Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

যেসব শিষ্টাচার নারীকে অতুলনীয় করে তোলে (শেষ পর্ব)

আমার সংবাদ ডেস্ক

ডিসেম্বর ২, ২০২০, ০১:০০ পিএম


যেসব শিষ্টাচার নারীকে অতুলনীয় করে তোলে (শেষ পর্ব)

* নমনীয় হওয়া: কারো বাসায় গেলে আপ্যায়ন যাই করা হোক, তা সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করা। খাবারে যদি সমস্যা থাকে তা যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি। যাতে মেজবানকে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না হয়।

* অবজ্ঞা না করা : কল্যাণমূলক কোনো কাজ বা আদেশ-অনুরোধ উপক্ষো না করা। ইসলামি শরিয়তের মধ্যে থেকে যা পালন করা যায়, তা বিনয়ের সঙ্গে মেনে নেয়াই উত্তম আদব বা শিষ্টাচার। ঘরের মালিকের অনুপস্থিতিতে কোনো জিনিসপত্র কিংবা কোনো দিকে না তাকানো বা দোষ না খোঁজাও উত্তম শিষ্টাচার।

* অসময়ে সাক্ষাৎ না করা : কারো সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করার ক্ষেত্রে সময়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরি। কেননা মানুষ সব সময় এক রকম মেজাজে থাকে না। অসময়ে দেখা-সাক্ষাৎ করতে গেলে ভদ্রতার খাতিরে তাৎক্ষণিক কিছু না বললেও মন থেকে তা মেনে নেয়া কষ্টকর। এ কারণে খাওয়া, ঘুমানো, পারিবারিক অবসরের সময় কাউকে বিরক্ত না করাই উত্তম শিষ্টাচার। আর তা নারীদের জন্য খুবই জরুরি। পরিবার থেকেই এ শিক্ষা পায় মানুষ। যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই কাজে লাগে।

* বিনয়ী হওয়া : জরুরি কিংবা সাধারণ যেকোনো কথা বা কাজের ব্যাপারে বিনয়ী হওয়া অতি উত্তম শিষ্টাচার। বিনয়ী হওয়ার কারণে অনেক সময় কঠিন ও জটিল কাজও সহজ হয়ে যায়। কাউকে দুঃখ প্রকাশ বা আনন্দ প্রকাশের ক্ষেত্রেও যেন বিনয়ীভাব থাকে। যা মানুষকে আপন থেকে আরও আপন করে তোলে। এটি হতে পারে নারীর জন্য সেরা শিষ্টাচার।

* উদার হওয়া : কারো আপত্তি শোনার ক্ষেত্রেও উদার হওয়া জরুরি। রুক্ষ বা ক্ষিপ্ত মেজাজে কারো ওজর শুনে সে রকম ভাব দেখালে আপন মানুষও ভুল বুঝে দূরে সরে যায়। মনের মধ্যে বৈরিতা তৈরি হয়। সুতরাং ওজর, আশা, আকাঙ্ক্ষা সব ক্ষেত্রে উদার হওয়া জরুরি।

* মেহমানের সম্মান করা : ঘরে মেহমানকে সম্মান করা। চাই সে গরিব কিংবা ধনী হোক। ধনীর সঙ্গে অতিরঞ্জন আর গরিবের সঙ্গে গা-ছাড়া ভাব কোনোভাবেই কাম্য নয়। এক্ষেত্রে সবাইকে যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দেয়াই উত্তম শিষ্টাচার।

* সুস্পষ্ট তথ্য দেয়া : মেহমানকে তার প্রয়োজনগুলোর ব্যাপারে জানিয়ে দেয়া জরুরি। থাকার রুম, ঘুমানোর স্থান, কোথায় পায়চারি করার স্থান, ওজু, গোসল, ইবাদত-বন্দেগি এমনকি জামা-কাপড়-জুতা কিংবা প্রয়োজনীয় জিনিস রাখা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য দেয়া জরুরি।

* হক আদায় করা : করো মেহমান হলে মেজবানের কিছু হক রয়েছে, যতক্ষণ মেহমান হিসেবে থাকবে ততক্ষণ তার সঙ্গে নম্র-ভদ্র আচরণসহ যাবতীয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে লক্ষ্য রাখা আবশ্যক। মেহমানকে কোনো বিষয়ে অতিরিক্ত চাপ না দেয়া। মেজবানের কাজের বা বিশ্রামের সময়ের প্রতি খেয়াল রাখাও শিষ্টাচার।

* খাবার ঢেকে রাখা : ঘরে কিংবা বাইরে যেখানেই অবস্থান করা হোক না কেন, খাবারের জিনিসগুলো সব সময় ঢেকে রাখা উত্তম। কাউকে পরিবেশন করার সময়ও তা ঢেকে রাখা। যাতে অযাচিত ধুলাবালি কীটপতঙ্গ না পড়ে এবং কারো সঙ্গে বাচ্চা থাকলেও যেন খাদ্য নষ্ট না করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা।

* পর্দা মেনে চলা : উল্লিখিত সব ক্ষেত্রে কোনোভাবেই ইসলামি শরিয়ত লঙ্ঘন করে পর্দাহীন হওয়া যাবে না। কেননা, নারী-পুরুষ সবার জন্যই পর্দা ফরজ। শুধু নারীই পর্দা মেনে চলবে আর পুরুষের জন্য পর্দা নেই, বিষয়টি যেন এমন না হয়। তবে নারী নিজেকে পর্দার সঙ্গে উত্তম আচরণ বা শিষ্টাচার প্রকাশ করা অতি উত্তম। যা নারীকে করে তুলবে অতুলনীয়। সময়ের পরিক্রমায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নারীকে দেখে দেখে এ উত্তম শিষ্টাচার শিখবে। উত্তম শিষ্টাচার প্রদর্শনে তারাও হয়ে উঠবে দক্ষ।

এমন আরও অসংখ্য আদব বা শিষ্টাচার রয়েছে, যা পালন করা সবার জন্য সর্বোত্তম। আল্লাহ তায়ালার কাছে উত্তম শিষ্টাচার দেখানো ব্যক্তিরাই পছন্দনীয়। আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহর সব নারী-পুরুষকে উত্তম শিষ্টাচার রক্ষা করার ও নিজেদের জীবনে তা যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন। সমাপ্ত

আমারসংবাদ/এমআর