আমার সংবাদ ডেস্ক
নভেম্বর ২৯, ২০২০, ০৩:৩৫ পিএম
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমাজে অহরহ ফিতনা সংঘটিত হচ্ছে। অপ্রয়োজন ও অযথা কথা ও কাজে মানুষ ফিতনার পেছনে দৌড়াচ্ছে। অথচ হাদিসে পাকে প্রিয়নবী মুমিন মুসলমানের উদ্দেশ্যে চরম ফিতনার সময় কী করতে হবে তা সুস্পষ্টভাবে নসিহত করেছেন।
ফিতনা হচ্ছে মারাত্মক অপরাধ। কঠিন পরিস্থিতিতেও ফিতনা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘বস্তুত ফিতনা-ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৯১)
মূলত হজরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু হত্যার মাধ্যমে ফিতনার সূচনা হয়। কিয়ামত পর্যন্তই এ ফিতনা চলবে। যুদ্ধ কিংবা জটিল সমস্যার সময় কোনো বিষয়কে সমর্থন করা সম্পর্কে ফিতনা থেকে সতর্ক থাকতে কাউকে না বুঝে সমর্থন না করার ব্যাপারেও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বিশ্বনবী। কেননা জটিল সমস্যা ঘটার সময় কোন বিষয়টি সঠিক আর কোনটি ঠিক নয়; তা বুঝা কষ্টকর।
চরম ফিতনার সময় মুমিনদের করণীয় সম্পর্কে হাদিসের সুস্পষ্ট ঘোষণা হলো— রাসুলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘অচিরেই বিভিন্ন রকম ফিতনার আবির্ভাব ঘটবে। ফিতনার সময় বসে থাকা ব্যক্তি ফিতনার দিকে পায়ে হেঁটে অগ্রসর হওয়া ব্যক্তির চেয়ে নিরাপদ ও উত্তম। আবার পায়ে হেঁটে চলমান ব্যক্তি আরোহী ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক নিরাপদ ও উত্তম হবে।
ফিতনা শুরু হয়ে গেলে যার উট থাকবে; সে যেন উটের রাখালি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আর যার ছাগল থাকবে, সে যেন ছাগলের পালের রাখালি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আর যার চাষাবাদের জমিন আছে, সে যেন চাষাবাদের কাজে ব্যস্ত থাকে।
এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! যার কোনো কিছুই (উট, ছাগল, চাষাবাদের জমি) নেই; সে কী করবে?
রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন- ‘পাথর দিয়ে তার তলোয়ারকে ভোঁতা করে নিরস্ত্র হয়ে যাবে এবং ফিতনা থেকে বাঁচতে চেষ্টা করবে। অতপর তিনি আরও বললেন—
‘হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি?
অতপর অন্য এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন- হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! কেউ যদি আমাকে জোর করে কোনো দলের দিকে নিয়ে যায় এবং সেখানে গিয়ে কারো তলোয়ার বা তীরের আঘাতে আমি নিহত হই; তবে আমার কী হবে?
উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘সে তার পাপ এবং তোমার পাপের বোঝা নিয়ে জাহান্নামের অধিবাসী হবে।’ (মুসলিম)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নিজে ফিতনা থেকে মুক্ত থাকা। অন্য মুমিনকেও ফিতনা থেকে মুক্ত রাখা। ইসলামের বিধান সম্পর্কে অযথা মনগড়া তথ্য প্রচার না করা। অন্যকে ফিতনার কাজে সহযোগিতা না করা। আর এটাই হলো ইমানের জন্য নিরাপদ কাজ।
আল্লাহ তায়ালা মুমিন মুসলমানকে দুনিয়ার সব ফিতনা থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। অন্যকে ফিতনা থেকে হেফাজতে সহযোগিতা করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আমারসংবাদ/এমআর