Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

স্বপ্ন দেখলে কি করবেন?

ধর্ম ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১, ০১:৪৫ পিএম


স্বপ্ন দেখলে কি করবেন?

মানুষের অভ্যাস হলো, সুখ-দুঃখের কথা অপরের সাথে শেয়ার করা। খুশির খবর বলে বেড়ানো। আনন্দ ও বেদনার কথা অপরকে জানানো। কারণ এর মাধ্যমে মানুষ প্রশান্তি লাভ করে। এমনি একটি বিষয় হলো স্বপ্ন। মানুষ যখন ভালো স্বপ্ন দেখে তখনো সে বলে বেড়ায়। আবার কেউ বানিয়েও স্বপ্নের কথা বলে থাকে মানুষকে আনন্দ দেয়ার জন্য।

স্বপ্ন তিন প্রকার: ১. মনের খেয়াল বা কল্পনা অর্থাৎ মানুষ সারাদিন যা কল্পনা করে তা রাতের বেলায় দেখে। ২. শয়তানের পক্ষ থেকে ভীতি-প্রদর্শন। ৩. আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ তথা ভালো স্বপ্ন।

ভালো স্বপ্ন দেখলে করণীয়:

১. আল্লাহ তায়ালার শোকর আদায় করা তথা আলহামদুলিল্লাহ বলা।
২. আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ হিসেবে মেনে নেয়া।
৩. প্রিয়জনের নিকট বর্ণনা করা।

আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ ভালো স্বপ্ন দেখে তাহলে (সে যেন মনে করে) তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না। সহিহ বুখারী, হাদিস : ৬৫১৪

দুঃস্বপ্ন ও খারাপ স্বপ্ন দেখলে করণীয়

১. এই স্বপ্নের অনিষ্টতা থেকে আল্লাহ তায়ালার নিকট আশ্রয় চাওয়া এবং তিনবার ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম’ পড়বে। ( সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২২৬২) তবে এই দোয়াও পড়া যায় : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন শাররি হাজিহির রুইয়া।’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে এই স্বপ্নের অনিষ্টতা থেকে নিষ্কৃতি চাই।’

২. বাম দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করা। (সহিহ মুসলিম হাদিস : ২২৬১)
৩. পাশ পরিবর্তন করা তথা যে কাতে খারাপ স্বপ্ন দেখেছে তা পরিবর্তন করে শোয়া। (সহিহ মুসলিম হাদিস : ২২৬২)
৪. এই স্বপ্নের কথা কারো নিকট না বলা এবং নিজেও ব্যাখ্যা করার চেষ্টা না করা। (সহিহ বুখারী, হাদিস : ৬৫৮৩)
৫. ঘুম ভেঙে গেলে উঠে দু’রাকাআত নামাজ পড়া। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২২৬৩)

লক্ষণীয় হলো, স্বপ্নের ব্যাখ্যা যে কেউ করতে পারে না। কারণ স্বপ্ন হচ্ছে ফাতাওয়ার মত। ফাতাওয়া যেমন মুফতি ছাড়া কেউ দিতে পারে না, তেমনি স্বপ্নের ব্যাখ্যাকারী ছাড়া কেউ স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলতে পারে না। সুতরাং যে কাউকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করা উচিত নয় আবার যে কেউ স্বপ্নের ব্যাখ্যা করাও বোকামি।

বানিয়ে স্বপ্ন বর্ণনাকারীর শাস্তি: আবদুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস রা. হতে বর্ণত,তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি এমন স্বপ্নের কথা বর্ণনা করবে, যা সে দেখেনি, তাকে (কিয়ামতের দিন) দু’টি যবের বীজে গিঁট লাগানোর জন্য বাধ্য করা হবে। অথচ সে কিছুতেই গিঁট লাগাতে পারবে না।’ সহিহ বুখারী, হাদিস: ৭০৪২

বানিয়ে স্বপ্ন বর্ণনাকারী সবচেয়ে বড় মিথ্যুক: নবি করিম সা. ইরশাদ করেন, ‘সবচেয়ে বড় মিথ্যা হলো, কোনো ব্যক্তি নিজেকে তার পিতা ছাড়া অন্যের সন্তান বলে দাবি করা। যে স্বপ্ন সে দেখেনি তা বর্ণনা করা। আর রাসুলুল্লাহ সা. যা বলেননি, তা তাঁর সম্পর্কে বলে বেড়ানো।’ সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৫০৯

আমারসংবাদ/আরএইচ