Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

নাম ব্যঙ্গ করা সম্পর্কে ইসলাম কী বলে? (শেষ পর্ব)

আমার সংবাদ ডেস্ক

ডিসেম্বর ৮, ২০২০, ০১:৩৫ পিএম


নাম ব্যঙ্গ করা সম্পর্কে ইসলাম কী বলে? (শেষ পর্ব)

(পূর্বে প্রকাশের পর)
সমাজবদ্ধ জীবনে অন্যের মনোকষ্টের কারণ হয়, এমন যে কোনো কথা ও কাজ থেকে বেঁচে থাকার জোর তাগিদ দিয়েছে ইসলাম। অন্যকে ছোট মনে করা, উপহাস করা ইসলামে সরাসরি নিষিদ্ধ। হাদিসে এসেছে—

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ওই ব্যক্তি প্রকৃত মুসলিম; যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ। আর যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়গুলো পরিত্যাগ করে, সে-ই প্রকৃত হিজরতকারী?’ (বুখারি)

লক্ষণীয় বিষয় : বর্তমানে সমাজে একটা বিষয় ব্যাপকভাবে লক্ষ্যনীয়; তাহলে— মহান আল্লাহর গুণবাচক নামগুলোও এ ব্যঙ্গ কিংবা ট্রল থেকে মুক্ত নয়। মনের অজান্তেই অনেকে এ নামগুলো নিয়ে হাসি-তামাশা করছে। যা মারাত্মক গোনাহ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এগুলো বেশি দেখা যায়। মজার ছলে কেউ কেউ এভাবে কমেন্টস করছে- ‘কসকি মোমিন’, বলিস কি কুদ্দুস ইত্যাদি। অথচ মুমিন ও কুদ্দুস মহান আল্লাহ তাআলার অন্যতম গুণবাচক নাম।

ইসলামের বিধান হলো— কোনো ব্যক্তি নিজের কিংবা সন্তানের নাম হিসেবে আল্লাহ গুণবাচক নাম রাখে; তবে তাকে নামের আগে অবশ্যই আবদুন শব্দটি যোগ করতে হবে। আর আবদুন শব্দের অর্থ হলো- বান্দা বা গোলাম। সেক্ষেত্রে রহমান শব্দের অর্থ হলো- দয়ালু। আর আব্দুর রহমান রাখলে এর অর্থ হবে- রহমানের বান্দা বা দয়ালু বান্দা। এ কারণে কোনো ব্যক্তিকে শুধু গুণবাচক নামেও ডাকা যাবে না। ডাকলে তাতেও গোনাহ হবে।

অনেক সময় দেখা যায়: কেউ কেউ নাম রাখেন- ‘রাব্বি’। আমরা কি জানি- এ রাব্বি মানে কি? রাব্বি শব্দের অর্থ হলো- আমার রব বা আমার প্রভু। আবার কেউ কেউ নাম রাখেন, মাওলা- অভিভাবক। আর অর্থ না বুঝে তাদের ডাকতে থাকেন, রাব্বি কিংবা মাওলা।

সুতরাং রাব্বি কিংবা মাওলা নামে না ডেকে বরং নামের আগে ‘গোলাম’ কিংবা ‘ফজলে’ শব্দ দুটি যোগ করে ‘গোলাম রাব্বি’ ফজলে রাব্বি ও ‘গোলাম মাওলা’ নামে ডাকা যাবে। আর তাতে গোনাহ থেকে বেঁচে যাবে ব্যক্তি পরিবার ও সমাজের মানুষ।

তাই সন্তানের নাম রাখার ক্ষেত্রেও বাবা-মা এ দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করতে হবে। আল্লাহর গুণবাচক নামে সন্তানের নাম রাখা কল্যাণের। তবে তা শুরু থেকে যেভাবে ডাকার নিয়ম, তা মেনে ডাকতে হবে। হাদিসে এসেছে—

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম হলো আব্দুল্লাহ এবং আবদুর রহমান।’ (মুসলিম)

যেহেতু একজন মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ হচ্ছে তার নাম। তাই নাম বিকৃতি বা ব্যঙ্গ নয়; নাম ডাকতে হবে সম্মানের সঙ্গে। কেননা নাম বিকৃত বা ব্যঙ্গ মানুষের জন্য অইমান এবং মারাত্মক কষ্টের।

গরিব, কাজের লোক, শত্রু কিংবা মিত্র যে-ই হোক না কেন; নাম ব্যঙ্গ, বিকৃতি বা ট্রল করে তাকে ছোট না করা। মানুষের নামকে নিয়ে ব্যঙ্গ করার মতো হীন কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখাই ইমানের একান্ত দাবি।

আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে নাম ব্যঙ্গ, বিকৃতি ও ট্রল করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। নাম ব্যঙ্গের অপরাধ ও গোনাহ থেকে নিজেদের হেফাজত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আমারসংবাদ/এমআর