Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

নাজাতের প্রস্তুতি

জুলাই ৮, ২০১৫, ০৮:৫৪ এএম


নাজাতের প্রস্তুতি

  মুসলমানদের জন্য হিজরী বারো মাসের মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র মাস মাহে রমজান। এই মাসে পবিত্র কোরআন আল্লাহ্র কাছ থেকে নবী হযরত মুহম্মদ (দ.) এর মাধ্যমে মানব জাতির ওপর নাজিল হয়েছিল। বলা হয়, এই মাসে এবাদত করলে তা কবুল হয় এবং এই মাসে মহান আল্লাহরই সৃষ্টি মানবজাতিকে বিপথগামী করার কাজে নিয়োজিত শয়তানকে তিনি বন্দী করে রাখেন যাতে অন্তত এই মাসে মানুষ শান্তিতে ইবাদত বন্দেগি করতে পারেন। এই পবিত্র মাসটিকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দশ দিন রহমতের। অর্থাৎ এই দশ দিনে আল্লাহ মানুষকে রহমত বা করুণা করেন। দ্বিতীয় দশ দিন মাগফিরাতের। এই দশ দিন ক্ষমার। এই দশ দিনে মানুষের ওপর শান্তি বর্ষিত হয়। আর শেষের দশ দিন নাজাতের। এই দশ দিন মানুষ আল্লাহতালার কাছে দয়া ভিক্ষা করেন যাতে তাঁরা জাহান্নামের আগুন হতে দূরে থাকতে পারেন।  জনসংখ্যার দিক হতে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলমান প্রধান দেশ। আমাদের উপরে আছে ইন্দোনেশিয়া আর পাকিস্তান। অন্যান্য দেশের কথা ঠিক মতো না জানলেও এটি বলা চলে বাংলাদেশে দুই শ্রেণীর বকধার্মিক আছেন যাঁরা এই পবিত্র মাসের যথার্থ মূল্য উপলব্ধি করেন না। প্রথম শ্রেণীতে আছেন এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ী যাঁরা সারা বছর বসে থাকেন মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে পবিত্র রমজান মাসে নানাভাবে ঠকানোর জন্য। এরা সারা বছর নামাজ কালাম পড়েন না কিন্তু আকাশে রমজানের চাঁদ দেখা গেলেই মাথায় বাহারী টুপি পরে মানুষকে ঠকানোর ফন্দি-ফিকির তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এই দলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হতে বড় ব্যবসায়ী কেউ বাদ যান না। বছর কয়েক আগে হঠাৎ রমজান মাসে খুচরা বাজারে চিনির মূল্য রাতারাতি ৪২ টাকা থেকে ৭০ টাকায় উঠল। বাংলাদেশের একজন বড় মাপের চিনি আমদানিকারকের পরিচিত এক উর্ধতন কর্মকর্তার কাছে এই মর্মে জানতে চাইলে তখন তিনি অকপটে বলেন, যখন বাজারে চিনি ৪২ টাকায় বিক্রি হতো তখনও তারা কেজিপ্রতি দু’টাকা মুনাফা করতেন। রমজানের আগে তাদের মালিক অন্য আমদানিকারকদের যোগসাজশে পাইকারি বাজারে চিনি বিক্রি বন্ধ করে দিয়ে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করেন এবং সেই যাত্রায় বাজার হতে সাধারণ ক্রেতাদের ঠকিয়ে কয়েক শত কোটি টাকা তুলে নেন। এক এগারোর পর সেই ব্যবসায়ী জেলে গিয়েছিলেন কিন্তু তার চরিত্রের পরিবর্তন হয়েছে বলে তেমন কথা শুনিনি।
বাংলাদেশে আর এক শ্রেণীর মানুষ আছেন যাঁরা রমজান মাসে অন্যভাবে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করেন। এঁরা হচ্ছেন এই দেশের কিছু রাজনীতিবিদ। এঁরা এই মাসটিকে ইবাদত বন্দেগিতে ব্যবহার না করে এ সময় অশুভ রাজনীতি চর্চা করেন এবং তার জন্য দিনের সবচেয়ে পবিত্রতম সময় ইফতারকে বেছে নেন। এই সময়টাকে অত্যন্ত চতুরতার সাথে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি প্রতিবছর বেশ ভালভাবে ব্যবহার করে। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন দল, গোষ্ঠী আর বিদেশী কূটনীতিবিদদের জন্য ইফতার পার্টির আয়োজন করে এবং সেখানে বিএনপিপ্রধান বেগম জিয়া স্বয়ং উপস্থিত থাকেন আর রাজনৈতিক বক্তব্য রাখেন। যে দিন তাঁর দলের নিজস্ব কোন ইফতার পার্টি থাকে না সে দিন তিনি তাঁর অন্যান্য শরিক দলের ইফতারে যোগ দেন। কাগজে-কলমে বেগম জিয়া এখন বিশ দলের নেত্রী। বেশিরভাগই হোন্ডা পার্টি, মানে ওয়ান ম্যান পার্টি। তাঁদের অনেকে এমন ইফতার পার্টির আয়োজন করেন এবং দলে এই ইফতার মাহফিলে যোগ দেয়ার মতো লোকজন না থাকলেও বিএনপির লোকজন মাহফিল গুলজার করেন। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিদেশেও বিএনপি এই ধরনের ইফতারের আয়োজন করে। ক’দিন আগে লন্ডনে এমন একটি ইফতারে বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বেগম জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান প্রধান অতিথি ছিলেন। মনে করা হচ্ছিল তিনি এই সুযোগে বাংলাদেশের ইতিহাসের নতুন কিছু গবেষণালব্ধ তত্ত্ব উন্মোচন করবেন। ইতোমধ্যে তিনি আবিষ্কার করেছেন তাঁর আব্বাজান জেনারেল জিয়া বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু অবৈধভাবে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। এবার মনে করা হয়েছিল হয়ত তিনি বলবেন জিয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম সর্বাধিনায়ক ছিলেন কারণ সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতি সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক অথবা বলবেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ তাঁর পিতার লেখা ছিল। বঙ্গবন্ধু পাঠ করেছিলেন মাত্র। তিনি সেই ইফতার মাহফিলে বয়ান করার জন্য একটি লিখিত ভাষণও তৈরি করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত দলীয় কর্মীদের ইফতার নিয়ে হাতাহাতি হৈ হট্টগোলের কারণে তিনি তাঁর সেই অমূল্য ভাষণ পাঠ করতে পারেননি। শুধু বলেছেন ‘দেশটা আমাদের সবার, শুধু কারও বাবার নয়।’ দীর্ঘদিন পর তাঁর এই উপলব্ধির জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। তিনি দেশের উন্নয়নের জন্য কিছু পরিকল্পনাও তুলে ধরেন। মনে হচ্ছে তিনি লন্ডনে চিকিৎসার কারণে কিছুটা আরোগ্য লাভ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাও একই কায়দায় ইফতারের আয়োজন করেন, তবে তিনি কদাচিৎ অন্য দলের ইফতারে অংশগ্রহণ করেন। তবে তার শরিক দলগুলোকে তেমন কোন ইফতারের আয়োজন করতে দেখা যায় না। তাদের অধিকাংশই প্রধানমন্ত্রীর ইফতারের ওপর এই রমজান মাসটা পার করে দিচ্ছেন। তবে দুই জনের ইফতারের মধ্যে পার্থক্য হলো বেগম জিয়া এই সব ইফতার পার্টিকে রাজনৈতিক সমাবেশে রূপান্তর করেন এবং সেখানে অযাচিতভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখেন। শেখ হাসিনা কদাচিৎ ইফতারে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখেন। প্রথম রমজান হতে শুরু করে বেগম জিয়া প্রায় প্রতিদিনই এই কাজটি বেশ সুচারুভাবেই করেছেন। জনগণের উদ্দেশে তাঁর এবারের রমজানের আহ্বান ছিল বর্তমান সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যায় না। রমজানের পর সকল দলকে মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে রাজ-পথে নেমে আসতে হবে। অন্য আরেক দিন বলেন, জনরোষ হতে বাঁচতে চাইলে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে দ্রুত সংলাপের আয়োজন করুন এবং নির্বাচনকালে (অসাংবিধানিক) নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্ব¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কায়েম করুন। পরদিন আবার বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে সংলাপ করে কোন লাভ নেই। তাঁর এইসব নিত্যদিনের বক্তব্যে বেশ অসংলগ্নতা লক্ষণীয়। আমার এক ডাক্তার বন্ধু আছেন যিনি জানালেন বয়স বাড়লে মানুষের মধ্যে এই ধরনের প্রবণতা লক্ষণীয়। এটাকে বলা হয় আলজাইমার্স বা ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স রোগ। সাধারণ ভাষায় এমনেসিয়াও বলা হয়। কথাবার্তার মধ্যে সামঞ্জস্য থাকে না। আবোল-তাবোল কথা বলা অভ্যাস হয়ে যায়। অনেক সময় আগের কথা ভুলে যান। স্মৃতি বিভ্রাট ঘটে। বেগম জিয়ার বয়সে অনেকেরই এই রোগ হয়ে থাকে। এমন রোগীকে সোডিয়াম খাওয়াতে হয়। তবে মনে হয় না এখন পর্যন্ত বেগম জিয়া এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর সমস্যা হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা। এই সময়টা যতই দীর্ঘায়িত হবে ততই বেগম জিয়ার দল অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়বে। আর এখন বেগম জিয়া যে সংলাপ সংলাপ বলে চিৎকার করছেন সেই সংলাপের জন্য তো শেখ হাসিনা নিজেই তাঁকে ফোনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন যা তিনি অত্যন্ত রূঢ় ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছেন। হয়ত তাঁর প্রত্যাশিত সংলাপের জন্য তাঁকে আরও দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হবে।
বেগম জিয়াকে নিয়মিত বিরতি দিয়ে তাদের কিছু বিদেশী মুরব্বি উস্কানি দেন। সম্প্রতি বিদায়ী ইইউ প্রধান উইলিয়াম হানা বলেছেন সঙ্কট নিরসনে সংলাপের কোন বিকল্প নেই। যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স বাংলাদেশে তাঁর দায়িত্ব বুঝে নেয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের ফরেইন রিলেশন্স কমিটিতে এই মর্মে তাঁর বক্তব্য উত্থাপন করে বলেন যে বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিঃসন্দেহে গলদপূর্ণ ছিল এবং তিনি এই দেশে এসে কিভাবে তাঁর ভাষায় একটি অংশীদারমূলক সাধারণ নির্বাচন করা যায় তার জন্য চেষ্টা করবেন। একটি দেশে দায়িত্ব বুঝে নেয়ার আগেই সে দেশের নির্বাচন অথবা সরকার নিয়ে আগাম কথা বলা একেবারেই কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্জিত। এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্র হতে যারা বাংলাদেশে কূটনৈতিক দায়িত্ব নিয়ে আসেন তাঁরা সাধারণত মধ্যম সারির এবং কখনও কখনও মধ্য মেধার কূটনীতিবিদ হন। তাদের অবস্থান আমাদের দেশের এক উপসচিব পর্যায়ের। তাঁরা কথা বলেন বেশি এবং অনেক সময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার জন্য অবদান রাখেন যথেষ্ট। তাঁদের অনেকেই বাংলাদেশকে একটি তাঁবেদার রাজ্য মনে করেন। মার্সিয়া বাংলাদেশে তার দায়িত্ব নিয়ে আসার আগেই ভুল সিগন্যাল দিলেন। মনে হচ্ছে এই নতুন লেডি ভাইসরয় আগামী চার বছর বাংলাদেশে বেশ উৎপাত করবেন। অন্য কোন দেশ হলে হয়ত তাঁকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে গ্রহণ করতে চাইত না। বাংলাদেশের সেই ক্ষমতা নেই। বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজেনা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে অনেক দৌড় ঝাঁপ করে কিছুটা রবাহুত হয়ে দিল্লী গিয়েছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অথবা পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাত করতে। তাঁর পক্ষে সেই সাক্ষাত পাওয়া সম্ভব হয়নি। নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে চা নাস্তা খেয়ে মজেনাকে ঢাকায় ফিরতে হয়েছে। আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধ করতে, শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারণে তাও সম্ভব হয়নি। তিনি অনেকটা বিফল হয়ে দেশে ফিরবেন। একই অবস্থা তাঁর পূর্বসূরি বিউটিনিসেরও হয়েছিল। ২০০৬ সালে তিনিও চেষ্টা করেছিলেন বিএনপির সাজানো ছকে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে টেনে এনে বিএনপি’র বিজয়কে সুনিশ্চিত করতে। ব্যর্থ হয়ে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে পোস্টিং নিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিদায় হয়েছিলেন। যে কোন কারণেই হোক যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত বিএনপি-জামায়াত জোটকে ক্ষমতায় দেখতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে এবং আগামীতেও করবে। এমনিতে যুক্তরাষ্ট্রের সব সময় স্বৈরাচারী সরকার বা সরকার প্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রতি একটি ঐতিহাসিক দুর্বলতা আছে। এদের মধ্যে ইরানের রেজা শাহ পাহলভি, চিলির অগাস্তো পিনোচেট, পাকিস্তানের আইউব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউল হক, পারভেজ মোশারফ, বাংলাদেশের জিয়াউর রহমান, ইন্দোনেশিয়ার সুহার্তো, মিসরের আনোয়ার সাদাত, হুসনে মুবারক, সৌদি বাদশা, জর্ডানের বাদশা আবদুল্লাহ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। সাদ্দাম এক সময় যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। ওসামা বিন লাদেন যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি। ইরাকের মালিকি এখন মিত্র হতে শত্রুতে পরিণত হয়েছেন। হামিদ কারজাইকে যুক্তরাষ্ট্র আবিষ্কার করেছিল। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হওয়ার কারণ নেই। এরই মধ্যে রমজানের আগে বিএনপি’র নীতিনির্ধারকদের তিনজন সাবেক সেনা সদস্য নিজেদের মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং ধারণা করা হয় কিভাবে বিএনপিকে পুনরায় ক্ষমতায় আনা যায় তা নিয়ে শলাপরামর্শও করেছেন। সুতরাং বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য ষড়যন্ত্রের চাকা এখনো সচল।
একটি গণতান্ত্রিক দেশে কোন একটি রাজনৈতিক দল নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণভাবে দাবি দাওয়া আদায়ের জন্য রাজপথে আন্দোলন করবে তা স্বাভাবিক। তবে তথাকথিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গত ৫ জানুয়ারির পূর্বে বিএনপি তাদের সন্ত্রাসনির্ভর মিত্র জামায়াতকে নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে জানমালের যে ব্যাপক ক্ষতি করেছে তাকে আর যাই হোক রাজনৈতিক আন্দোলন বলা চলে না। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারা, রেল লাইন উপড়ানো, রেল সেতু আর স্টেশনে অগ্নিসংযোগ, অবলা জন্তুকে জ্যান্ত পুড়িয়ে ফেলা, সড়কে খাল কেটে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা, কয়েক হাজার গাছ কেটে প্রকৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে আর বিদ্যুত কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ, চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া, স্কুলগামী শিশুদের ওপর নৃশংস হামলা, পুলিশ, সেনা সদস্য আর বিজিবি হত্যার নাম আর যাই হোক রাজপথের আন্দোলন হতে পারে না। দেশের মানুষ নিশ্চয় আন্দোলনের নামে এইসব অপকর্মের পুনরাবৃত্তি চায় না। বেগম জিয়া এবং তার সভা পরিষদ ছাড়া নিশ্চয় দেশের মানুষ এখন তেমন কোন বড় অশান্তিতে নেই। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে সরকার নিশ্চয় কোন বাধা দেবে না। তবে যদি শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার বিন্দুমাত্র কোন সম্ভাবনা দেখা দেয় সরকারের উচিত হবে আন্দোলনের নামে সকল ধরনের নৈরাজ্যকে কঠোর হস্তে দমন করা। বাংলাদেশ আর একটি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় রূপান্তরিত হোক তা এদেশের মানুষ দেখতে চাইবে না। দেশে শান্তি বজায় রাখা যে কোন সরকারের প্রধান দায়িত্ব। বেগম জিয়া পবিত্র উমরা পালন করতে গতকাল পবিত্র মক্কা নগরীতে গিয়েছেন। সেখানে তিনি তার দুই ছেলে আর তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবেন। আশা করি নিজের নাজাতের জন্য তো বটেই, দেশের মানুষের জন্যও তিনি দোয়া করবেন। সকলের জন্য নাজাত খুবই প্রয়োজন। সকল পাঠককে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা। যদি ভাল লাগে তবে শেয়ার করতে ভুলবেন না।