Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

কাদিয়ানীরা মক্কা মদিনায় প্রবেশ করে পবিত্রতা নষ্ট করছে: আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী

সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি 

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১, ১১:৩৫ এএম


কাদিয়ানীরা মক্কা মদিনায় প্রবেশ করে পবিত্রতা নষ্ট করছে: আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী

কাদিয়ানীদের সাংবিধানিকভাবে অমুসলিম ঘোষণা না করার কারণে তারা বাংলাদেশের নাগরিক পরিচয়ে ভিসা পাসপোর্ট নিয়ে হজ্ব ওমরা করতে পবিত্র মক্কা-মদীনায় যায়। কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী কোন অমুসলিম পবিত্র মক্কা মদীনয় প্রবেশ করতে পারেনা। তারা মক্কা মদিনায় প্রবেশ করে মক্কা মদিনার পবিত্রতা নষ্ট করছে। এর দ্বায় রাষ্ট্র ও সরকারকে বহন করতে হবে। তাই সাংবিধানিকভাবে কাদিয়ানীদের কাফের ঘোষণা করতে হবে। 

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে কাদিয়ানীদের অমুসলিম-কাফের ঘোষনার দাবিতে খতমে নবুওয়াত মহাসম্মেলন অনুষ্ঠানে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী এসব কথা বলেন। 

তিনি আরো বলেন, মানব জাতির হেদায়াতের জন্য যুগে যুগে আল্লাহ তাআলা নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। নবী রাসুলগণের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ নবী ও রাসূল হচ্ছেন হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। ঈমানদার হওয়ার জন্য আকিদায়ে খতমে নবুওয়াত তথা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশেষ নবী হওয়ার বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। আকিদায়ে খতমে নবুওয়াত ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। খতমে নবুওয়াতে বিশ্বাসী হওয়া ছাড়া মুসলমান হওয়া যায় না। কাদিয়ানীরা খতমে নবুওয়াতকে অস্বীকার করে তাই তারা কাফের। মুসলিম নাম ধারণ করে ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে তাদের ঈমানবিধ্বংসী কোনো কার্যক্রম চলতে পারে না। অনতিবিলম্বে কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে কাফের ঘোষণা করতে হবে। কাদিয়ানীরা ইংরেজদের দালাল, বাংলাদেশে ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান, মুসলমানদেশে কাদিয়ানীরা থাকতে পারে না। মিশর, সিরিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য মুসলমানদেশে কাদিয়ানীদের কাফের ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারর প্রতি অনুরোধ থাকবে অবিলম্বে সরকারিভাবে, রাষ্টীয় ভাবে, কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করত হবে। 

পবিত্র কোরআন শরিফের ৯৯টি আয়াত এবং ২১০টি হাদিস দ্বারা আকিদায়ে খতমে নবুওয়াত প্রমাণিত। যারা আকিদায়ে খতমে নবুওয়াত মানে না, তারা সন্দেহ ছাড়া কাফের। মসজিদ পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট জায়গা, মুসলিম উম্মাহর ইবাদতের পবিত্র স্থান। কাদিয়ানীরা কাফের, কাফেরদের কোনো মসজিদ হতে পারে না। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি মুসলমানদের ধর্মীয় পরিভাষা। কাদিয়ানীরা কাফের তাই মুসলমানদের কোনো পরিভাষা ব্যবহার করে তারা তাদের ভ্রান্ত মতাদর্শ প্রচার করতে পারে না। এটা ইসলাম ধর্মের অবমাননার শামিল। বাংলাদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ। এ দেশের মুসলমানগণ বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিজেদের প্রাণের চেয়েও বেশি মুহাব্বাত করেন। বিশ্বনবী (সা.) এর রিসালতকে অস্বীকারকারী কাদিয়ানী অমুসলিমদের আস্ফালন এদেশের ধর্মপ্রাণ তৌহিদি জনতা মেনে নেবে না। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে এদেশের হিন্দুরা হিন্দু নামে, বৌদ্ধরা বৌদ্ধ নামে এবং খ্রিস্টানরা খ্রিস্টান নামে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করছে। কিন্তু কাদিয়ানী অমুসলিমরা মুসলমান নাম ধারণ করে সরলমনা সাধারণ মুসলমানদের ধোঁকা দিয়ে ঈমানবিধ্বংসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যা ইসলাম ধর্মের নামে অপপ্রচারের শামিল। তা কখনো মেনে নেয়া যায় না। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান এ দেশে বসবাস করছে। 

কাদিয়ানীরাও এ দেশের নাগরিক হিসেবে বসবাস করতে পারে এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। তবে মুসলমান হিসেবে নয় কাফের হিসেবে থাকতে হবে।সংখ্যা ঘরিষ্ঠ হিসেবে নয় সংখ্যালঘু হিসেবে কাদিয়ানীরা এদেশে বসবাস করতে পারে। কাদিয়ানীরা অমুসলিম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা হয়েছে। ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশেও কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয় ও সংবিধানিকভাবে অমুসলিম ঘোষণা করার জোর দাবি জানান হেফাজত আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। 

শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যান পর্যন্ত উপজেলার কুচিয়ামোড়া কলেজ মাঠে এ মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। খতমে নবুওয়াত সংরক্ষন কমিটি বাংলাদেশ এর আমীর ও মধুপুর পীর আল্লামা আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে মহাসম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আল্লামা মুফতি আব্দুস সালাম, আল্লামা আব্দুল হালিম বুখারী, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুসসহ দেশের প্রখ্যাত আলেমরা। 

আমারসংবাদ/কেএস