Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

মডেল মসজিদ: মুজিববর্ষের অনন্য এক উপহার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২১, ১০:৪৫ এএম


মডেল মসজিদ: মুজিববর্ষের অনন্য এক উপহার

মুজিববর্ষে জনগণের জন্য উপহার হিসেবে সরকার সারা দেশে মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে যা কাজ করবে ইসলামি জ্ঞান, গবেষণা ও মূল্যবোধের শ্রেষ্ঠত্বের কেন্দ্র হিসেবে।

জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে প্রস্তাবিত ৫৬০টি মসজিদের মধ্যে প্রায় ১৭০টি মডেল মসজিদ বা ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে মুজিববর্ষেই উদ্বোধন করা হবে। মসজিদগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে পুরোদমে।

মডেল মসজিদ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসলামি ভ্রাতৃত্ববোধ ছড়িয়ে দেয়া, প্রকৃত ইসলামি মূল্যবোধ চর্চা, নারী ও পুরুষ উভয়ের প্রার্থনার জন্য শক্তিশালী ইসলামিক অবকাঠামো তৈরি, ধর্মীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান এবং সন্ত্রাসবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতাসহ সামাজিক নানা সমস্যার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি।

প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা বাস্তবায়নের জন্য নিজস্ব তহবিল দিয়ে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার।

এ প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় (প্রথম সংশোধিত) ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা।

সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, একসাথে এতগুলো মসজিদ নির্মাণ করা অভূতপূর্ব একটি পদক্ষেপ।

প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. নাজিবর রহমান বলেন, মুজিববর্ষে মোট ১৭০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হবে।

প্রকল্পের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৩২ শতাংশ জানিয়ে তিনি বলেন, ১৭০টি মসজিদের মধ্যে ৫০টি এপ্রিলে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৬০টি এবং মুজিববর্ষের শেষ দিকে আরও ৬০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

সিরাজগঞ্জ ও রংপুরে দুটি মসজিদের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহমেদ জানান, জেলা মডেল মসজিদ এবং জেলায় ১০টির মধ্যে আরও একটির নির্মাণ কাজ মার্চের প্রথম দিকে সম্পন্ন হতে পারে।

বিভিন্ন ধর্মীয় অনুশীলনের পাশাপাশি গণশিক্ষার মতো অনেক সামাজিক কার্যক্রম মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কেন্দ্রগুলোতে পরিচালিত হবে, জানান তিনি।

তিন ক্যাটাগরিতে ৪০ শতাংশ জায়গায় এই মসজিদগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলা পর্যায়ে চারতলা, উপজেলার জন্য তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।

‘এ’ ক্যাটাগরিতে ৬৪ জেলা শহরে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬৯টি চারতলা মডেল মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। এই মসজিদগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ২ হাজার ৩৬০ দশমিক ০৯ বর্গমিটার।

‘বি’ ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৫টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ১ হাজার ৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গমিটার।

‘সি’ ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ২ হাজার ৫২ দশমিক ১২ বর্গমিটার। উপকূলীয় এলাকার মসজিদগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে নিচতলা ফাঁকা থাকবে।

প্রতিটি মসজিদের বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয়েছে জেলা শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা, উপজেলা পর্যায়ে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং উপকূলীয় এলাকায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা।

প্রতিটি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নারী ও পুরুষের জন্য থাকছে আলাদা ওজু ও নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা। সেই সাথে থাকছে লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র ও কোরআন হেফজ বিভাগ।

মসজিদগুলোর আরেকটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন হলো অটিজম কর্নার এবং পর্যটকদের (দেশি ও বিদেশি) জন্য অতিথি কক্ষ।

এছাড়াও মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ ও ইসলামি গবেষণা কেন্দ্র থাকছে মডেল মসজিদগুলোতে। থাকছে শিশু এবং গণশিক্ষা কেন্দ্রও।

ইমাম ও মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য থাকছে অফিসের ব্যবস্থা।

রংপুর নগর সম্মিলিত ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মডেল মসজিদ ইসলামি জ্ঞান, গবেষণা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হবে।

তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মডেল মসজিদ নির্মিত হচ্ছে, যা সমাজে ইসলামি মূল্যবোধ এবং জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করবে।

আমারসংবাদ/জেআই