশ্য জীবনের ক্ষুদ্র অথচ অনুসরণীয় কয়েকটি নিদর্শন, বরকতময় মহত্তম সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য রাসুল যাকে গ্রহণ করেছেন কর্মপদ্ধতি হিসেবে। এ হচ্ছে আল্লাহর সুদৃঢ় ঋজু পথ আঁকড়ে ধরবার আলোকবর্তিকা, এ পথ বিচ্যুত ব্যক্তি মাত্রই বিভ্রান্ত, অতলান্ত অন্ধকার গহবরে নিপতিত। রাসুল প্রদর্শিত সুন্নতের পথে ফিরে আসা ব্যতীত সে ক্রমাগত ঘুরপাক খাবে পথের বাকচক্রে।

হে আল্লাহ ! আমাদেরকে তৌফিক দান করুন আপনার আনুগত্য করার, রক্ষা করুন আপনার অবাধ্যতা হতে, দৃঢ়-অবিচল রাখুন দ্বীনের উপর ; রাসুলের সর্বাত্মক অনুসরণের সৌভাগ্যে ভূষিত করুন। আমিন।

মূল : ফায়সাল বিন আলী আল বাদানী
অনুবাদ : কাউসার বিন খালেদ